রাজনীতি মানুষের প্রকৃতির একটি প্রয়োজনীয় দিক। রাজনীতি প্রত্যাশিত আচার-আচরণের জন্য নিয়ম, প্রবিধান ও মান নির্ধারণের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি ও জোট প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজনীতি সমস্ত সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, জাতি এবং জাতিগত উৎস থেকে নাগরিকদের দৈনিক জীবনকে প্রভাবিত করে। রাজনীতি সমাজের বিভিন্ন দিক, অর্থনৈতিক সুযোগ এবং শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলিসহ প্রভাব বিস্তার করে।
একটা ভালো রাজনীতি ভালো নেতা তৈরি করে। আর ভালো নেতা সমাজের জন্য কাজ করেন। একটা ভালো রাজনীতির ফলে দুর্নীতি রোধ করা, সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হয়। সমাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বিচারবিভাগকে শক্তিশালী করে তোলা, সাধারণ মানুষের সাথে নেতার সম্পর্ক উন্নয়ন করা এগুলো একমাত্র ভালো রাজনীতির চর্চা দ্বারাই সম্ভব। ভালো রাজনীতির ফলে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়, ভালো সরকার গঠনে সাহায্য করে, প্রশাসনিক কাজ ত্বরান্বিত হয়, ভালো সমাজ গঠনে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা পালন করে।
রাজনীতিতে নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়াটাই সব কিছু নয়। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশকে সকল ক্ষেত্রে সময়োপযুগী মানে এগিয়ে নেয়া এবং সবার কল্যাণ নিশ্চিত করাই বড় কথা। রাজনীতিবিদ নেতারা যদি দেশের সাধারণ মানুষের চিন্তাকে বোঝেন, রাজনীতিকে মানুষের সেবার হাতিয়ার ভাবেন- তবেই স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল ঘরে ঘরে মিলবে।
তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক, রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা দেখাতে সক্ষম হোক, সংযত হয়ে গণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলুক, সাংবিধানিক আচার-আচরণ রপ্ত করুক, প্রতিপক্ষকে শত্রু ভেবে দমনের প্রবণতা দূর হোক এবং আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধুমাত্র ক্ষমতাসীনদেরই নয় জনগণের সবার জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত হোক।
রাজনৈতিক সংস্কৃতিই দেশজ সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটায়, লালন করে, বিস্তার ঘটায় এবং নিয়ন্ত্রণ করে। সহিংস কর্মসূচির ফলে বাড়ে চরম হতাশা, স্থবির হয়ে পড়ে উৎপাদন, বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠান যাতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। সংঘাত ও সংঘর্ষের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেশকে ক্রমান্বয়ে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যায়।
সংঘাতময় রাজনীতি বাড়লে অর্থনীতি হয়ে পড়ে স্থবির, বিনিয়োগ হয় বাধাগ্রস্ত, প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে পড়ে নেতিবাচক প্রভাব, শিল্পোৎপাদন হয় ব্যাহত, রফতানি খাতে ঘটে বিপর্যয়, ব্যাংকিং ব্যবসাতে হয় নৈরাজ্যে, বীমা ব্যবসাতে নামে ধস, শেয়ার বাজারে পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। এতে দেশের অর্থনীতি হয় নিম্নমুখী, নেতিবাচক প্রভাবে দেশের কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জন হয় বড় চ্যালেঞ্জ।
তাই ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ হোক, শান্তিপূর্ণভাবে জীবন পরিচালনা ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান হোক, দেশের উন্নয়ন ও মানুষের উন্নতির ধারা অব্যাহত থাকুক, গণতান্ত্রিক সরকারের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকুক।