লিওনেল মেসি মা সেলিয়া কুচিত্তিনি বলেন, ‘মেসি খুব ভাগ্যবান যে মানুষের ভালোবাসা ওর সাথে আছে। আমি ওকে অনেক আশা করতে দেখি। ওর অনেকগুলো স্বপ্ন আমি নিজেও দেখি। আমি তাকে শুভকামনা জানিয়েছি। তাকে নিজের খেয়াল রাখতে বলেছি।’
লিওনেল আন্দ্রেস “লিও” মেসি কুচ্চিত্তিনি এর জন্ম ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন। তিনি একজন আর্জেন্টাইন পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় যিনি স্পেনের সর্বোচ্চ স্তরের পেশাদার ফুটবল লীগ প্রতিযোগিতা লা লিগাতে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা এবং আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের পক্ষে একজন ফরোয়ার্ড (আক্রমণভাগের খেলোয়াড়) হিসেবে খেলেন। অধিকাংশ ধারাভাষ্যকার, ফুটবল বিশেষজ্ঞ, কোচ এবং খেলোয়াড় তাকে বর্তমান সময়ের সেরা এবং সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে গন্য করে থাকেন।
মেসি ফুটবলের ইতিহাসে প্রথম এবং একমাত্র খেলোয়াড় যিনি টানা পাচটি ফিফা / বালোঁ দর পুরস্কার জিতেছেন। এছাড়া প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনি তিনটি ইউরোপীয়ান গোল্ডেন শু পুরস্কারও জিতেছেন। বার্সেলোনার হয়ে মেসি আটটি লা লিগা, পাঁচটি কোপা দেল রে, সাতটি স্পেনীয় সুপার কোপা, চারটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ, তিনটি উয়েফা সুপার কাপ এবং তিনটি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছেন। মেসি প্রথম এবং একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা চারটি চ্যাম্পিয়নস লীগে সর্বোচ্চ গোল করেছেন এবং প্রতিযোগিতায় তার সর্বোচ্চ হ্যাট্রিকেরও রেকর্ড রয়েছে। মেসি আর্জেন্টিনাকে ২০০৫ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ জয়ে সাহায্য করেন। প্রতিযোগিতায় তিনি সর্বোচ্চ ছয়টি গোল করেন এবং সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে আর্জেন্টিনার সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনা রানার-আপ হয় এবং তিনি প্রতিযোগিতার কনিষ্ঠ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।
২০০৭ সালে, মেসি প্রতিষ্ঠা করেন ‘লিও মেসি ফাউন্ডেশন’। এই সংস্থা সুরক্ষিত নয় এমন শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থের প্রতি নজর রাখে। শৈশবে মেসিরও শারীরিক সমস্যা ছিল, তাই এই সংস্থা আর্জেন্টিনার রোগাক্রান্ত শিশুদের স্পেনে নিয়ে গিয়ে চিকিত্সার ব্যবস্থা করে এবং যাতায়াত, চিকিত্সা ও অন্যান্য ব্যয় বহন করে। এই সংস্থার জন্য মেসি নিজে চাঁদা সংগ্রহ করে থাকেন। এছাড়াও হার্বালাইফ নামক একটি বহুমুখী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান লিও মেসি ফাউন্ডেশনের সহায়তা করে থাকে।২০১০ সালের ১১ মার্চ, মেসিকে ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ঘোষনা করা হয়। শুভেচ্ছা দূত হিসেবে মেসির লক্ষ্য, শিশুদের অধিকার রক্ষা। এক্ষেত্রে মেসিকে সহায়তা করে থাকে তার নিজের ক্লাব বার্সেলোনা বার্সেলোনা। বার্সেলোনাও ইউনিসেফের সাথে নানাবিধ কর্মকন্ডে জড়িত।
এছাড়া মেসি তার সাবেক ক্লাব নিওয়েল’স ওল্ড বয়েজের স্টেডিয়ামের ভেতরে ক্লাবের যুব প্রকল্পের জন্য একটি শয়নাগার তৈরিতে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করেন, এমনকি একটি নতুন ব্যায়ামাগারও তৈরি করে দেন। এতে করে লিওয়েল’স-এর সাথে মেসির বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। তারা মেসির সন্তান থিয়াগোকে একটি বিশেষ সদস্যপত্র দেওয়ার পরিকল্পনাও করেন। ২০১৩ সালের মার্চে, মেসি তার জন্মভূমি আর্জেন্টিনার রোজারিওতে একটি শিশু হাসপাতালে ৬০০,০০০ ইউরো অনুদান প্রদান করেন। এই অর্থ ব্যয় হয় ভিক্টর জে ভিলেলার শিশু হাসপাতালের অনকোলজি ইউনিটের পুনঃ সংস্কারের কাজে। সেইসাথে, ডাক্তারদের প্রশিক্ষণের জন্য বার্সেলোনায় ভ্রমনের জন্যেও এই অর্থ ব্যয় করা হয়।