জীবনকে তোমার সেরাটা দিয়ে যাও

zaheed sabur

জাহিদ সবুর

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের জুরিখ দপ্তরের  প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ সবুর। বাংলাদেশের প্রতিভাবান এই তরুণ  ২০১৯ সালের ২ মে টেক জায়ান্ট গুগলের ডিরেক্টর এবং ১ নম্বর কোড জেনারেটর হিসেবে পদোন্নতি পান।  ক্যারিয়ার শুরু ২০০৭ সালে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে গুগলের ব্যাকেন্ড সিস্টেম ডেভেলপমেন্টের একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। এর ৬ মাস পর ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগলের সদর দপ্তরে যোগদান করেন।  এর আগে রেকর্ড সিজিপিএ ৪.০ নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে।  মেধাবী ও দূরদর্শী জাহিদ সবুরের  ব্যক্তিগত ফেসবুক পেইজের পোস্ট, ইউটিউভ চ্যানেলের ভিডিও, টুইটারের টুইট এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের সমন্বয়ে জাহিদ সবুরের চিন্তাধারা পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা নিয়ে লেখাটি  পরিবার ডটনেটের পাঠকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। 

এক নজরে দেখে নিন

সেরাটা দিয়ে যাও

কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় সংকল্প—এই দুইয়ের চেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার আমার জানা নেই। আজ তুমি যা-ই হও না কেন, কাল যেন আগের চেয়ে একটু হলেও এগিয়ে থাকো। জীবনে কোনো ব্যর্থতাকেই খুব বড়, আর কোনো সুযোগকেই খুব ছোট মনে করো না। জীবনকে তোমার সেরাটা দিয়ে যাও, শেষ পর্যন্ত সাফল্য একদিন আসবেই।

জীবনে কোন শর্টকাট নেই। অসাধারণ কিছু অর্জন করতে চাইলে ঠিক তেমনি অসাধারণ পরিশ্রম করতে শুরু করুন। অন্যের তুলনায় আপনার কি আছে বা কি নেই সেই হিসেব না করে, তার চেয়ে অনেক জরুরী বিষয় হচ্ছে আপনি নিজে কি করছেন বা করতে পারেন সেই বিষয়ে মনোযোগ দেয়া।

 নতুন নতুন আইডিয়া

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটা হচ্ছে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। যেটা বেস্ট ডিসিশন সেটা নিতে হয়। এটা সব সময় আইডিয়াল ডিসিশন হয় না। কারণ পারফেকশন অনেক সময় সম্ভব না। যেটা করলে সবচেয়ে ভালো হবে, সেটা করতে হয়। আমি যেটা করতে ভালোবাসি, সেটা হচ্ছে যে নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আসা, নতুন নতুন আইডিয়া ডেভেলপ করা, সেটাকে ম্যাটারিয়ালাইজ করা। নতুন আইডিয়া মানে হচ্ছে নতুন ট্রান্সফরমেটিভ আইডিয়া।

 খুব ধৈর্যশীল হতে হবে

জীবন কঠিন, জীবন সহজ না। মোটিভেশনাল স্পিচ অনেক সময় ভয়ের হয়ে যায়। এটা একটা আর্টিফিশিয়াল প্রেশার তৈরি করছে, এই চাপটা কিন্তু বিশাল; যে আমাকে পারতে হবে, আমারও করতে হবে। সফল হওয়া-ব্যর্থ হওয়া, এটা জরুরি না। জরুরি হচ্ছে আমরা আমাদের বেস্ট দিচ্ছি কি না। আর খুব ধৈর্যশীল হতে হবে। মানে শর্টকাট খুঁজলে হবে না।

সময়ের সবচেয়ে ভালো ব্যবহার

প্রত্যেকটা মিনিট বাঁচানো গেলে সেটা কিন্তু পুরো দেশের জন্য অনেকগুলো মিনিট, অনেকগুলো ঘণ্টা, অনেকগুলো বছর বেঁচে যাবে। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে একটা জিনিস কনস্ট্যান্ট – ২৪ ঘণ্টা সময়। সে বিল গেটস হোক আর সে ক্লাস ওয়ানের ছাত্র হোক। সেই সময়ের সবচেয়ে ভালো ব্যবহার যদি করা না যায়, তাহলে কিন্তু বাকি সবকিছু অ্যাফেক্টেড হয়ে যায়।

টাইম সেইভ করা

কোনটা উন্নয়ন আর কোনটা উন্নয়ন না, এটা যদি আমরা পরিমাপ করতে না পারি, তাহলে কিন্তু ঠিক দিকে যে আমরা যাচ্ছি, সেটাও পরিমাপ করতে পারব না। আমার মনে হয়, লক্ষ্য এটা হওয়া উচিৎ না যে সবকিছু ডিজিটাল করতে পারলাম কি না? লক্ষ্য এটা হওয়া উচিৎ যদি ডিজিটাল করে টাইম সেইভ করা যায়, তাহলে অবশ্যই সেটা ডিজিটাল করা উচিৎ।

সবার সঙ্গে মিশতে পারা

উন্নত বিশ্বে বিশেষ করে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেহেতু বিভিন্ন দেশীয় মানুষ কাজ করে, তাই নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিটি সাংস্কৃতিক ভাবে সবার সঙ্গে মিশতে পারবে কি না তা খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। দিন শেষে কাজের সাফল্য নির্ভর করে টিমের সাফল্যের উপর। আর একটি টিম তখনি সফল হতে পারে যখন প্রতিটি মানুষ নিজেদের ভিন্নতাকে দূরে রেখে একই পর্যায়ে এসে এক হতে পারে। গড়পড়তার একজন পেশাজীবী হয়ে জীবন কাটিয়ে দেয়া হয়ত খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। কিন্তু খুব ভালো অবস্থানে যেতে মানুষ হিসেবে খাঁটি হওয়া খুব বেশি প্রয়োজন।

নিজের সঙ্গেই প্রতিনিয়ত লড়াই করা

আমি গতকাল কী ছিলাম, তার থেকে আমি আজকে একটু হলেও এগিয়েছি কি না; যদি আমি এগিয়ে থাকি তাহলে ঠিক আছে। বাকি আরেকজন আমার থেকে ১০ কদম এগিয়ে থাকুক, সমস্যা নেই। আস্তে আস্তে আমিও চলে যাব। প্রতিদিন এক পা আগালে ৩৬৫ দিনে ৩৬৫ পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে যায়। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়লে নেতিবাচক বলা হবে এর কোনো ভিত্তি নেই। নিজেকে এগিয়ে নিতে নিজের সঙ্গেই প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয়। শিখতে হয় নতুন কিছু।

ইংরেজি ভাষা শেখা

জীবনে শর্টকাট পথ খুঁজে বা ইংরেজিকে হেলা করে পিছিয়ে যেয়ো না। সফলতার জন্য ইংরেজি জানতে হবে, অন্য ভাষা জানতে হবে। ভাষা একটি দক্ষতা যা আপনার সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ সহজ করে দিবে। এদেশে কেউ ইংরেজিতে পোস্ট করলে, কথা বললে অন্যরা গালাগালাজ করে, তখন তাদের দেশপ্রেম উতলে উঠে। অথচ কেউ কেউ  অন্য ভাষা শিখে বিদেশে গিয়ে নিজেকে সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে গিয়ে দেশকে সম্মানিত করছে। কোনটি দেশপ্রেম বোঝা উচিত। দেশ এগিয়ে যাবে যদি আমরা বদলাই। নতুনরা যেন সব সময় পজিটিব থাকে এবং বিভিন্ন ভাষা শিখে নেয়, বিশেষ করে ইংরেজি ভাষা।

কারো মনে আঘাত না দেয়া

অন্যকে ব্যাথা দিয়ে কিছু বলা বা করা মানুষের অভাব নেই আমাদের সমাজে। এই অসুস্থ অবস্থার উন্নতি চাইলে নিজেদের দিয়েই শুরু করুন। কারো মনে আঘাত না দিয়ে আজকের দিনটা পার করতে পারবেন কি? ভাল মানুষের অভাব নেই আমাদের সমাজে কিন্তু তবু কেন মেয়েদের সাথে অভদ্রতা, অসভ্যতা প্রতিনিয়ত শুধু বেড়েই চলেছে? জীবনে উত্থান পতন ছিল, আছে, থাকবে।

নিজেদের চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তন

আরাম আর আনন্দ এক জিনিস নয়। টাকা দিয়ে হয়তো আরাম কেনা যায়। সত্যিকারের আনন্দ কেনা যায় কিনা আমার জানা নেই। আমার এমন অসাধারণ জায়গা গুলোতে হাইকিং করে যেতে যে পরিশ্রম এবং বিরল সব অভিজ্ঞতা হয় সেটার আনন্দ, বিদেশে বাসায় বসে আরাম করা বা দামি ফোন দিয়ে ছবি তোলার চেয়ে অনেক অনেক গুন বেশি। শুধু যারা এমনটা করেন তারাই এই আনন্দের গভীরতা উপলব্ধি করতে পারবেন। আর যারা শুধুই টাকার অংকে জীবনের সব কিছু পরিমাপ করেন, তারা নিজেদের চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তন করলেই বরং জীবনে সত্যিকারের আনন্দ খুজে পাবার সুযোগ বাড়বে।

চেষ্টা চালিয়ে যাবার সাহস

মিলিয়ন ফলোয়ার কি বস্তু আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষের কখনো জানার সৌভাগ্য হবে ভাবিনি। শুধু জানি একজন মুসলমান হিসেবে আমি প্রথমত এবং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ এবং তার নির্দেশনার ফলোয়ার। তার পাশাপাশি চেষ্টা করেছি ভালো আর খারাপের ভিড়ে ভালোর ফলোয়ার হতে। ন্যায় অন্যায় আর ঠিক ভুলের পার্থক্য চিন্তা করতে শেখাতে। ভদ্রতা আর অভদ্রতার লড়াইয়ে ভদ্রতায় উৎসাহী করতে। আলো আর অন্ধকারের মাঝে আলোর পথ দেখাতে। “পারবে না” বলা নেতিবাচকদের ভিড়ে, চেষ্টা চালিয়ে যাবার সাহস জোগাতে।

হারাম উপার্জন নয়

দিনশেষে আমি শুধুই একজন মানুষ মাত্র। আপনারা এক মিলিয়ন মানুষ সম্মিলিতভাবে তার চেয়ে বহু গুণ বড়। তাই আমার শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যদি আপনাদেরকে সামান্য হলেও ভাল কিছু দিয়ে যেতে পারি তাহলেও নিজেকে সার্থক মনে করবো। আমার পেশাগত বা ব্যাক্তিগত জীবনের সফলতা বা উপার্জনের উপরে এসবের কোনোই প্রভাব নেই। আমি ভিডিও বা কন্টেন্ট মনেটাইজ করে হারাম উপার্জন করি না, ইনশাআল্লাহ্ কখনোই করবো না। একটাই অনুরোধ, আমার জন্যে একটু দোয়া করবেন, এতটুকুই যথেষ্ট।

 দামী কম্পিউটার ভালো প্রোগ্রামার তৈরি করে না

জীবনে এমন অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য হয় যা বলে বা লিখে ধারণ করতে পারি না। নিজের সেই ঘাটতি পূরণ করার ইচ্ছে থেকেই হয়তো, ছোট থেকেই ছবি তোলার প্রতি ছিল দারুন আকর্ষণ। অনেক ধৈর্য ধরে, পরিশ্রম করে জমানো টাকায় কেনা প্রথম শখের জিনিস ছিল একটি ক্যামেরা। সেই ছিল ভালোবাসার শুরু। আজও ছবি তোলা আমার সবচেয়ে প্রিয় অভিজ্ঞতাগুলোর অন্যতম।

দামী কম্পিউটার যেমন ভালো প্রোগ্রামার তৈরি করে না, তেমনি দামী ক্যামেরা দিয়ে ভালো ফটোগ্রাফার হওয়া অবান্তর। ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রামের কম্প্রেশন আর স্মার্টফোনের স্ক্রিন সাইজের সীমাবদ্ধতার কারণে, এখনকার ক্যামেরার ভালো খারাপে আর তেমন কোনই পার্থক্য হয় না। বরং এখনকার যে কোনো ভালো ছবির পিছনে ফটোগ্রাফারের অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম, আর ছবির সাবজেক্ট – এই তিনের অবদান সম্ভবত ৯৫%। বাকিটা ক্যামেরা। শুরুতে যখন ছবি তুলতে জানতাম না, তখন ঠিক এর উল্টোটাকেই সত্যি ভাবতাম।

 নিজের চিন্তাভাবনাকেই প্রাধান্য দেয়া

সমাজ বলে সফলতা মানেই বাড়ি, গাড়ি থাকতে হবে। সেই সামাজিক অন্ধত্বের পরিবর্তে, নিজের চিন্তাভাবনাকেই প্রাধান্য দিতে চেষ্টা করে এসেছি। তিন মহাদেশে বসবাসের পর যেদিন মনের মতো শহর খুজে পেয়েছি, সেদিনই কেবল বাড়ির কথা ভেবেছি। ঠিক তেমনি সবাই যেখানে গাড়ির ভক্ত, আমি আজও সাইকেলের সাথেই আছি। প্রয়োজনে গাড়ি ব্যাবহার করলেও, সাইকেল চালানোয় যে আনন্দ খুঁজে পাই, ড্রাইভ করে সেটা কখনোই পাইনি। আমি খুবই সাধারণ মানুষ তাই হয়তো ছোট ছোট জিনিসকেই খুব ভালো লাগে। এতে সামাজিক বা আর্থিক মূল্যায়নের কোনো ভিত্তি থাকে না। শারীরিক এবং মানসিক, দুই ক্ষেত্রেই সাইকেল চালানো খুবই উপকারী।

তাই হয়তো স্যার আর্থার কোনান ডয়েল লিখেছিলেন – “When the spirits are low, when the day appears dark, when work becomes monotonous, when hope seems pointless, just get on a bicycle and go out for a spin down the road, without thinking of anything but the ride you are taking.” কাজেই যদি কখনো মন খারাপ থাকে, সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। মন ভাল হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।

 ক্রমাগত চলতে থাকা

ফেইসবুক, ফোন, ইত্যাদি ব্যবহারে বিরতি দিলে আমরা যা করি, সেটাই সত্যিকারের জীবন। অন্তত নিজের ক্ষেত্রে বলতে পারি, এমন বিরতিগুলো আমার জীবনে অপরিহার্য। এর ফলেই সুন্দর মুহূর্তগুলোর দেখা পাই। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষাগুলোর অন্যতম সম্ভবত ক্রমাগত চলতে থাকতে শেখা। যতবার থেমে গেছি ততবারই পরবর্তীতে সে নিয়ে আফসোস করতে হয়েছে। পড়াশোনা, কাজ, খেলাধুলা, নামাজ পড়া, শখের বিষয়গুলো নিয়ে কিছু করা – অর্থবহ যাই করতে ভালো লাগে, করতে থাকুন।

 আরেকটু ভালো পারার চেষ্টা

সব কিছু হয়তো সহজ হবে না। যেটা কালকে পারেননি, সেটা আজকে আবার চেষ্টা করুন। যেটা ভালো পেরেছেন, সেটা আরেকটু ভালো পারার চেষ্টা করুন। কিন্তু গত বছরের হজের ছবি পোস্ট করে যেমন এবারের হজ পালন হবে না, বা গতকালের নামাজ পড়া দিয়ে যেমন আজকের হিসেব হবে না, তেমনি আজকে এগিয়ে না চললে, গতকাল বা আগামীকালের এগিয়ে চলা দিয়ে সেটা পূরণ হবে না। তাই যত ধীর গতিতেই হোক না কেন, চলতে থাকুন। শরীর, মন ভাল রাখা থেকে শুরু করে ইহকাল আর পরকালের সাফল্যে – সবকিছুর চাবিকাঠি সেই একই। আমি খুবই সাধারণ একজন মানুষ কিন্তু তারপরও আমি জীবনে যা কিছুতেই যত ক্ষুদ্র সফলতাই পেয়েছি তার মূল কারণ সেই একটাই।

 মূল্যবান অর্জন স্বাধীনতা

আইনকানুন দিয়ে বা জেলে বন্দী করে কাউকে খারাপ কাজ করা থেকে হয়তো বিরত রাখা যায়, কিন্তু সেই মানুষকে ভালো বানানো কি যায়? যায় না। তেমনি অগাধ স্বাধীনতা বা অন্যায় সুযোগ দেওয়া হলেই কি সবাই খারাপ কাজ করে? করে না। আর এটাই হয়তো ভালো আর খারাপের সত্যিকারের পার্থক্য। সুবিশাল পৃথিবীতে এই তুচ্ছ আমার অন্যতম মূল্যবান অর্জন হয়তো “স্বাধীনতা”। যা আমাদের চারপাশের বহু তথাকথিত সফল মানুষদেরও নেই, যাদের প্রতিনিয়ত দুর্নীতিবাজদের তোষামোদ করে চলতে হয়। ভালো মানুষ হবার স্বাধীনতাটুকুই যদি না থাকলো তাহলে কিই বা মূল্য তাদের সেই পরাধীন সফলতার?

 প্রকৃতির মাঝে শেখার রয়েছে অনেক কিছু

প্রকৃতির নির্মলতার মাঝে ছোট ছোট মূহর্তুগুলোতেও যে অসাধারণ আনন্দ আর প্রশান্তি খুঁজে পাই সেটা বহু বিলাসবহুল আয়োজনেও খুঁজে পাইনি। সৃষ্টিকর্তার তৈরি এরূপ সীমাহীন প্রকৃতিক সৌন্দর্যের পাশে মানুষের তৈরি দালানকোঠার শহর কিংবা প্রাসাদ পর্যন্ত নিছক খেলনা মাত্র। প্রকৃতির মাঝে শেখারও রয়েছে অনেক কিছু। প্রকৃতি নিরলস আপন গতিতে নিজেকে পরিবর্তন করে চলেছে। অন্যের বিচার বিশ্লেষণে তার কোন যায় আসে না। কারো প্রতি কোন ঘৃণা বা ক্ষোভও নেই তার মধ্যে। তারপরও আমাদের জীবনে প্রকৃতির বিশাল প্রভাব অনস্বীকার্য। তাই হয়তো আইনস্টাইন বলেছিলেন, “Look deep into nature and you’ll understand everything better”.

 আজকেই শুরু করুন

পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যাক্তিও জানেন না আগামীকাল কি হবে, বা তিনি আদৌ বেঁচে থাকবেন কিনা। আমরা শুধু জানি আজকের দিনটা আর ফিরে আসবে না। তাই শুধুই আগামীর অপেক্ষায় না থেকে, যা কিছু শুরু করার, বা ইচ্ছে পূরণের, আজকেই করুন। আর যার কাছে যা হিসেব, আজকেই মিলিয়ে রাখুন।

 অপরাধ বন্ধে সুবিচার প্রয়োজন

সত্যিকারের যোগ্যতা বা অর্জনের চেয়ে দুর্নীতিতে দক্ষতাই যখন সাফল্যের সবচেয়ে বড় নির্ধারক হয়ে যায়, তখন এমন মানুষেরাই বাংলাদেশের পরিচয় হয়ে দাড়ায়। তাই এর পরিবর্তনের জন্যে আমাদের নিজেদের চিন্তাভাবনা এবং সামাজিক কার্যকলাপ শোধরানোও খুবই জরুরি। মানুষের অপরাধ বন্ধের জন্যে সুবিচার প্রয়োজন। অপরাধ করার আগেই দেশের সবাইকে হাজতে আটকে রাখলে, অবশ্যই আপনি নিশ্চয়তা দিতে পারবেন যে কোন অপরাধ হবে না। কিন্তু সেটা কোন জ্ঞানসম্পন্ন, বাস্তব সমাধান নয়। মানুষকে খারাপ কাজ না করায় উৎসাহী করাই এর একমাত্র সমাধান। ধর্মীয় শিক্ষা অবশ্যই তাতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু পর্ণ আসক্তি কেন খারাপ বুঝতে সাহায্য করা, আর ইন্টারনেটে যে পর্ণ দেখবেন না তার নিশ্চয়তা নেই, তাই “ইন্টারনেট মানেই খারাপ” বলা একদমই ভিন্ন জিনিস।

 আল্লাহই আমাদের সৃষ্টিকর্তা

আপনি যদি একশোবারও বলেন কেউ ধর্ম জানে না, তাতেও কারো যায় আসবে না। কিন্তু বাস্তবে আপনি যদি গালি দেন, অপরিচিতদের উত্যক্ত করেন, চুরি করেন, ঘুষ খান, খাবারে ভেজাল মেশান, ধর্ষণ করেন – তাহলে সেই জ্ঞান বৃথা। সৃষ্টিকর্তা সেই জ্ঞানের কারণে এতে ছাড় দেবেন? আমি আল্লাহ্ না লিখে সৃষ্টিকর্তা কেন লেখি। আমি উনাকে ডাকার বা স্মরণ করার সময় আল্লাহ্ এবং বাংলায় লেখার সময় সৃষ্টিকর্তা লেখি। কারণ খুবই সহজ, আমি বিশ্বাস করি এই দুই, এক এবং অদ্বিতীয়। আমাদের ধর্মে আল্লাহ্ই আমাদের সৃষ্টিকর্তা।

 চেষ্টা করুন ভালো মানুষ হতে

নামাজ পড়ুন, রোজা রাখুন, কোরআন পড়ুন, দুস্থদের সাহায্য করুন। পাশাপাশি চেষ্টা করুন সত্যিকার অর্থেই একজন ভালো মানুষ হতে। চিন্তা করে দেখুন আপনার জীবন কতটাই সুন্দর হয়ে যেত যদি অন্যেরা আপনাকে কষ্ট দেয়া, আঘাত করা, মন্দ কথা বলা, ছোট করতে চাওয়া, অকারণেই ভুল ধরা, ইত্যাদি খারাপ মানসিকতার সব কার্যকলাপ বন্ধ করে দিত। তাহলে আপনি কেন একই কাজগুলো করা কমিয়ে বা থামিয়ে দিয়ে অন্যদের জীবনকে ঠিক ততটাই সুন্দর করে দেবার সুযোগ নষ্ট করছেন?

 সত্যিটা জেনে বুঝে প্রতিরোধ

১. ভালো করে না জেনে, বুঝেই আতঙ্কিত হওয়া। ২. ভুল ধারণা পেয়ে অবহেলা বা কিছুই না করা। ৩. সত্যিটা জেনে, বুঝে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। যারা আপনাকে প্রথম পথ থেকে দ্বিতীয় পথে নিয়ে যাচ্ছে, তারা না বুঝেই আপনার উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি করছে। দ্বিতীয় পথ অবশ্যই সবচেয়ে সহজ, এবং অলস মানুষদের জন্যে আদর্শ, কিন্তু সেই পথে চলে কখনোই ভালো কিছু হয়নি। তৃতীয় পথের জন্যে প্রয়োজন কিছুটা সদিচ্ছা এবং সাহসিকতা – কঠিন পরিস্থিতিতে সফল হবার জন্যে এর কোনো বিকল্প আমার জানা নেই।

 সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকা

আমরা কেউই ত্রুটিহীন নই। আমাদের জীবনটাও নিখুঁত নয়। তেমন হওয়াটাও কখনোই জীবনের লক্ষ্য যেন না হয়। আর তার প্রয়োজনও নেই। সফলতা আর ব্যর্থতা, পাওয়া আর হারানো, আনন্দ আর বেদনা – সব মিলিয়েই আমাদের জীবন। সকল ব্যর্থতা, ব্যথা-বেদনাকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে গেলে, সবার জীবনটাই হয়ে যাবে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবার মতো অসম্ভব সুন্দর এক উপহার।

সোশ্যাল মিডিয়া আমাকে তৈরি করেনি

কখনো কখনো খুব খারাপ সময় আসে – কিন্তু সেখানেই আটকে থাকলে, জীবন যে আসলে কত সুন্দর হতে পারে সেটা আর দেখা হয় না। সোশ্যাল মিডিয়া বা কোনো ধরনের পাবলিক প্লাটফর্মই আমাকে তৈরি করেনি। আমি জীবনে যা কিছু অর্জন করেছি তার পিছনে সোশ্যাল মিডিয়া বা কোনোরকম কোনো পাবলিক প্ল্যাটফর্মের কোনো অবদান নেই। আপনি আমাকে ফলো করলেও আমি যা থাকবো, না করলেও তাই থাকবো। আমি কোনো ইউটিউবার, অভিনেতা, গায়ক, খেলোয়াড় বা মানুষকে পুঁজি করে তৈরি হওয়া কেউ নই। আমি কোনো কন্টেন্ট মনেটাইজ পর্যন্ত করিনি। আর তাই আমার যখন যেটা ঠিক মনে হয়েছে বলতে পেরেছি, যা ভালো লেগেছে সেটাই করে গেছি। এই স্বাধীনতাটুকু খুব কম মানুষেরই আছে। আর আমার কাছে জীবনে এর চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নেই।

 আগে নিজেকে সাহায্য করুন

জীবনের প্রয়োজন গুলোর পিছনে ছুটতে ছুটতে কখন যেন আমরা নিজেদেরকেই হারিয়ে ফেলি। নিজের ভালো লাগা গুলোর উপরে স্থান পায় অর্থ, অর্জন, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, সমাজ ইত্যাদি। আমিও সেই পথে ছুটতে চেষ্টা করে দেখেছি, কিন্তু পারিনি। যখনই নিজে ভালো ছিলাম না, তখনই বাকি কোনো কিছুতেই কোনো কাজে আসিনি। তাই শেষে নিজেকেই প্রাধান্য দিয়েছি।

আজকে নিজে কিছু না করতে পারলে, অসুখী হলে, মনে হয় না আমি কারো কোনো উপকারে আসতাম। বরং অন্যদের বোঝা কিংবা যন্ত্রণার কারণ হতাম। তাই অন্যকে সাহায্য করার আগে নিজেকে সাহায্য করুন। আপনি বাকিদের জন্যে সবচেয়ে বড় যে উপকারটি করতে পারেন সেটা হল নিজে সুখী হওয়া। আর শুধুমাত্র তাহলেই, অর্থাৎ নিজে ভালো থাকলেই, আপনি মন থেকে অন্যের ভালো চাইবেন, তাদের সাহায্য করতে পারবেন।

নিজের জন্যে ভালো কিছু করুন

সৎ, সুন্দর, আন্তরিক একটি সমাজ গড়ার প্রথম শর্ত হল আপনার নিজের সুখী হওয়া। তা না হলে অন্যের ভালোতে খুশি না হয়ে, বরং অযথাই তাতে ভুল খুঁজে, বা কষ্ট পেয়ে হাহা করে, তাদের জীবনটাও নিজের মতোই দুর্বিষহ করে তুলতে চাইবেন। তাই নিজের ভালোলাগা গুলোর ব্যাপারে স্বার্থপর হন। পরচর্চা বাদ দিয়ে নিজের জন্যে ভালো কিছু করুন।

 প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা

দেশে বড় হওয়াতে তখন দেশের বেশিরভাগ মানুষের মতোই ভাবতাম, আমিওতো পৃথিবীর অনেকটাই বুঝি, অনেকটাই জানি। তারপর দেশের বাইরে তিন মহাদেশের চার শহরে বসবাস করে, পৃথিবীর অর্ধশতাধিক দেশের মানুষের সাথে মিশে তাদের দেশ এবং জীবন সম্পর্কে জেনে, গত এক যুগ ধরে প্রায় প্রতি মাসেই ট্রাভেল করে, এখন মনে হয় আমি কত সামান্যই বা জানি। কিন্তু দেশের মানুষের কথাবার্তায় এখনও তাদের অগাধ জ্ঞানের ভান্ডার আমাকে মনে করিয়ে দেয়, আমিও এক কালে তেমনই জ্ঞানী ছিলাম।

আসুন আমরা মনটাকে আরেকটু বড় করি, বুঝতে শুরু করি যে এই বিশাল পৃথিবীতে অনেক কিছুই আমরা ভুল জানি বা একদমই জানি না। এই চিন্তায় লজ্জার কিছু নেই। বরং এমন চিন্তাই আপনাকে প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার সুযোগ করে দেবে। কারন আপনি যদি ভাবেন ইতিমধ্যেই সব ঠিক জানেন তাহলে কিন্তু আপনার আর নতুন কিছুই জানার বা শেখার থাকবে না।

 প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরা

দামী পোশাক-আশাক থেকে শুরু করে যা কিছুই ক্রয় যোগ্য, কিংবা দৈহিক বৈশিষ্ট্য থেকে শুরু করে যা কিছুই জন্মসূত্রে পাওয়া, এগুলোর কোনোটাই আমাদের প্রকৃত পরিচয় বহন করে না। আমাদের প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরে আমাদের চিন্তাভাবনা, কথাবার্তা, কার্যকলাপ, অর্জন – যা না কেউ আমাদেরকে দান করতে পারবে, না ছিনিয়ে নিতে পারবে, এগুলোর চাবিকাঠি শুধুই আমাদের নিজেদের হাতে। অযথাই অন্যের ভুল ধরা, অর্জনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা, খুব সহজ। নিজে করে দেখানো তার চেয়ে বহু গুন কঠিন এবং আনন্দের। সুখ এবং সফলতার জন্যে এই দুইয়ের কোন পথ এবং পথের মানুষদের অনুসরণ করবেন সেই সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার।

 স্বার্থপর লিডাররা দলকে ডুবায়

একজন মানুষের সব ধরনের লিডারশিপ কোয়ালিটি থাকতে পারে। সে ডুবন্ত নৌকা থেকে দলকে উদ্ধার করে থাকতে পারে। কিন্তু সে যদি স্বার্থপর হয়, শেষ পর্যন্ত দলকে তার মূল্য দিতে হবেই। আমি ভালমতো জেনে, বুঝে, এবং বহুবার এর প্রমাণ দেখেই বলছি।

পৃথিবীর অন্যতম সেরা অর্গানাইজেশনের ২০০+ মানুষের কাজ এবং ৮০+ বিশ্বের অন্যতম সেরা ইঞ্জিনিয়ারদের ক্যারিয়ারের জন্যে সরাসরি রেসপন্সেবল আমার লিডারশিপ। যখনই দেখি আমি এদের কাউকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারছি না, আমি নিজেই তাকে আমাকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করি। কিন্তু এরকম অনেক দেখেছি যে একজনকে তার বর্তমান লিডার সাহায্য করতে পারছে না, কিন্তু তারপরও সে জোর করেই তার ঘাড়ে বসে থাকতে চেয়েছে। এইসব স্বার্থপর লিডাররা শেষ পর্যন্ত তাদের দলটাকে ডুবিয়ে দিয়েছে।

যথেষ্ট কর্মশক্তির উৎস তৈরি

অল্পত্বেই ক্লান্ত হয়ে গেলে জীবনে সফল হওয়া বেশ কঠিন। আর তাই যথেষ্ট কর্মশক্তির উৎস তৈরি করা খুবই জরুরি। আমার দেখা সফলতার পথে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ভুল বা বাধা, এবং আমার ব্যবহৃত সেটাকে অতিক্রম করার কিছু উপায়। জেতার তীব্র ইচ্ছা থাকলে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়। নানান কারনে যেটা সত্য সেটা বলার মতো সুযোগ খুব কম বাংলাদেশী মানুষেরই থাকে। যদি মনে করেন আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সবই ভালো, কিছুই বদলানোর প্রয়োজন নেই, তাহলে ভিন্ন কথা।

 শারীরিক পরিশ্রমে ফিটনেস

সবাই ফিট হতে চায়। কেউ জিমে গিয়ে ভূড়ি কমাতে চায়। কেউ বা না খেয়ে। কিন্তু শুকনো বা মোটা দিয়ে ভূড়ি বা ফিটনেস কোনোটারই বিচার হয় না। একারণেই ভূড়িওয়ালা দেশী বডি বিল্ডার এর অভাব নাই। আপনি সুস্থ থেকে দিনের পর দিন কতটা শারীরিক পরিশ্রম করতে পারেন সেটার উপরও ফিটনেসের বিশাল প্রভাব রয়েছে। আপনি যত পরিশ্রম করবেন আপনার ভূড়িও পালাবে আর শরীরের ফিটনেস বা শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষমতাও তত বাড়বে।

পরিশ্রম করা অবশ্যই খুব আপেক্ষিক একটা হিসাব। সবাই পরিশ্রম করে। কেউ কম, কেউ বেশি। এতটুকুই সব পার্থক্যের কারণ। আমার কাছাকাছি ওজনের খুব কম মানুষই দিনে ৩২০০+ ক্যালোরি বার্ন করার মতো পরিশ্রম করে। কতখানি খাবারে ৩২০০+ ক্যালোরি হয় হিসাব করলে আপনি ভাববেন আমি সারাদিন শুধু খেতেই থাকি। কাজেই খাওয়া না কমিয়ে পরিশ্রম করা শুরু করুন। সাথে মন ভরে খেতে থাকুন। ভূড়ি আর খুঁজেও পাবেন না। আর আলসেমি করলে, শুধু জিম করে বা না খেয়ে কত দিন চলতে পারবেন? বেশিদিন না।

নেগেটিভ থেকেও পজিটিভ খোঁজা

জীবনে কিছু না কিছু নেগেটিভ জিনিষ ঘটবেই এটা নিশ্চিত ধরে নিলে সেগুলোর বিরূপ প্রভাব থেকে বেঁচে যাওয়া কিছুটা হলেও সহজ হয়ে যায়। আর পজেটিভলি ভাবলে প্রায় সময়েই সেই নেগেটিভ থেকেও পজিটিভ কিছু খুঁজে পাওয়া যায়। জীবনে জিততে হলে, বড় হতে চাইলে, বুকে সাহস থাকা লাগে। জীবন একটাই। অন্যের মোটিভেশন বাদ দিয়ে নিজের যা ইচ্ছে তাই করুন। সফল বিফল যাই হবেন নিজের ইচ্ছেতে হবেন। মানুষজন বাড়িয়ে বলতে বলতে আমাদের কালচারটা এমন হয়ে গেছে যে এখন সত্যিকার অর্থে বড় কিছু করলেও সেটা এই চাপাবাজির যুগে অর্থহীন মনে হয়। নীতিবান মানুষদের দেশে, দেশের উন্নতি হোক বা না হোক, আপনি নিজে কষ্ট করলে আপনার উন্নতি কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। আমার স্বাধীন ঠিকানা – কোন পরিমাণ অর্থ, ক্ষমতা, দুর্নীতি, অন্যায়, ডাকাতি দিয়েও এমন শান্তি ক্রয় করা অসম্ভব। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিল এই দেশটার, আমার ক্ষেত্রে সত্যি হয়ে গেল – সম্পূর্ণ সৎ, স্বাধীন, সন্মানজনক পথে।

প্রেক্ষাপট জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

প্রেক্ষাপট জীবনের জন্য সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমি যেখান থেকে শুরু করেছিলাম সেটা ছিল একটা স্বল্পোন্নত দেশ, আমার হাতিয়ার ছিল শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম, কোনদিন কারও ক্ষতি করিনি, কাউকে ধোঁকা দেইনি, এআইইউবিতে সেকেন্ড সেমিস্টার থেকেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে কোনদিন একটা টাকা নেইনি (পুরোটা সময় আমি ফুল স্কলারশিপ পেয়ে এসেছি), নিজের পারিবারিক যোগাযোগকে কোনদিন কাজে লাগাইনি, জীবনে কোন অসদুপায় অবলম্বন করিনি – এগুলোকে একসাথে একই প্রেক্ষাপটে ফেলার পর বুঝলাম যে মধ্য ত্রিশে আমি আজ যেখানে এসে পৌঁছেছি তা আমি কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি। যে লক্ষ্যে আমি পৌঁছেছি তা বিশেষ তো বটেই, তবে আমার কাছে তারচেয়েও বিশেষ অর্থবহ হল আমার যাত্রা। আমার জীবনের সকল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের, বিশেষ করে আল্লাহপাকের কাছে আমি চরমভাবে ঋণী। তাদের দোয়া ছাড়া আমি এতদূর পৌঁছাতে পারতাম না।

বেচেঁ থাকার সার্থকতা

আসলে সবাই যেভাবে চলে বা যা করে, প্রায়শই আমার দ্বারা সেটা হয় না। জানি না এটা আমার দুর্বলতা নাকি শক্তিমত্তা, শুধু জানি আমার যা ভালো লাগে, যা আমার কাছে অর্থবহ, যা করলে ভালো হবে মনে হয়, সেটা অন্যদের চোখে যতই উদ্ভট, ক্ষুদ্র বা তাৎপর্যহীন হোক না কেন, আমি সেটাই করি। কারণ উপরওয়ালাই আমাকে জীবনের প্রতিটি বছর, দিন, মুহূর্ত এই পৃথিবীতে বিচরণের সুযোগ দিয়েছেন, অন্যেরা নয়। তাই এই জীবন অন্যদের মতো করে নয়, বরং নিজের মতো করে কাটানোর চেয়ে বেশি অর্থবহ আর কি বা হতে পারে? এই জীবনের বহু কিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, কিন্তু সকল সীমাবদ্ধতা আর প্রতিকুলতার মাঝেই যে সত্যিকারের বিশেষ মুহুর্তগুলো তারই মাঝে বেচেঁ থাকার সার্থকতা।

 সফলতার সংজ্ঞা ঠিক করে নিন

আমাদের সবার জীবন ভিন্ন। আমরা জীবনে কে কি করতে চাই, কিভাবে বাঁচতে চাই, আমাদের সেই চিন্তাভাবনাও ভিন্ন। তাই যার যার সফলতার সংজ্ঞা তাদের নিজেদেরকেই ঠিক করে নিতে হবে। তবে সফল হওয়াটাই মুখ্য বিষয় না। তার চেয়েও জরুরী হচ্ছে নিজের ঠিক করে নেওয়া সফলতার পথে চলার সাহস রাখা। সেই পথে চলতে গিয়ে জীবনে বহু বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছি, বহুজনের বহু পথ নির্দেশনা পেয়েছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত শুধুই নিজের পথে চলেছি। এই চলার মধ্যে যে আনন্দ আছে, যে আত্মতৃপ্তি আছে, সেটা অন্যকে দেখে নিজের সফলতা নির্ণয় করে, বা অন্যের চোখে সফল হবার পিছনে ছুটে কখনোই পাওয়া যায় না।

অন্যের ক্ষতি না করে, কাউকে না ঠকিয়ে, ছোট না করে, আঘাত না দিয়ে, সততার সাথে নিজের পছন্দের পথে চলতে অনেক পরিশ্রম অবশ্যই করতে হয়। কিন্তু সেই সৎ পথে আমরা জীবনে যা কিছু করতে চাই, যেভাবে বাঁচতে চাই, তেমনটা করতে পারার সাধ্য, সামর্থ্য, স্বাধীনতা অর্জন করাই আমার কাছে সফলতা। যেমন অনেকের কাছে স্বাধীন দেশের পরাধীন নাগরিক হয়ে বেচেঁ থাকাও সফলতা। বা হয়তো টাকা থাকা মানেই সফলতা, যদিও পৃথিবীর প্রেক্ষাপটে তার মূল্য প্রায় শূন্য কারণ সেই টাকা সৎ পথে দেশের বাইরে ব্যবহারের স্বাধীনতা নেই বললেই চলে।

সেই দেশ থেকেই শূন্য হাতে শুরু করেও সেই সব সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে স্বাধীনভাবে পৃথিবীতে বিচরণের স্বপ্ন দেখেছিলাম। তার পরিবর্তে অন্যের নির্দেশিত সফলতার পথে হাঁটলে আজকে হয়তো খুবই নিরাশ হতাম। তখন অন্যকে অসফল বলে বা তাদের দোষ ধরে আমার কোনোই উপকার হতো না। কারণ আমার সফলতার সংজ্ঞা বা মূল্য শুধু আমার পক্ষেই উপলব্ধি করা সম্ভব। ঠিক তেমনি আপনি জীবনে কি করতে চান, কতটা স্বাধীনভাবে বাঁচতে চান সেই অনুযায়ী নিজের সফলতার পথ ঠিক করে নিন। সেই পথ যতই দুর্গম বা অসম্ভব মনে হোক, সাহস করে শুরু করলে একদিন ঠিকই সেই সফলতার দেখা পেয়ে যাবেন, ইনশাআল্লাহ্!

নিজের প্রতি মনোযোগ দিন

অন্যের কাজের ব্যাপারে জ্ঞান না দিয়ে নিজে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। নিজের ক্ষুদ্রতা উপলব্ধি করতে শিখুন। সবারই ভুলত্রুটি আছে, কিন্তু সেটা বিচার করার প্রয়োজন বা যোগ্যতা সবার নেই। কিন্তু নিজের ভুলত্রুটির দায়িত্ব একান্তই আপনার, তাই অন্যকে রেখে নিজের প্রতি মনোযোগ দিন! জীবনে ছোট বড় অর্জনের পিছনে পরিশ্রম করার মধ্যে রয়েছে অসাধারণ আনন্দ এবং সার্থকতা। কিন্তু কেন জানি আমাদের সমাজে আমরা নিজেদের আনন্দের চেয়ে অন্যদের কষ্ট দিতেই বেশি ব্যস্ত থাকি।

বিজয় উদযাপনের চেয়ে বিপক্ষকে হেয় করাতেই যেন যত আনন্দ। আবার বিপক্ষের বিজয়ীদের অভিনন্দন না জানিয়ে বরং সেটাকে ছোট করার প্রচেষ্টা। আমরা মনটাকে এতটুকু বড় করি যেন অন্যের অর্জনে সাধুবাদ জানাতে পারি। আর সেটা না পারলেও যেন অন্তত সেই অর্জনে ভুল খুঁজে অন্যকে আঘাত দেবার চেষ্টা না করি। মনে রাখবেন, অন্যের অর্জনে ত্রুটি ধরে, অন্যকে মন্দ বলে, কষ্ট দিয়ে, বা ছোট করার চেষ্টা করে কেউ কোনোদিন বড় হয়নি। সত্যিকার অর্থেই বড় হতে চাইলে অন্যের অর্জনের মধ্যে ত্রুটি না খুঁজে বরং নিজে আরও বড়, আরও নিখুঁত, আরও ভালো কিছু অর্জন করায় মনোযোগ দিন।

নিজের ভাললাগার কাজ এবং ভালবাসার মানুষদের নিয়ে ব্যস্ত থেকে সফলতার পথে হাঁটবেন, নাকি অন্যকে ঈর্ষা করে, ব্যাথা দিয়ে, ঘৃনা করে অন্ধকারে নিমজ্জিত হবেন? সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার! বেশ সহজ একটা ব্যাপার কিন্তু তারপরও অনেকেই জটিল করে ফেলেন। অন্যের ভুলের হিসেব নিয়ে ব্যস্ত থাকলে আপনার ব্যার্থতা নিশ্চিত। ইহকাল বা পরকাল, সফলতা চাইলে নিজের কাজে মনোযোগ দিন।

অন্যের উপকার করুন

জীবনে কিছু সফল মানুষের দেখা মেলে যারা কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করে না, কারণে বা অকারণে শুধুই অন্যের উপকার করে যায়। আমি নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করি বলেই কিনা জানি না, যারা নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাদেরকে আমি খুবই শ্রদ্ধা করি। আমার দেখা মতে তারা ভালো কিছু দেখলে সেটার কদর করে, সেখান থেকে ভালো দিকটা গ্রহণ করে নিজেদেরকে উন্নত করার চেষ্টা করে। অন্যের যা কিছু ভুল বা অযৌক্তিক মনে হয়ে সেটার পিছনে সময় ব্যয় না করে নিজেদের দুর্বলতা বা ভুল উপলব্ধি করার চেষ্টা করে। সেগুলো কাটিয়ে উঠে নিজেদেরকে এবং নিজেদের জীবনের মানুষগুলোকে ভালো রাখার পিছনে কাজ করে যায়।

সবচেয়ে অপ্রিয় মানুষ

একদল মানুষ আছেন যারা ভালো কিছু দেখলে বরং তারমধ্যেও দূরবীন লাগিয়ে ভুল খোঁজায় ব্যাস্ত হয়ে যান। তারা সম্ভবত নিজেদের বাদ দিয়ে অন্যদের ভুল ধরা নিয়েই জীবন কাটিয়ে দেন। এরাই হচ্ছেন আমার, এবং সম্ভবত সবারই, সবচেয়ে অপ্রিয় মানুষ।

বাবা-মাকে গর্বিত করুন

আমরা জানি আমাদের প্রত্যেকেরই নানান দোষত্রুটি, সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু তবু যদি আমরা নিজেদের উন্নতির প্রতি মনোযোগ না দিয়ে অন্যদের দোষ শুধরাতে সময় ব্যায় করি তাতে কখনোই আমাদের বাবা, মা, পরিবার আনন্দিত বা গর্বিত হবেন না। এই সহজ জিনিসটা অনেকেই ভুলে যান। অপরদিকে আমাদের সমাজের প্রতিটি মানুষ যদি তাদের বাবা-মা গর্বিত হবেন এমন পথে চলতে শুরু করেন তাহলে আমাদের সমাজটা নিমিষেই আরও অনেক ভদ্র, সদয়, সুন্দর হয়ে যাবে। কাজেই আসুন প্রথমে আমরা নিজেদের নিকটজনদের পছন্দের মানুষ হই, নিজেদের বাবা-মা, পরিবারকে ভালো রাখি, সুখে রাখি, আনন্দ দেই, গর্বিত করি।

টাকাই সব কিছু না

অনেকেই মনে করেন টাকা মানেই শান্তি। যত বেশি টাকা থাকবে ততই বেশি শান্তির কাছাকাছি পৌঁছে যাবেন। তাই আশেপাশের মানুষ কিংবা সমাজের শান্তি, এমনকি নিজের শান্তি নষ্ট করে হলেও দিন রাত টাকার পিছনে দৌড়ান। এমন চিন্তার সমস্যা হল প্রাচুর্যের কিন্তু কোন শেষ নেই – আপনার যতই টাকা থাকুক, আরেকজনের আরো বেশি আছে। তাই এভাবে চিন্তা করলে কখনোই শান্তির দেখা মেলা সম্ভব না। আর আসলেই যদি শুধু টাকা থাকলেই মানুষ শান্তির দেখা পেত তাহলে যাদের যথেষ্ট টাকা রয়েছে তারা তবু অন্যায় পথে মানুষের ক্ষতি করে হলেও আরো বেশি টাকা আয়ের চিন্তায় ব্যাস্ত থাকতো না। বরং টাকা তাদেরকে শান্তি দেয় না বলেই তারা ভাবেন আরো বেশি টাকা হলেই হয়তো শান্তির দেখা মিলে যাবে। কিন্তু তাই কি আর হয়? হয় না।

টাকা মানেই শান্তি – এমন চিন্তা আমাদের সমাজের গরীব থেকে ধনী, সবার মধ্যেই বিদ্যমান। আর এই কারণেই ধনীরা আরো বেশি টাকার পিছনে দৌড়ে গরিবদের আর্থিক কষ্ট আরো বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ধনী আর গরীবের তারতম্য দিনদিন শুধু বেড়েই চলেছে। কাজেই গরিবদের আর্থিক কষ্টের কারণও কিন্তু সেই ধনীদের টাকাকে শান্তির চাবিকাঠি ভাবা। কেউ হয়তো বলবেন আমার টাকা আছে তাই আমি এমন বলছি। কিন্তু যখন চরম আর্থিক কষ্টে ছিলাম তখনও আমি টাকার সাথে আনন্দ বা শান্তির সম্পর্ক খুঁজে পাইনি। অনেকেই দামী জিনিসপত্র শো অফ করে আনন্দ খোঁজার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমি দামের মধ্যে আনন্দের কিছু দেখি না। বরং সেই টাকায় আর্থিক কষ্টে থাকা কিছু মানুষের সুবিধার ব্যাবস্থা করে আরো অনেক বেশি আনন্দ পাই।  অথবা ভাল লাগার জন্যে দামী স্বর্ণের চেইন পড়তে হয় না। বরং প্রিয় মানুষের নিজ হতে তৈরি এমন উপহার অনেক গুণ বেশি আনন্দ দেয়।

তারপরও কিছু মানুষ যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করবেন যে টাকা না থাকলে আনন্দ বা শান্তি থাকে না। আমি বাজী ধরে বলতে পারি টাকা থাকলেও এমন মানুষেরা সত্যিকারের আনন্দ বা শান্তি কি সেটা কখনোই জানবেন না। তারা বলবেন জীবনে যেহেতু টাকার প্রয়োজন আছে কাজেই টাকাই সব। সেই হিসেবে জীবনে ঘুমেরও কিন্তু খুবই জরুরী প্রয়োজন রয়েছে। তার মানে কি ঘুমানোই জীবন? মোটেই না, ঘুম শুধুই জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মাত্র। মূল সমস্যা হল এমন এক্সট্রিম চিন্তাভাবনা – হয় টাকাই জীবনে সব আর নাহলে নিশ্চয় সন্ন্যাসী হয়ে টাকা ছাড়াই বাঁচতে হবে। এমন চিন্তাই প্রমাণ করে এদের জীবন কতটা টাকা কেন্দ্রিক। টাকা দিয়ে জীবন পরিমাপ না করা, বা টাকাই সব কিছু না – এই সহজ ব্যাপারটা বোঝার ক্ষমতা আমাদের দেশের মানুষদের থাকলে বাকিদের আর্থিক কষ্ট অনেকটাই কমে যেত। তাই এখন থেকে টাকাই সব ভেবে টাকার পিছনে দৌড়ে বেচে থাকার চেয়ে বরং বেচে থাকার জন্যে টাকা ব্যাবহার করতে শিখুন। শেষ পর্যন্ত জীবনে আনন্দ আর শান্তির স্থান টাকার চেয়ে অনেক অনেক উপরে।

পাপ কামাই করবেন না

ধর্মে বিশ্বাস করি মানেই আমার সব কাজ সঠিক, এমন মোটেই নয়। আমি মানুষ, আমার অনেক ভুল ছিল, আছে, থাকবে। কিন্তু অন্যের জীবনে সে কি করলো সেটা নিয়ে কাউকে বিচার করিনি। তার ভুলের হিসাব তাকেই দিতে হবে, আর আমারটা আমাকেই। অন্যকে গালাগালি করে আমার শুধুই ক্ষতি হবে। নিতান্তই একদম নির্বোধ না হলে কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মুসলমান নিশ্চয়ই অন্যকে গালাগালি বা এমনকি ব্যাথা দিয়ে কিছু বলে অযথাই পাপ কামাই করবেন না।

নিজের মতো করে সুখী হোন

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজের যা ভালো লেগেছে, যা করে আনন্দ পেয়েছি, সেটাই করেছি, সেই পথেই হেঁটেছি। অন্যের চোখে বড় হবার সামান্যতম কোন প্রয়োজন অনুভব করিনি। নিজের পথে চলেও বাকিদের মতোই অনেক বিপদের সম্মুখীন হয়েছি, সমস্যার মোকাবেলা করেছি, এখনও করছি। কিন্তু তবু নিজের মতো করে সুখী হবার যে পরিপূর্ণতা সেটা অন্যের চোখে সফল হয়ে পাওয়া অসম্ভব। তাই কখনো বলি না আমার পথটাই সেরা, বা অন্য কারোর আমার মতো করে কিছু করার প্রয়োজন আছে। যার যা ভালো লাগে সেটাই করা উচিত, শুধু তাদের সাধ্যমত করা উচিত, এতটুকুই।

দুঃসময়ে পাশে থাকাদের কদর করুন

জীবনে যাই করবেন সেটাতেই না বুঝেই ভুল ধরার, বাধা দেবার, বা সমালোচনা করার মানুষের অভাব নেই আমাদের সমাজে। অথচ সেই মানুষগুলোই হয়তো আপনার জীবনে কখনোই কোনো অবদান রাখেনি। তবুও আপনাকে ‘শুধরাতে’ না পারলে যেন তাদের জীবন ব্যর্থ! কিন্তু আপনার দুর্দিনে বা যখন আপনি কোন সমস্যার সম্মুখীন হবেন, তখন এদের মধ্যে থেকে খুব কম মানুষকেই পাবেন সত্যিকারের সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে আপনার পাশে দাঁড়াতে।

তাই যারা ভালোর পরিবর্তে মন্দ বলতেই বেশি ব্যস্ত থাকে, তাদেরকে জাহান্নামের জন্যে আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকুন। অন্যকে মিথ্যে অপবাদ দেয়া, গালাগালি করা, এমন নিচু মনের মানুষেরা জীবনে কখনোই আপনার বা কারোরই কোনো উপকারে আসবে না। আসলে জীবনে যখন কঠিন বিপদ আসে তখনই শুধু মানুষের সত্যিকারের পরিচয় পাওয়া যায়। তাই দুঃসময়ে যে বা যারা পাশে থাকে তাদের কদর করতে যেন কখনোই ভুলবেন না।

তথ্যসূত্র

www.facebook.com/zaheed

https://www.youtube.com/ZaheedSabur

twitter.com/ZaheedSabur

poribar.net

www.bbc.com/bengali

www.prothomalo.com

www.google.com

priyolekha.com

bangla.bdnews24.com

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top