মাদক জীবন থেকে জীবনকে কেড়ে নেয়, জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করে, ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে নিয়ে যায়। মাদক এমন মরণব্যাধি, আত্মঘাতিমূলক জীবন প্রবাহ, আত্মহননের অসৎ এবং কুৎসিত পথ; যা দুর্বিষহ করে জীবন, অন্ধকার আনে পরিবারে, ধ্বংস করে পারিবারিক সম্প্রীতি, কুয়াশাচ্ছন্ন করে ভবিষ্যৎ, অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি করে, মেধা বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে, নষ্ট করে পারিবারিক শৃঙ্খলা, কলুষিত করে সমাজ, বাড়ায় জ্ঞানবুদ্ধিহীন মানুষ, ধ্বংসের পথ প্রশস্ত করে।
মাদকের কারণে দেখা দেয়-পরিবারে অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা, সামাজিক উন্নয়নে বাধাগ্রস্ততা, মানব সম্পদের অপব্যবহার, অপরাধমূলক কাজের ব্যাপকতা, মূল্যবোধের অবক্ষয়। একজনের মাদক গ্রহণ আরেকজনকেও ফেলে দেয় মাদক গ্রহণের ঝুঁকিতে। নেশাগ্রস্ত এবং নেশাখোররা ধর্ম মানে না, দেশের আইন মানে না, সুন্দর-সুখী পরিবার গড়ে তোলতে পারে না। মাদক গ্রহণের ভয়ঙ্কর ফাঁদে একবার জড়ালে স্বাস্থ্যহানি ঘটে, সৃজনীশক্তি শেষ হয়ে যায়। দেহের পাশাপাশি বিশৃঙ্খল ও বিধ্বস্ত হয়ে যায় মনের স্বাস্থ্য, পুড়ে যায় আধ্যাত্মিক ও নৈতিক মূল্যবোধ, সামাজিক চিত্রে নেমে আসে দুর্যোগ।
মাদকাসক্ত ব্যক্তি শিক্ষিত হলেও মূর্খের মতো আচার-আচরণ করে, ভদ্র ঘরের সন্তান হলেও অভদ্র ব্যবহার করে, তেলাপোকা দেখে ভয়ে লাফিয়ে ওঠলেও ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন করতে পারে, মুরগী জবাই দিতে হাত কাপলেও মা-বাবার মতো নিকটজনের গলায় ছুঁড়ি চালাতে পারে, মেয়েদের চোখে চোখ পড়লেই লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া ছেলেটিও ধর্ষণ করতে পারে। কারণ মাদক গ্রহণের পর হিতাহিত জ্ঞান থাকে না, মায়া থাকে না নিজের প্রতি কিংবা অন্যের প্রতি। তাই যেকোনো অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বিবেক বাধা দেয় না, মিথ্যা কথা বলা হয় স্বাভাবিক বিষয়, কোনো ধরনের অপরাধবোধ তাদের স্পর্শ করে না, ধর্মের প্রতি আস্থাহীন হয়ে পড়ে, ভালোবাসা- স্নেহ-মমতাও তাদের স্পর্শ করতে পারে না।
তাই মাদক মুক্ত সমাজই হোক আমাদের সবার অঙ্গীকার। আসুন মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি।
zrp34t
Your comment is awaiting moderation.