গাছ লাগান, বাচ্চাদের বাগান পরিচর্যায় উৎসাহিত করুন। চমৎকার শখ ও সুস্বাস্থ্যের মেলবন্ধনের অনন্য উদাহরণ বাগান করা; যা মন ভালো রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যরক্ষায় নানাভাবে অবদান রাখে। বাগানে কাজ করা মানসিক চাপ কমায়। বাগান করা হতে পারে বিষণ্নতা আর দুশ্চিন্তায় লাগাম, সামাজিকতা বাড়ানোর একটি মাধ্যমও।
খাবার টেবিলে নিজের বাগানে ফলানো তরতাজা শাক-সবজি-ফলের থেকে মজাদার ও স্বাস্থ্যকর আর কী হতে পারে। হোক সেটা বারান্দায় বা ছাদে টবে কিংবা বাড়ির উঠানে। স্কুলের হোম ওয়ার্কের পর গাছে পানি দেওয়া বা আগাছা পরিষ্কারের কাজটা বাচ্চাদেরকে দিলে শারীরিক কসরতের পাশাপাশি দায়িত্ব নেবার মানসিকতা তৈরি হবে ছোটবেলা থেকেই।
স্বাস্থ্যকর পরিবেশ
ঘুমানোর সময় ইলেকট্রিক ডিভাইস বন্ধ রাখুন, বিদ্যুতের অপচয় করবেন না। ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন (আইফোন, অ্যান্ড্রয়েড নির্ভর ফোন বা উইন্ডোজ ফোন) বা স্মার্টফোন বালিশের পাশে রাখা অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। সেলফোন থেকে নির্গত নীল রঙের আলো মস্তিষ্ককে জাগিয়ে রাখে বলে ঘুম ও ঘুম চক্র নষ্ট হয়। মোবাইল থেকে নির্গত হওয়া রেডিয়েশন বা তরঙ্গের বিকিরণে ক্যানসার বা এ-জাতীয় সমস্যা সৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।
রাতের অন্ধকারে ফোনের স্ক্রিনের আলো চোখের রেটিনার পক্ষে ক্ষতিকারক, এই আলো তন্দ্রার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনকে নিঃসরণ হতে বাধা দেয়। ফেসবুক চালাতে চালাতে ফোন চালু রেখেই ঘুমিয়ে যাওয়া কিংবা ঘুমানোর আগে দীর্ঘ সময় মেইল ব্যবহার করা বা গেম খেলা মারাত্মক ক্ষতিকর অভ্যাস; এতে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে।
ফোন ব্যবহার সীমিত করুন। যারা অ্যালার্ম ঘড়ি হিসেবে ফোন ব্যবহার করেন তাঁরাও কিছু দূরে কোনো কিছুর ওপরে ফোনটি রাখুন। ঘুমানোর আগে কক্ষের কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল বা লাইট বন্ধ করুন। ওয়াইফাই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ইলেক্ট্র ম্যাগনেটিক ওয়েভের ফলে মানব শরীরের বৃদ্ধির ক্ষতি হয়; মনোযোগের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা, মাঝেমধ্যেই মাথা যন্ত্রণা, কানে ব্যথা ও ক্লান্তি দেখা দেয়।
বেডরুম বা রান্নাঘরে ওয়াইফাই’র রাউটার বসাবেন না। যখন ব্যবহার করছেন না ওয়াইফাই বন্ধ রাখুন। মাঝেমধ্যে কেবলের সাহায্যে ফোন ব্যবহার করুন। ঘুমানোর সময় ওয়াইফাই কানেকশন বন্ধ রাখুন।
অপচয় রোধ
প্রয়োজন ছাড়া লাইট ও ফ্যান বন্ধ রেখে বিদ্যুতের অপচয় রোধ করুন। পানির অপচয় রোধ করুন। দুর্ঘটনা এড়াতে বাইরে যাওয়ার সময় কিংবা রান্না শেষে গ্যাসের চুলার চাবি ঘুরিয়ে ঠিকভাবে গ্যাস বন্ধ করুন। জ্বলন্ত চুলার ওপর কোনো অবস্থাতেই কাপড় শুকাতে দিবেন না।
গ্যাসের চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে- গ্যাসলাইনের ছিদ্র বা চুলার চাবি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং গ্যাসের চুলা চালু করে অন্য কাজ করা বা এর ওপরে কাপড় শুকাতে দেওয়া। লাইনের ছিদ্র বা চুলা থেকে গ্যাস বেরোলে শব্দ হবে। গ্যাসের একটা গন্ধও আছে। এগুলো অনুভব করুন। গ্যাসলাইনে লিক সমস্যা হলে দ্রুত তিতাস গ্যাসকে জানান।
গ্যাসের চুলায় সমস্যা থাকলে, নবটা ঠিক না থাকলে দ্রুত বাড়িওয়ালাকে জানান ও দক্ষ কারিগর দিয়ে সারিয়ে নিন। চুলা সব সময় ত্রুটিমুক্ত রাখুন। রান্নাঘরের জানালা ২৪ ঘণ্টাই খোলা রাখুন; মশা-মাছির উৎপাত বাড়লে জানালার গ্রিলে নেট লাগিয়ে নিন।
রান্নাঘরে সতর্কতা
অনেক দিন ঘর বদ্ধ থাকলে বাসায় ঢুকেই আগুন জ্বালাবেন না। জানালা খুলুন, ঘরে বাতাসের আসা-যাওয়া স্বাভাবিক হলে চুলা জ্বালুন। বাথরুমে প্রচুর গ্যাস থাকে, সব কিছু বন্ধ করে কখনোই মোমবাতি, ম্যাচ জ্বালাবেন না। রান্নাঘরে ইলেকট্রিক ওভেন বা ফ্রিজ রাখা উচিত নয়। এতে আটকে পড়া গ্যাসে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। ফ্রিজ ২৪ ঘণ্টাই চলে, পেছনটা গরম হয়; এই গরম হাওয়া বের হওয়ার ব্যবস্থা রাখবেন।
শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য চুলা জ্বালিয়ে রাখার প্রবণতা বাদ দিন। ম্যাচের কাঠি বাঁচানোর জন্য গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বেলে রাখবেন না । অনেক সময় পুরনো চুলার অফ-অন নবগুলো ঠিকমতো কাজ করে না। অর্থাৎ চাবি ঘুরিয়ে বন্ধ করলেও গ্যাস লিকেজ হতে থাকে। যেসব এলাকায় সব সময় লাইনে গ্যাস থাকে না, সেখানে চুলা বন্ধ করার ব্যাপারে ব্যবহারকারীদের ঔদাসীন্য খুবই বিপজ্জনক প্রবণতা।
রান্নাঘরে প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সিলিন্ডার ব্যবহারে সতর্কতা হচ্ছে- সিলিন্ডার খাড়াভাবে রাখা। সিলিন্ডারকে মেঝের সমতলে রাখা এবং চুলা বা অন্যকোনো এলপিজি ব্যবহারের যন্ত্রকে সিলিন্ডারের চেয়ে উঁচুতে রাখা। সিলিন্ডারের সেফটি কেপ্ সিলিন্ডারের সাথে রাখা। ব্যবহার শেষে রেগুলেটর বন্ধ করে ভাল্বের মুখে সেফটি কেপ্ আটকে দেয়া। রান্না করার সময় দরজা জানালা খোলা রাখা।