আঁচল আর্লি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড ডে কেয়ার সেন্টার : কর্মজীবী মায়েদের আশার আলো

চাইল্ড-কেয়ার সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য, যা কর্মজীবী মায়েদের আশার আলো। উচ্চ থেকে নিম্নবিত্ত সবার জন্যই শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র প্রয়োজন। দেশে একক পরিবার বেড়ে উঠছে। সন্তান কোথায় থাকবে, এ সমস্যায়ই শিক্ষিত হয়েও একজন নারী চাকরি করতে পারছেন না। কর্মজীবী নারীর স্বাচ্ছন্দ্যের কথা চিন্তা করেই শিশুর দ্বিতীয় বাড়ি খোলার বিষয়টি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে কর্মজীবী নারীরা কর্মক্ষেত্রে মনোযোগ সহকারে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

 বর্তমান সময়ে অনেক মা-বাবা ব্যস্ততার কারণে শিশুকে সময় দিতে পারেন না। গৃহকর্মী সংকটে কর্মজীবী ও ব্যস্ত মা-বাবারা দিশাহারা থাকে। সন্তানকে অশিক্ষিত আয়া বা গৃহকর্মীর কাছে রেখেও অন্তহীন দুশ্চিন্তায় ভোগে। সন্তানের দেখাশোনা, গোসল, খাওয়া, ঘুম, পড়াশোনা, হোমওয়ার্ক নিয়ে ভাবনার যেন অন্ত নেই।

ইনডোর খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন, আঁকা, গান না শেখানোয় বাচ্চারা নিঃসঙ্গ বোধ করে। বাচ্চার দেখভালে নিশ্চিন্ত না থাকায় কর্মক্ষেত্রে টেনশন ফ্রি কাজ করতে পারে না। সারাদিন বাসায় একাকিত্বে নিঃসঙ্গ বাচ্চা মানসিক বিকাশে পিছিয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে লোভনীয় চাকরি ছেড়ে গৃহবধূ হয় উচ্চশিক্ষিত অনেক মায়েরা। নিউক্লিয়াস পরিবারে দাদা-দাদী বা নানা-নানী না থাকায় সন্তানের দেখভাল বড় চ্যালেঞ্জ।

বাচ্চার বিকাশের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, আনন্দময় সময় ও মেধার সুষ্ঠু বিকাশের আয়োজন, শিশুর রঙিন আর সম্ভাবনাময় শৈশবের নিশ্চয়তা, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাচ্চাদের তত্ত্বাবধান, প্রশিক্ষিত লোকজনের দেখাশোনায় সঠিক পরিচর্যা ও আনন্দের সাথেই প্রি-স্কুলিংটাও হয়ে যাওয়ার সুবিধা থাকা নানা বিবেচনায়ই গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুর উজ্জল ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাচ্চার সাইকোলজিক্যাল, ল্যাঙ্গুয়েজ ও ইমোশনাল ডেভেলপমেন্ট যেন ঠিকমতো হয় সে বিষয়গুলো নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকা দরকার। বাচ্চাকে আচার-ব্যবহার শিখানো, সুন্দর করে কথা বলা শিখানো, শুদ্ধ উচ্চারণ শিখানো, অক্ষর ও সংখ্যা পরিচিতিসহ কবিতা, ছড়া ইত্যাদি শেখানোসহ অন্যদের সাথে শেয়ার করার মানসিকতা তৈরি করা প্রয়োজন।  সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে মানসিক লেনদেন হওয়ায় শিশুর মানসিক বিকাশ দ্রুত হয় এবং শিশু দ্রুত সব কিছু শিখে নেয়।

কতগুলো বাচ্চা যখন একসাথে এক টেবিলে খেতে বসে, হাসতে-খেলতে কখন খেয়ে ফেলে তা টেরই পায় না। বিভিন্ন বয়সী বাচ্চা একজনের দেখাদেখি আরেকজন পড়তে উৎসাহী হয়। নিজেদের মধ্যে লেনদেন শেখে, আচরণ শেখে, বন্ধুত্ব শেখে, বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে রাগে-অভিমানে, ঝগড়া-আপসে বাঁচতে শেখে এবং সামাজিক দক্ষতা বাড়ে। একটি শিশুর সামাজিকতা এবং ব্যক্তিত্ব গঠনের জন্যও অনেক সহায়ক হয়। শিশু অন্য শিশুর সঙ্গে মিশতে শিখে, শিশুর সামাজিকীকরণ ত্বরান্বিত হয়।

বাড়িতে বাচ্চাকে রেখে অফিসে গিয়ে শান্তি পান না মা। মনটা পড়ে থাকে বাসায়, অফিসে এসেও কাজে মন দিতে পারে না। ঠিকমতো কাজ করতে পারে না সন্তানের কথা ভেবে। কাজের মেয়ের কাছে তার বাচ্চাটি কেমন আছে? ঠিকমতো দেখেশুনে রাখছে তো? মারধর করছে না তো কিংবা বকাবকি? ঠিক সময়ে খাবার খেতে দিচ্ছে তো? নাকি বাচ্চাকে চুরি করে নিয়ে গেল? এ রকম অনেক রকম প্রশ্ন ভিড় করে তার মনে। আর নানা শঙ্কায় ছেয়ে যায় হৃদয়।

বাড়িতে ছোট শিশুর যখন তখন বিপদ হতে পারে। বাড়ির আশপাশে পুকুর, ডোবা থাকলে তো কথাই নেই। শাহজাহানপুরের ছোট শিশু জিহাদের কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। এ ছাড়া চুলার আগুন, গরম পানি, ধারালো জিনিস ইত্যাদি থেকে পদে পদে বিপদের সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাই শিশুকে সার্বক্ষণিক একজন বিশ্বস্ত মানুষের তত্ত্বাবধানে রাখতে পারলে সবচেয়ে নিরাপদ থাকা যায়। কিন্তু এ যুগে চাইলেই একজন বিশ্বস্ত কাজের মানুষ পাওয়া মুশকিল। অনেক মা আছেন এসব নানা চিন্তা করে চাকরিটাই ছেড়ে দেন।

চাকরিজীবী মায়েদের মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে আবার অফিসে ফেরার পর সবচেয়ে বড় বেশি দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়ায় তার কোলের ছোট্ট বাচ্চার যত্ন এবং নিরাপত্তা নিয়ে। একদিকে অফিস আর অন্যদিকে তার আদরের ছোট্ট বাচ্চাটি। এসব নিয়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাকে। আর এসব মায়ের কথা চিন্তা করেই সাভারে গড়ে উঠেছে আঁচল আর্লি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড ডে কেয়ার সেন্টার।

আপনি কী চাকরিজীবী মা? কর্মজীবী মা? উদ্যোক্তা মা? নাকি গৃহিণী মা? সাভারের সকল মা’দের  জন্য সুখবর আঁচল আর্লি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড ডে কেয়ার সেন্টার! যেটি বর্তমান সময়োপযোগী উপায়ে বাচ্চা লালন-পালন করতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে রয়েছে অভিজ্ঞ আর্লি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট মনিটরিং কমিটি, শিশু ডাক্তার, শিশু মনোবিজ্ঞানী এবং দক্ষ  যত্নকারী। এখানে শিশুদের প্রারম্ভিক বিকাশ, বয়সোপযোগী পরিচর্যা, বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে সেন্সরিমোটর ফাংশন (মেধাবিকাশে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়) অ্যাক্টিভ করা, শিশুর দৈনন্দিন কাজে সুশৃঙ্খলা, সঠিক সামাজিকীকরণ সংক্রান্ত দক্ষতা উন্নয়নে  বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।

শিশু যদি হয় স্ক্রিন আসক্ত, অতিরিক্ত চঞ্চল, রাগী, জেদি, স্পিচ ডিলে বা দেরিতে কথা বলে, পড়াশুনায় অমনোযোগী  তাহলে অবশ্যই আঁচল সেন্টারটিতে আসার বিশেষ পরামর্শ রইলো। এছাড়া মায়েদের জন্য থাকছে প্যারেন্টিং ক্লাসের বিশেষ ব্যবস্থা। শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশে সপ্তাহে ১ দিন হলেও সেন্টারে আসতে পারেন এই সেন্টারে। শিশুর জন্য প্রাথমিক বিনিয়োগ এর কোনো বিকল্প হয় না। যোগাযোগ – ব্যাংক কলোনি (সাভার ল্যাবরেটরি স্কুলের পাশে) 01911659151, 01913143582

লেখক: ইসরাত জাহান সুমি, পরিচালক, আঁচল আর্লি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড ডে কেয়ার সেন্টার

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top