কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন মনে ভালোবাসার দাগ কাটে

grateful

কৃতজ্ঞতা বোধ সম্পন্নরা অন্যের অবদানকে স্বীকার করে। ভুল হয়ে গেলে ক্ষমাও প্রার্থনা করে। প্রয়োজনে ভালো কিছুই ফেরত দেন। সুযোগ-সুবিধা মতো গিফটও পাঠান। আন্তরিকতা প্রদর্শন করেন। দূরে থাকলে ফোন বা ই-মেইলে হলেও যোগাযোগ রক্ষা করেন। উপযুক্ত ও সঠিক কৃতজ্ঞতা জানান। তাদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন খুবই সহজেই যেকোনো মানুষের অন্তরে ভালোবাসার দাগ কাটে।

অকৃতজ্ঞরা ব্যক্তিগত লাভ না হলে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেন। অন্যের ভালো কাজের স্বীকৃতি দেন না। নিজের অবস্থানের জন্য অবদান রাখা অন্যের ক্ষতি করলেও অনুশোচনা হয় না। খুবই সিরিয়াসনেস দেখিয়ে অতিরিক্ত সময়ে সমস্যার সমাধানে অতিরিক্ত কাজ করার পরও ধন্যবাদ জ্ঞাপন পর্যন্ত করতে পারে না। অন্যের দায়িত্বের অতিরিক্ত পরিশ্রমে ও কষ্টে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে না পারায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে লাভ না হয়ে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হয়।

ধন্যবাদ বা কৃতজ্ঞতা স্বীকার ভালো কাজ সম্পাদনকারীর ন্যায্য অধিকার। কৃতজ্ঞতা পাওয়ার আশা-আকাঙ্ক্ষা কার না থাকে! কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলে মানুষ কাজে আগ্রহী হয় এবং অনেক ভালো কাজ করে। আর কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করলে প্রত্যাখ্যান করে, বিদ্রোহ করে, বিচ্ছেদ ঘটায়, চেনা-জানা সবকিছু ছেড়ে অজানা পথে পাড়ি জমায়। যে কৃতজ্ঞতা দেখাতে পারে সে মায়ার বন্ধনে বেঁধে রাখতে পারে, ভালোবাসার ঘরের অস্তিত্বও দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে। আর অকৃতজ্ঞতার মানসিকতা থাকলে তারা স্বার্থের গন্ধ পেলে খুব সহজেই একজনকে আপন করে নিতে পারেন, আবার স্বার্থ ফুরালে দীর্ঘদিনের আপনজনকেও খুব সহজেই একেবারে ফেলে দিতে পারেন!

একজনের কৃতজ্ঞতা আরেকজনের মধ্যে আনন্দ ছড়ায়; আর একজনের অকৃতজ্ঞতা আরেকজনকে নিরানন্দে ভরিয়ে দেয়। কৃতজ্ঞ মানুষ অতীতকে মনে রাখে, বর্তমানেও অন্যের অবদানকে স্মরণ করে, ভবিষ্যতে নিজে অবদান রাখতে স্বপ্ন দেখে। প্রত্যেকেরই প্রতিটি সাফল্য অর্জনের পেছনে অন্যের সাহায্য-সহযোগিতার গল্প থাকে। যারা অন্যের সাহায্যকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকার করে না; তারাই শুধু নিজের ভূমিকাকেই বড় করে দেখে।

ভালো-খারাপ, উত্তর-দক্ষিণ না বুঝে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার কোনো লুকায়িত উদ্দেশ্যে সদা-সর্বদাই প্রশংসায় নিয়োজিত থাকা পাম্প, তেলবাজি, তোষামোদ বা মোসাহেবি। প্রকৃত-উপযুক্ত প্রশংসা সত্য-ন্যায়ের সমর্থন করে ও দায়িত্বের কথা তুলে ধরে। আর মিথ্যা প্রশংসা ভণ্ডামি ও লোভনীয় ফাঁদ; যা ঘৃণাযোগ্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার করুন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে সেবা করেছেন, নিজে ভোগ না করে যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন; সেবা গ্রহীতা ও তার স্বজনদের কাছ থেকে একটু প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা সেতো পেতেই পারে! ভালো কাজের প্রশংসা মহৌষধের মতো কাজ করে। কৃতজ্ঞতা মানুষের মন ও রক্তে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ধন্যবাদ পেলে কাজে আগ্রহ পায় ও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে। অথচ কিছু মানুষ এতটা লজ্জাহীন যে যে তার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে তার প্রতিও অকৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করে। শেখ সাদী বলেছিলেন, কৃতজ্ঞ কুকুর অকৃতজ্ঞ মানুষের থেকে শ্রেয়।

স্বার্থের সংঘাত থাকলে চিরন্তন কৃতজ্ঞতা থাকে না। কেউ জীবনের কোনো পর্যায়ে সবচেয়ে বড় উপকার করেছেন, জীবনের কোনো পর্যায়ে এসে সবচেয়ে বড় ক্ষতিও করেছেন। তখন উপকার আর ক্ষতির তুলনা চলে আসে! চিরন্তন কৃতজ্ঞতা বলে নশ্বর বিশ্বে কিছু নেই- কারণ উপকার যিনি করেছেন আর যিনি উপকার ভোগী কেউই চিরদিন অস্তিত্বের জানান দেবেন না। তবে যারা পরকালিন ফলাফলে বিশ্বাস করেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ‘আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন’ বলেন- তাদের প্রসঙ্গ ভিন্ন; কারণ তারা যা আশা করার স্রষ্টার কাছেই করেন, যা পাবার তা স্রষ্টার কাছেই পাবেন।

উপকারের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা চিত্তে শুকরিয়া আদায় করা যায়, কিন্তু তা চিরন্তন প্রেরণার উৎস হিসেবে নিয়ে চিরন্তন কৃতজ্ঞতা দেখানো যায় না! চিরন্তন কৃতজ্ঞতা দেখাতে সক্ষম চিরঞ্জীব। মানুষের এই জীবন যেহেতু সীমিত, তাই চিরকাল সুগভীর কৃতজ্ঞতার ঋণের বন্ধনে আবদ্ধ থাকার ঘোষণা দেওয়াও ইহজাগতিক বিবেচনায় অর্থহীন। চিরন্তন কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে চিরকৃতজ্ঞ থাকলেতো যে জীবনের কোনো সময়ে ন্যূনতম উপকারও করেছে সে পরে জীবননাশের চেষ্টা করলেও প্রতিবাদ-প্রতিরোধ হতো না!

অকৃতজ্ঞরা কখনো আত্মসমালোচনায় বিন্দুমাত্র সময় ব্যয় না করলেও পরের নিন্দা ও সমালোচনায় জীবনের বড় অংশ ব্যয় করে। কৃতজ্ঞতা স্বীকারতো অবশ্যই করা উচিত। অনেকে কারো কাছে কোনো প্রয়োজন হলে তার প্রশংসা করে শুরু করেন। তবে স্বার্থ হাসিল শেষে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন না। ধন্যবাদও জানান না। একটু মিষ্টি হেসে বিদায়ও নেন না। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা দূরে থাক, অকৃতজ্ঞতা দেখান। উপকারের কথা বেমালুম ভুলে যান। অকৃতজ্ঞ চিত্ত কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে, দয়া করে না, উপকার করে না, সঠিকভাবে ধন্যবাদও জানায় না, উদারতা দেখায় না, ভদ্র ব্যবহারও করে না।

যথাযথভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা যোগাযোগ দক্ষতার প্রমাণ। কৃতজ্ঞ চিত্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, ভদ্রতা দেখায়, বিনম্রতা প্রকাশ করে, ধন্যবাদ জানায়, সহানুভূতির পরিচয় দেয়। কৃতজ্ঞতা বোধ অন্যের প্রতি দয়া করতে উদ্বুদ্ধ করে, অনুগ্রহ করতে আগ্রহী করে, পরের জন্য কিছু করার মাঝে আনন্দ দেয়! যে মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না সে স্রষ্টার প্রতিও কৃতজ্ঞ নয়। যে স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে মানুষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা একটা আচরণ শিল্প। কৃতজ্ঞতা এমন গুণ; এটা যার মাঝে আছে সে ভাগ্যবান। আল্লাহ্ কৃতজ্ঞদের বাড়িয়ে দেন, আর অকৃতজ্ঞদের কমিয়ে দেন।

জনগণের প্রতি যদি নেতার কৃতজ্ঞতা না থাকে কিংবা জনগণের যদি নেতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর মতো কিছু না থাকে- তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কৃতজ্ঞতার স্মৃতিগুলো হয় মধুর, কৃতজ্ঞতার কথাগুলো গেঁথে যায় হৃদয়ে, কৃতজ্ঞতার আচরণগুলো স্থান করে নেয় মনে। সবচেয়ে বড় অকৃতজ্ঞ হচ্ছে শয়তান, আর অন্য অকৃতজ্ঞরা শয়তানেরই চ্যালা-চামুন্ডা। যে কৃতজ্ঞতা দেখতে ও দেখাতে শুরু করে তার দৃষ্টিভঙ্গি হয় ইতিবাচক। কৃতজ্ঞতার সৌন্দর্য অনেক বেশি।

কৃতজ্ঞতা সৌজন্যের এমন উৎকৃষ্ট রূপ, যে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে সে অন্যদের কাছে সবচেয়ে সুন্দর ফুলের চেয়েও সুন্দর বিবেচিত হয়। এক প্রজন্মের কৃতজ্ঞতা বোধ আরেক প্রজন্মের মাঝেও উন্নত-উত্তম বোধ তৈরিতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সহায়তা করতে পারে। চন্দ্র-সূর্য বা বাতাস-পানি প্রত্যেকের ভূমিকা জীবনে যেমন আলাদা আলাদা ভাবে গুরুত্বপূর্ণ; তেমনি বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী, চাচা-চাচী, ফুপু-ফুপা, মামা-মামী, শিক্ষক-শিক্ষিকা সবার অবদানই মূল্যবান। ভূমিকার ভিন্নতা থাকতে পারে, অবদান কম-বেশি থাকতে পারে; তবুও সবাই শ্রদ্ধেয়-সম্মানিত!

একবারও যদি কেউ কোলে নিয়ে থাকে, কপালে চুমু দিয়ে থাকে, হাটতে শেখাতে হাত ধরে থাকে, কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে থাকে, ভালো কিছু শিখিয়ে থাকে- সেই স্নেহ-ভালোবাসার প্রতিদান দেয়ার মতো এমন জাগতিক কী সম্পদইবা কেউ অর্জন করে থাকে! অর্থমূল্যে যে অবদান-ভূমিকার মূল্যায়ন করা যায় না, চাইলেই যার বিনিময় দেয়া যায় না; তার জন্যই তো মানুষ চিরঋণী হয়ে থাকে!

অথচ যারা শৈশবে-কৈশরে চিরঋণী করার মতো ভূমিকা ন্যূনতম হলেও রেখেছেন তাদেরই মধ্যকার কোনো দ্বন্দ্বে কারো পক্ষপাতিত্ব করতে গিয়ে আরেকজনের সাথে বেয়াদবি করা বা অসম্মানিত করা বা অমর্যাদা করা সমীচীন হতে পারে না; সেক্ষেত্রে ন্যায়ের পক্ষে থেকে মার্জিত ভাষায় উত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে উভয়ের কল্যাণকামী হিসেবে সুষ্ঠু মীমাংসা বা সমাধানে ভূমিকা রাখা যেতে পারে!

কৃতজ্ঞতাই এমন সম্পদ যে সম্পদে সম্পদশালীর কোনো ভয় থাকে না, আনন্দের সীমা থাকে না, যন্ত্রণাকে আনন্দের অনুভূতিতে পরিবর্তন করে। স্রষ্টা যা দিয়েছেন কৃতজ্ঞচিত্তের কেউ যদি তাতেই সন্তুষ্ট থাকে, সে কোনো অভিযোগ না করেই লক্ষ্যগুলির দিকে এগিয়ে যেতে পারেন। নিয়েও কৃতজ্ঞ থাকা, দিয়েও কৃতজ্ঞতা অনুভব করা যেকোনো পরিস্থিতিতে ভালো কিছু খুঁজে পেতে সাহায্য করে।

কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠুক মন, কৃতজ্ঞ হোক আত্মা, প্রসারিত হোক কৃতজ্ঞতার দৃষ্টি। কৃতজ্ঞতার মনোভাব ভালোর দিকে মনোনিবেশ করায়, ধন্যবাদ দিতে শেখায়, প্রতিটি পদক্ষেপ ইতিবাচক অর্জনের দিকে যায়। যে কৃতজ্ঞ হওয়া বন্ধ করে সে খুব সাধারণ কিছু পায়, জীবনকে সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করতে অক্ষম হয়ে পড়েন, হতাশ বোধ করেন।

কৃতজ্ঞতা সম্ভাবনার দ্বার খুলে, অন্তরের চোখ খুলে ও প্রশান্তির প্রাচুর্যে মন ভরে। কৃতজ্ঞতায় বাড়ে- শুভাকাঙ্ক্ষী, সন্তুষ্টি, সৃজনশীলতা, কৌতূহল, সুস্থ চিন্তা, নম্রতা ও সুখ। কৃতজ্ঞতায় কমে অভিযোগ, তুলনা, বিরক্তি ও অযাচিত যাচাই । তাই কৃতজ্ঞতা স্বীকারের চর্চা বাড়ানো দরকার। প্রকৃত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হোক সৃষ্টিকর্তার প্রতি, প্রকৃতির প্রতি, পিতা-মাতার প্রতি, শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রতি, প্রশিক্ষকদের প্রতি, আত্মীয়-স্বজনের প্রতি, পাড়া-প্রতিবেশির প্রতি, বন্ধু-বান্ধবের প্রতি, সহপাঠী-সহকর্মীর প্রতি, জুনিয়র-ছোটদের প্রতি।

সমাজে পারস্পরিক কৃতজ্ঞতার প্রকাশ বেশি বেশি দৃষ্টিগোচর হওয়া দরকার। নিঃসংকোচে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারার মতো মুক্ত মনের মানুষ তৈরি হওয়া দরকার। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে- ভালো থাকা যায়, হাসি খুশি থাকা যায়, সুন্দর সুস্থ সমাজ গড়া যায়, প্রতিহিংসা-বিদ্বেষ-সংঘর্ষ এড়ানো যায়। আসুন কৃতজ্ঞ হই- আমাদের জীবনের অস্তিত্বের জন্য, ভূ-পৃষ্ঠে প্রতিষ্ঠার জন্য, জীবিকা নির্বাহের উপকরণসমূহের জন্য, স্রষ্টার অনুগ্রহরাজির জন্য, পার্থিব প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর জন্য, শ্রদ্ধা-স্নেহ-ভালোবাসার জন্য।

কৃতজ্ঞতা বোধ ক্ষমা করতে শেখায়, স্বীকৃতি দিতে সক্ষম করে, সম্মান করার মানসিকতা জাগায়, সঠিক যোগাযোগে ভূমিকা রাখে, ভুল বোঝাবুঝি দূর করে, অন্যের প্রশংসা করার মানসিক শক্তি বাড়ে, নিজের ভিতরে সুখের অনুভূতি তীব্র করে, সেবার মধ্যে বেশি তৃপ্তি পাওয়ার মতো মানসিকতা তৈরি করে এবং অন্তর থেকে ক্ষমা চাওয়ার সাহস জোগায় । কৃতজ্ঞচিত্তে অন্যের দান মূল্যায়ন- নিজেকে ভালো রাখে, সুখী রাখে, অনেক সমস্যার সমাধান করে, বাস্তব পরিস্থিতির মোড় ঘুরায়ে দেয়।

কৃতজ্ঞতা জানানো কখনো বাহুল্য নয়, এতে আত্মসম্মান ক্ষুণ্নও হয় না। কেউ হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে ভালো শিক্ষা দিলে; ভালো-মন্দ বিচারক্ষমতা বাড়ালে, বিচক্ষণতা-ভদ্রতাবোধ শিখালে, বুকে জড়িয়ে ধরে সাপোর্ট দিলে- তাকে একটু ভুল বোঝাবুঝি ও মতের অমিল হলেই অভিমান করে দূরে ঠেলে দেয়া কখনই ঠিক নয়। নিজেদের কৃতজ্ঞতা দেখায়ে সন্তানদের কৃতজ্ঞতা শেখাতে সচেষ্ট হওয়া উচিত।

কারণ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মধ্যে রয়েছে অনেক কল্যাণ, শারীরিক ও মানসিক উপকার। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা মানসিক অবসাদ, দুশ্চিন্তা, অমূলক ভয়ভীতি ও খারাপ আসক্তির ঝুঁকি কমায়। কৃতজ্ঞ হলে- নিজেকে ঘৃণা করা, নিজেকে সবসময় অসুন্দর, দুর্বল, উপেক্ষিত মনে করার মতো হীনম্মন্যতা দূর হয়। কৃতজ্ঞতার মনোভাব আরো ইতিবাচক হতে, উত্তম অভিজ্ঞতা থেকে আনন্দ লাভ করতে, স্বাস্থ্যকে আরো উন্নত করতে, দুর্দশার সঙ্গে মোকাবিলা করতে এবং দৃঢ়বন্ধন গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

হৃদয়ে কৃতজ্ঞতা থাকলে অন্যের কাজ-কৃতিত্ব-দান-ধ্যানকে মর্যাদা দিতে ভুলেন না। আন্তরিক কৃতজ্ঞতাবোধ নিজের ও অন্যের জীবনে অনেক কাজে আসে। অকৃতজ্ঞ না হলে মর্যাদা ও স্বীকৃতি অনেক সুখের সঞ্চার করে। কৃতজ্ঞতা তাদের জন্য যাদের কাজ বেঁচে আছে এবং সেসব কাজের সিঁড়ি বেয়ে আমরা সুফল ভোগ করছি। যাদের উপকারের বিনিময়ে উপকার করা অসম্ভব তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য জিহ্বাকে লম্বা করতে পারলে জগতটাই প্রশস্ত হয়ে যায়। আসুন উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘শুকরিয়া’, ‘যাজাকাল্লাহ’, ‘ধন্যবাদ’, ‘থ্যাংক ইউ’ বা ‘যাজাকাল্লাহু খাইরান’ বলি। আমার জীবনে যারা একটু হলেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন আল্লাহ সবাইকেই সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন।

লেখক: আনিসুর রহমান এরশাদ,  লেখার সময়: ২ জুন ২০২২

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top