বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো পরিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে পারেনি। ব্যর্থ হয়েছে রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা দেখাতে। পারেনি সংযত হতে, গণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলতে, সাংবিধানিক আচার-আচরণ রপ্ত করতে। ফলে রাজনৈতিক সংকট নানান ধরণের মানবিক সংকট তৈরি করছে।
গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে পেশিতন্ত্রের উত্থান
এই দেশে যখনই গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে গুমতন্ত্রের আর পেশিতন্ত্রের উত্থান হয়েছে তখনই আতংকিত হয়ে পড়ছে দেশের সকল স্তরের মানুষ। যেহেতু রাজনৈতিক সংস্কৃতিই দেশজ সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটায়, লালন করে, বিস্তার ঘটায় এবং নিয়ন্ত্রণ করে। সেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির যে অনাকাংখিত বৈশিষ্ট্যগুলো উন্নয়ন অগ্রগতির ক্ষেত্রে চরম প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে তার নেতিবাচক প্রভাব জনগণের মাঝে রীতিমত আশংকার সৃষ্টি করছে।
বিরোধীদের সবসময় দোষারোপ করা
বিরোধীদের ভালো কাজকেও মন্দ হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বিরাট বাধাঁরই সৃষ্টি করে। তথ্য প্রমাণ ছাড়াই অঘটনের জন্যে প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করার মাধ্যমে একের বিরুদ্ধে অপরকে উস্কে দেয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা ছাড়া কিছু হয়না। অথচ একের পর এক আত্মসমালোচনার পথে না যেয়ে নানান ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে দেখা যায়। সহনশীলতা ও সৌজন্যতাবোধ যেন বিদায় নিয়েছে রাজনৈতিক ময়দান থেকে।
প্রতিপক্ষকে শত্রু ভেবে দমন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংঘাত ও সংঘর্ষ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় প্রতিপক্ষকে শত্রু ভেবে দমনের একটি প্রবণতা রয়েছে। এক্ষেত্রে সাধারণত অধিকাংশ সময় ক্ষমতাসীনেরাই বিরোধীদের ওপর আগে চড়াও হয়। গুম-হত্যা-আগুন-অপহরণ-সন্ত্রাস-দুর্নীতি-নির্যাতন-মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সাথে রাজনীতির জটিল সম্পর্ক রয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষী বানানোর অভিপ্রায়ে অপরাধ সংঘটিত করে অপরের ওপর চাপায়ে দেয়ার একটি মারাত্মক প্রবণতা রয়েছে।
নতুন নতুন ইস্যু তৈরি
রাজনৈতিক স্বার্থে জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে প্রয়োজনে নতুন ইস্যু তৈরি করা হয়।রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক খেলার মাঠে মানুষের প্রাণ তুচ্ছ খেলনায় পরিণত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক নেতৃবৃন্দের কর্মকান্ড এমন পর্যায়ে পৌছায় যে তারা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী ছাড়া নিজেদের জানমালকে অনিরাপদ মনে করে। আশঙ্কা করা হয়, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দেশটি অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হতে পারে।
রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতায় অপরাধ
একটু গভীরভাবে দেখলে স্পষ্ট হবে যে, চোর-ডাকাত-ছিনতাইকারী-জোরজবরদস্তি করে জমিজমা বা সম্পদ দখলকারী, চোরাচালান কারবারী, অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্তরা কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক কোনো নেতার পৃষ্টপোষকতা পেয়ে থাকেন।ক্ষমতাধরদের জন্যে মাসোহারা-উপহার-উপটৌকন-ঘুষ দেয়াটা এখন অনেকটা স্বাভাবিক ব্যাপার ।
দলীয় পূজা আর অন্ধ আনুগত্য
অপরাধী কিংবা ভিকটিমদেরকে একটু নিরপেক্ষতার সাথে বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- তাদের সাথে আই ন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর করা আচরণ রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন রকমের হয়। কোনো মানুষই ভুল ত্রুটির উর্ধ্বে নয় অথচ নিজ রাজনৈতিক দলের নেতিবাচক কর্মকান্ডের সমালোচনাও অনেকে পরিহার করেন। দলীয় পূজা আর অন্ধ আনুগত্য দলের সব সিদ্ধান্ত ও কাজকে সঠিক মনে করতে ভুমিকা রাখে। নিজ দলকে বিতর্কের উর্ধ্বে তুলতে যেয়ে রাজনীতিবীদ নেতাকর্মীগণ অনেক সময় রাজনৈতিক অঙ্গনকেই কলুষিত করে ফেলেন।
ক্ষমতাসীনদেরই স্বার্থরক্ষা
বিভিন্ন সরকারের আমলেই দুঃখজনকভাবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দানে নিয়োজিত আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীই বিরোধীদল দমনের অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত হয়। স্বার্থ হাসিল ও সুখ প্রাপ্তিই যেখানে মূখ্য সেখানে স্বার্থগত কারণেই সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি ব্যাহত হওয়াটাই স্বাভাবিক। যেকোনো সভ্য দেশেই আইন ব্যবস্থা শুধুমাত্র ক্ষমতাসীনদেরই স্বার্থরক্ষা করলে তা হয়ে ওঠে রীতিমত বিপদজনক। পুলিশের ভূমিকা হতে হবে রক্ষাকারীর। কিন্তু বিরোধী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ যেভাবে সংঘর্ষে জড়ায় তাতে মনে হয় না যে, সংকট সুরাহা সম্ভব।
দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্র
দেশের স্বার্থ রক্ষা ও জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যেই যদি রাজনীতি পরিচালিত হতো তবে দলীয় কোন্দল, নেতৃত্বের বিরোধে উন্নয়ন ব্যাহত হবার প্রশ্নই তৈরি হতো না। দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্র শক্তিশালী করণে রাজনৈতিক দলগুলো সর্বশক্তি নিয়োগ করলে জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন স্বপ্নই থেকে যাবে। সত্যিকারার্থে দেশপ্রেমিক, মানবপ্রেমিক ও নৈতিক দৃঢ়তাসম্পন্ন নেতৃত্ব ছাড়া রাজনীতিতে ব্যাবসায়ীদের প্রাধান্য যতই বাড়ুক, ধর্মের ব্যবহারও যতই বাড়ুক তাতে কোনো লাভ হবে না।
তোষামদি ও চাটুকারিতা
কোনো দেশে বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডকে বৈধতা দানে স্পষ্ট হয় সে দেশে সব কিছুর দাম বেড়েই চললেও দাম কমে শুধুমাত্র মানুষের। ক্রসফায়ার, অপহরণ, গুম, হত্যা, ধর্ষণসহ মানবাধিকার লংঘনের মতো জঘন্য কর্মকান্ডের সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্পৃক্ততা দেশকে একটি অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিণতির দিকেই নিয়ে যায়। রাজনীতিবীদ নেতাদের তোষামদি ও চাটুকারিতা এত বেশি বেড়েছে যে লজ্জা শরম মুক্ত হয়ে অনেকে ব্যক্তিত্বহীন মানুষের কাতারে যুক্ত হয়েছেন।
কালো টাকা ও পেশী শক্তি
টাকার বিনিময়ে নমিনেশন দেয়া-নেয়ার চর্চা হলে রাজনীতিতে টাকাই মূখ্য হয়ে ওঠে। কালো টাকা ও পেশী শক্তিই রাজনীতির মূল নিয়ামক উপাদান হলে ক্ষমতার অপব্যাবহার বাড়ে। ক্ষমতাসীন দলগুলো ক্ষমতার পালা বদলের সাথে সাথে আচরণ ও কর্মকান্ড পাল্টে ফেলে। সরকার ও বিরোধী দলের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ মাঠগরম করার অশুভ রাজনীতিকেই আমন্ত্রণ জানায়।
সন্দেহ ও অবিশ্বাসের মাত্রা প্রবল
রাজনীতির ময়দান থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সৌজন্যতা। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাসের মাত্রা প্রবল। কারো যদি সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের মানসিকতাই না থাকে, সমালোচনার নামে দায়িত্বজ্ঞানহীন অপপ্রচারের আত্মঘাতি প্রবণতা বেশি মাত্রায় থাকে তবে তিনি রাজনীতিতে আসেন কেন? অন্য কোনো পেশায় যেতে পারেন। সেবার নেশা না থাকলে রক্তের কিংবা টাকার নেশা থাকলে তার রাজনীতিতে আসাটাই উচিত নয়।
রাজনৈতিক প্রবণতাসমূহ বিশ্লেষণ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রবণতাসমূহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অস্থিরতা, অসহিষ্ণুতা, অরাজকতা, দ্বন্ধ-বিদ্বেষ যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। কপটতা, সঙ্কট, ভাবাদর্শের সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মকে ব্যবহার করে উত্তরাধিকারের রাজনীতি হচ্ছে। ব্যক্তি প্রাধান্য, মৌল সমস্যার অনুপস্থিতি, নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, যুদ্ধংদেহী মনোভাব/মাস্তানবাদ, স্ববিরোধিতা দেখা যাচ্ছে। জাতীয় ঐক্যমতের সংকট, আকাশ কুসুম বিপ্লবের বাণী, বিরোধিতা অশনি বার্তা বয়ে আনছে। ছাত্র সংগঠনের প্রাধান্য, বাম রাজনীতির গতিশীলতা ও ডানপন্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ্যাত্ব চরম বাস্তবতা হয়ে দাড়িয়েছে।
যাকে গালি তাকেই ভোট!
অনেকে দলীয় বিবাদের বাইরে থাকতে মুখে নিরপেক্ষতার কথা বলে নৈতিক বিতর্কের বাইরে অবস্থানের চেষ্টা করেন এটা যেমন সত্য তেমনি অনেক সাধারণ জনগণ রাজনৈতিক নেতাদের দোষারোপ করাকে অভ্যেসে পরিণত করেছেন। সমাজের অনেক মানুষ আড়ালে যাকে গালি দেন, যার সমালোচনা করেন কোন এক অজানা স্বার্থে তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন।
একজন মানুষ কোনো রাজনৈতিক নেতাকে তার বাপ মা তুলে গালাগাল করছেন আবার তাকেই মুখোমুখি হলে সালাম দেন, কদর করেন, গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। ক্ষমতায় সমাসীন কোনো নেতা যতটা প্রশংসা শুনেন ক্ষমতা হারানোর পর ততটাই নিন্দা শুনেন। তেলে মাথায় তেল দেয়া আর সামান্য প্রাপ্তির আশায় সাদাকে কালো আর কালোকে সাদা বলার যে খারাপ চর্চা দেখা যাচ্ছে তা মোটেই ভালো কোনো লক্ষণ নয়।
স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ ও অগণতান্ত্রিক পন্থা
একদিকে গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে রত দলের ভেতরে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ চলে আর অন্যদিকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতার মসনদে আরোহনের প্রচেষ্টা চলে। কয়েক ধরনের চামচাদের আবির্ভাব দেখা যায় যারা স্বার্থের প্রয়োজনে সুবিধাবাদি নীতি গ্রহণ করে। আজ যার সাথে বন্ধুত্ব করে কাল তারই সাথে শত্রুতা করে। পাতি নেতারা নেতার অনুগত থেকে দালালি করতে যেয়ে নিজের রুচি-ব্যক্তিত্বকেও বিসর্জন দিতে দ্বিধা করে না।
সরকারী দলের গুণকীর্তন
রাষ্ট্রের সেবায় নিয়োজিত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোন দলীয় সরকারের সময়ে নিয়োগ পেয়েছে তা বিবেচনা করে সেই দলের গুণকীর্তনে নিয়োজিত হন আর অন্য দলগুলোকে অপছন্দ করে যাবতীয় কাজ করেন। অথচ দেশের চেয়ে দল বড় হয়ে ওঠতে পারে না। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি দলীয় বিবেচনা অতিমাত্রায় শক্তিশালী হয়ে ওঠে তবে ন্যায়বিচার ও মানবধর্মের মৃত্যু ঘটে। জাতির সেবক দলীয় সেবক হয়ে গেলে তা জাতির জন্যে অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়।
রাজনৈতিক সমর্থন বিবেচনা
গণতন্ত্রের মহিমায় জনকল্যাণ ধারণাটি সরকারের কর্মসূচিতে ঢুকলেও জনসংখ্যা ও অভাবগ্রস্ত মানুষদের সংখ্যার তুলনায় জনসেবার পরিকাঠামো ও অর্থব্যয় এখনও অতি সামান্য। অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ খাতেও অর্থব্যয় করতে সরকার কখনো কখনো অনিচ্ছুক আবার কখনো কখনো অপারগ।
অভাবের দেশে সকল নাগরিককে সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী প্রাপ্য না দিয়ে যদি কে কে সেবা বা সহায়তা পাবে তা রাজনৈতিক সমর্থনের বিবেচনার দ্বারা নির্ণীত হয় তবে তা মোটেই আইনগত বৈধতা পাবে না। কিন্তু যখন শক্তি ও ক্ষমতা আইন বাস্তবায়ন-প্রয়োগ-প্রণয়নের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে তখন ন্যায়-নীতি হেরে যায় যা মারাত্মক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
দালাল ও চামচাদের সুবিধাদান
সমাজের উঁচু স্তরেও নীতিবিহীন কাজ যথেষ্ট চলে, উচুঁস্তরের মানুষদের সাথে দালাল ও চামচাদের মাধ্যমে নীচুশ্রেণীর মানুষদের সম্পর্ক স্থাপিত হয়। অবশ্য এক রাজনৈতিক দলের লোক অন্য দলের লোকের সাথেও আত্মিয়তা করায় পারস্পরিক সুবিধাদানের রাজনীতি দেখা যায়। কেউ অর্থশক্তি দিয়ে আবার কেউ পেশি-শক্তি দিয়ে নিজের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা জাহির করেন, অনেকে নিজের অবৈধ পথে অর্জিত অর্থ কিংবা কোনো জাগতিক অর্জনকে নিরাপদ করার অভিপ্রায়ে বিরোধী মতের পরিবারের সাথেও আত্মিয়তার সম্পর্ক জুড়েন।
প্রভাব বিস্তারে ভীতি সৃষ্টি
প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের প্রয়োজন হয় রাস্তার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের, নির্বাচনে সময় কেবল নয়, ক্ষমতা সংগ্রহ ও ব্যবহারের প্রাত্যহিক ক্ষেত্রে৷ আবার দালাল -চামচাদের লোক জড়ো করার ক্ষমতা যতই থাকুক কিংবা গুন্ডা-মাস্তান-বখাটেদের সাধারণ মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি করার শক্তি যতই থাকুক- সেগুলি প্রয়োজন হয় নেতাদের প্রভাব বিস্তারের স্বার্থেই ৷
আন্দোলন সংগ্রাম যদি দেশ গড়ার কাজে না লাগে বরং সস্তা জনপ্রিয়তা পেয়ে নেতারা যদি নিজেদেরর নৈতিক ক্ষতিসাধন করে, অন্তর্দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে দলের ক্ষতি করে কিংবা প্রতিপক্ষ দলের বিরোধিতা করতে যেয়ে দেশের ক্ষতি করে তবে এসব অর্থহীন হয়ে পড়ে।
ক্ষমতার রাজনীতিতে সংকীর্ণতা
অতীত থেকে বর্তমানেও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা ক্ষমতার সুযোগ নিয়ে আরো ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন পট পরিবর্তনের ফলে সুযোগ-সুবিধা প্রার্থীদের মধ্যে স্বার্থের সম্বন্ধ -বন্ধন আরও জোরদার হতে থাকে যা অনেক সময় রাজনৈতিক আদর্শ বন্ধন কেউ ছাড়িয়ে যায়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি ভালো উদ্যোগ নিয়ে সৎ প্রতিযোগিতা হতো তাহলে ভালো হতো । কিন্তু সংকীর্ণতা সৃষ্টি করে সীমাবদ্ধতা আর তৈরি করে দ্বন্দ্ব।
ভোটের রাজনীতিতে ভোটই সব
ভোটারগণ ভোটের রাজনীতিতে ভোটের সময় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠলেও নির্বাচনের পরে নির্বাচিতরা গরিব ভোটারদের কথাটা আর ভাবার দরকার মনে করে না। গরিব মানুষেরা সবসময় স্বেচ্ছায় এই ঘৃণ্য ব্যবস্থার অংশীদার হয় না, তারা অনেক সময় বাধ্যও হয়। চরম রাজনৈতিক অস্থিরতায় তৈরি বৈরী পারিপার্শ্বিকতায় অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকে দেশের মানুষ। সংকটময় পরিস্থিতি ও অনিরাপদ ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় থাকে সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষেরা।
নিরাপত্তাহীনতায় আতঙ্কজনক পরিস্থিতি
নূন আন্তে যাদের পান্তা ফুরায় তারা শুধু নয় আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ভালো না থাকলে বড়লোক উদ্যোক্তাদেরও অতিরিক্ত ঝুঁকি বাড়ে। যদি আইন শৃঙ্থলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তবে জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তাহীনতার সংকট তৈরি হয়। বিনিয়োগকারীরা যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তবে সব ধরনের ব্যবসা বাণিজ্য শ্লথ কিংবা অচল হয়ে পড়ে। সহিংস ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন থাকে সব শ্রেণী পেশার মানুষই। রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে সরকার ও বিরোধী দলের আপোসহীন মনোভাব ও বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে বাড়ে উৎকণ্ঠা; যা আতঙ্কগ্রস্ত ও হতাশ করে ফেলে শান্তিপ্রিয় দেশবাসীকে।
ধ্বংসাত্মক ও সহিংস কর্মসূচি
দেশের সচেতন মানুষ ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কখনই সমথন করে না। শান্তিপূর্ণভাবে জীবন পরিচালনা ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান করতে শান্তিপূর্ণ উপায়েই রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন হওয়া দরকার। দেশের উন্নয়ন ও মানুষের উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে গণতান্ত্রিক সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন। সহিংস কর্মসূচির ফলে বাড়ে চরম হতাশা, স্থবির হয়ে পড়ে উৎপাদন, বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠান যাতে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। সংঘাত ও সংঘর্ষের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দেশকে ক্রমান্বয়ে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যায়।
সংঘাতময় রাজনীতি
কোনো দেশেই জনসাধারণকে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি করে রাজনীতিবীদ নেতারা স্বস্তিতে থাকতে পারে না। সংঘাতময় রাজনীতির আশংকায় অর্থনীতি হয়ে পড়ে স্থবির, বিনিয়োগ হয় বাধাগ্রস্ত, প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে পড়ে নেতিবাচক প্রভাব, শিল্পোৎপাদন হয় ব্যাহত,রফতানি খাতে ঘটে বিপর্যয়, ব্যাংকিং ব্যবসাতে হয় নৈরাজ্যের সৃষ্টি, বীমা ব্যবসাতে ধস নামে, শেয়ার বাজারেও পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। এভাবে চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতি হয় নিম্নমুখী, নেতিবাচক প্রভাবে দেশের কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জন হয় বড় চ্যালেঞ্জ। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশের মাটি ও মানুষের স্বার্থে একসঙ্গে বসে সংকট সমাধানের লক্ষ্যে গ্রহণযোগ্য পথ খুঁজে বের করতে হয়।
অশান্তিপূর্ণ ও অস্থিতিশীলতা
জনগণ চায় শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল দেশ। অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, গোটা অর্থনীতিকে গভীর সংকটে ফেলে কোনোদিনই জনগণের ভোগান্তি ও জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির লাগামকে টেনে ধরা যাবে না। হরতাল-অবরোধ-ভাঙ্চুর কখনই প্রতিবাদের একমাত্র যৌক্তিক ভাষা হতে পারে না।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্নীতি – লুটপাট
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাই অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়ার একমাত্র কারণ নয়। তবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশকে গতিহীন করে দিলে এর দায়ভার রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হয়। দেশের অর্থনীতির শ্বাসরোধ করে কেউ দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না। রাজনৈতিক সঙ্কটের ফলে বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের সব রাজনৈতিক দল আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা খুঁজে বের করে রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দেখাবে এটাই দেশের মানুষ আশা করে। অর্থনীতি ধ্বংস হয় দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণেও।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাসা ভাড়া বৃদ্ধি
রাজনৈতিক সংঘাত ও বাজারে সবকিছুর অগ্নিমূল্য-স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোকে চরম হতাশার মধ্যে ফেলে দেয়। জীবন নিবাহের ব্যয় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)এর এক জরিপ থেকে জানা গেছে, রাজধানীর এক কোটি ২৬ লাখ মানুষের মধ্যে ৮৩শতাংশ বাড়া বাড়িতে থাকে। ১৯৯১ সাল থেকে গত ২০ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৩২৫ শতাংশ। সাধারণ মানুষের আয়ের ৬০শতাংশ অথ ব্যয় হয় বাড়িভাড়ার পেছনে।
বাড়িভাড়া আইন থাকলেও বাস্তবে প্রয়োগ না থাকায় বাড়ির মালিকদের ভাড়া বৃদ্ধির একতরফা সিদ্ধান্তে ভাড়াটিয়াদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অথচ অনেক দেশে ভাড়ার টাকায় ফ্ল্যাটের মালিক হওয়ার সুযোগ করে দেয় সরকার। মালয়েশিয়া এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। অথচ বাংলাদেশে এমন অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সাধারণ কোনও চাকরিজীবী সারা জীবনেও মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করতে পারেন না।
অধিকার হরণ ও বিভাজন বৃদ্ধি
কোনো দেশে যদি সাংবিধানিক অধিকার ফিরে না আসে, রাজনীতিবিদরাই যদি ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে ফেলে তবে তাতে ভয়াবহ সমস্যার কারণ হয়। এসব সঙ্কট সমাধানে সাংবিধানিক সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি রাজনীতিবিদদের মানসিকতার পরিবর্তন খুব বেশি জরুরি। রাজনৈতিক অঙ্গনে হিংসা বিদ্বেষ ও মিথ্যাচারের চর্চা দেশকে পিছিয়ে দেয়। দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। অর্থনীতির বিকাশও প্রত্যাশানুযায়ী হচ্ছে না। দেশে বিভাজন বাড়ছে। সংঘাত গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমেই গণতন্ত্র টিকে থাকে।
বিপর্যস্ত অর্থনীতি
দেশের অর্থনীতি ও স্থিতিশীলতা বিপর্যস্ত হলে; ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে; বিনিয়োগ না থাকায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে অলস টাকা বাড়লে- তা অশনি সংকেত। কারণ অলস টাকা বৃদ্ধির ফলে বেড়ে যায় ব্যাংকের পরিচালনার ব্যয়, অন্যদিকে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ব্যাংকগুলোর মুনাফায়। দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছে যে রফতানি খাত, সেখানে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিলে তা আশংকার। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহ ধীরে ধীরে কমে যাওয়া, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জিএসপি সুবিধা বাতিল হওয়া, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিরাশার।
রাজনৈতিক সংস্কৃতির গুণগত পরিবর্তন
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের অর্থনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে, যা কাটিয়ে উঠা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ জন্য পিছিয়ে যাওয়া আর পেছনে টানার এই সংস্কৃতি থেকে রাজনীতিবীদদের বেরিয়ে আসতে হবে। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে এ বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা দেশকে রক্ষা করবে, জাতিকে রক্ষা করবে, ব্যবসায়ীদের শান্তিতে ব্যবসা করতে দেবে। দেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা দেশপ্রেমিক জনগণ কখনই বরদাশত করবে না। সামগ্রিক অবস্থার আলোকে রাজনৈতিক সংস্কৃতির গুণগত পরির্তন সময়ের অনিবার্য দাবি। এক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে,
রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপ
সংলাপের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট দূর করতে সকল রাজনৈতিক দলকে এগিয়ে আসতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের একসঙ্গে বসে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমঝোতার উপায় খুজে বের করতে হবে।
সঠিক গণতন্ত্র চর্চা
সঠিক গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান ও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব। বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক সংকটের সমাধান দেশবাসীকেই করতে হবে৷ কোনো বিদেশি রাষ্ট্র বা সংঘের সুপারিশে বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান হবে না৷ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। জাতির নিরাপত্তা সংকট নিরসনে শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তরুণদের এগিয়ে আসা
বাংলাদেশের রাজনীতি আজ গভীর সংকটে । বাইরে থেকে কেউ এসে আমাদের সংকটের সমাধান করে দেবেন বলে ভাবাটা নিজেদের চূড়ান্ত অযোগ্যতা এবং দৈন্যের বহিঃপ্রকাশ। রাজনীতিবিদদের মধ্যে মতের পার্থক্য থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু মাটি ও মানুষের কল্যাণে আলোচনার মাধ্যমে সম্ভাব্য সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। এক্ষেত্রে নবীন প্রজন্মকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারে প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মরহুম হাবিবুর রহমান বলেছিলেন, বাংলাদেশের তরুণরা অনেক সম্ভাবনাময় এবং মেধাবী৷ তারই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে বের করবে৷ আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই, যতই সংকট থাকুক শেষ পর্যন্ত সমাধানও আসবে৷
সমস্যার সমাধানে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধান খুজে বের করার সুস্থ ধারায় নেই। অসুস্থ লড়াই এমন বেড়েছে যে দেশের উন্নয়নেও সমঝোতার মনোভাব দেখা যায় না। গণতন্ত্রে ভিন্ন মত থাকে, সমাধানের পথও থাকে। আমাদের নিজেদের সমস্যাগুলোর সমাধান নিজেদেরই করতে হবে। সমস্যার সমাধান ও সম্ভাবনার বিকাশে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে।
স্বাধীন মর্যাদা রক্ষায় আপোষহীনতা
দেশের স্বাধীন মর্যাদার জন্য অবমাননাকর কোনো কর্মকান্ড কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কূটনীতিকসহ বিদেশীদের উচিত তাদের সীমার মধ্যে অবস্থান করা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলা। বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়ে কূটনীতিক তথা বিদেশীদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকা উচিত নয়।
অথচ রাজনীতি নিয়ে অস্থিরতার সুযোগে এ দেশের রাজনীতিবিদরাই মধ্যস্থতার জন্য বিদেশি কূটনীতিকদের সুযোগ করে দেন। দেশের লাল সবুজ পতাকার মানকে সমুন্নত রাখতে, শাপলা শালুকের বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আপোষহীনতা কাম্য।
সবর্স্তরে চেতনার জাগ্রত অবস্থা
আজ বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সংকট গভীর কোন সংঘর্ষের দিকে মোড় নিচ্ছে, তার জন্য প্রয়োজন জনতার চেতনার জাগ্রত অবস্থা। নতুন একটি পথ তৈরীর জন্য বাংলাদেশের জনগণকে বিভিন্ন বিপ্লব থেকে শিক্ষা নিতে হবে। যেখানে সাধারণ মানুষেরা একটি নতুন মুক্তির পথ উন্মোচিত করেছিল। সচেতন তরুণ সমাজকে এই পরিবর্তনে এগিয়ে আসতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন সর্বপ্রথম চিন্তার একটি গ্রাউন্ড তৈরী করা।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যে উদ্যোগ
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতির পথে বড় চ্যালেঞ্জ । বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতি ড. এম শমসের আলী বলেছেন, রাজনীতির লক্ষ্য যদি মানুষের কল্যাণ হয় আর সরকারি ও বিরোধীদল যদি সেই রাজনীতি করে, তাহলে তাদেরকেই সমঝোতার পথ খুঁজে বের করতে হবে।
মানবিক সংকটের সমাধান
বাংলাদেশের মূল সংকটটি স্রেফ রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক বা প্রশাসনিক নয়। ব্যর্থতা নিছক গণতন্ত্রেরও নয়। বরং মূল সংকটটি মানবিক। মানবিক সংকটের সমাধান আগে প্রয়োজন।
বিবেকহীনতা দূর করা
সমস্যা এখানে বিবেকহীনতার। বহুদেশে প্রাকৃতিক সম্পদে অতি সমৃদ্ধ হলেও শিল্প-বিপ্লব, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিপ্লবও আসেনি। অথচ প্রাকৃতিক সম্পদে দরিদ্র দেশেও বিপ্লব এসেছে।
মানবিক উন্নয়ন দরকার
ইংল্যান্ড,জার্মান,জাপান ও কোরিয়ায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিপ্লবের কারণ উন্নত সোসাল ক্যাপিটাল তথা মানবিক উন্নয়ন। মানব-উন্নয়ন ছাড়া অর্থনৈতিক,সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন আসে না –এটাই বাস্তবতা। তাই বাংলাদেশে এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে যাতে টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে সকল নাগরিকের সুখ শান্তি নিশ্চিত করাটা সহজ হয়।