মহানবী (স.) বলেছেন- ‘মানুষের মধ্যে তিনিই শ্রেষ্ঠ, যিনি মানুষের উপকার করেন। সমাজ ও মানুষের মঙ্গল নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা, মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ নানাবিধ প্রয়োজন পূরণে সাহায্য-সহযোগিতা করার কাজ নিঃসন্দেহে মহৎ।
সমাজসেবা
সব কাজের মধ্যে সমাজ কল্যাণের কাজই শ্রেষ্ঠ। সমাজসেবা মূলত সৃষ্টির কল্যাণে নিবেদিত যাবতীয় সেবাকেই বোঝায়।সমাজসেবার প্রকৃত অর্থ মানুষকে মানুষের মর্যাদা দেওয়া। তাঁদের হৃদয় জয় করা। সমাজসেবা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্বে এমন কোনো বড় নেতা পাওয়া যাবে না, যারা সমাজসেবার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
মানবসেবা
সুপ্রসিদ্ধ সমাজবিজ্ঞানী রাস্কিন এর মতে, পৃথিবীতে মানুষের কর্তব্য কর্ম তিনটি। “Duty towards God, Duty towards parents, and duty towards mankind”. প্রত্যেক ধর্মেই মানবসেবার কথা বলা হয়েছে। মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারলে সৃষ্টির সেরা জীবের দায়িত্ব পালন করা হয়। প্রকৃত মানবসেবা যারা করে, তারা প্রতিদান চায় না। যার মাঝে মানবতাবোধ আছে সেই মানবসেবার একাজে এগিয়ে আসে। মানবসেবা করতে হলে বিত্তবান হতে হয় না।
মানুষের সেবা করা, দুখী মানুষের পাশে দাঁড়ানো উত্তম আমল। সমাজসেবার উদ্দেশ্য হতে পারে না বাহবা পাওয়া। নিঃশব্দেই মানব সেবা করা যায়। মানুষ মাত্রই চায় একটা সুযোগ। বাঁচার সুযোগ, শিক্ষার সুযোগ, ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ। চায় সম্মানের সাথে বাঁচতে। যত বেশি মানুষকে সুযোগ করে দেওয়া যায় ততই মানবসেবা করা হয়। যত বেশি বিপদে-আপদে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যেই জীবনের যথার্থ স্বার্থকতা নিহিত। অপরের কল্যাণ কামনাকে প্রাধান্য দিয়ে নিজের স্বার্থকে ত্যাগ করার নামই মানবসেবা।
স্বেচ্ছাসেবা
স্বেচ্ছাসেবা হচ্ছে আত্নত্যাগ, সাহায্য, এবং মনুষত্বের বহিঃপ্রকাশ। সাহায্য করা যায় প্রতিবেশীকে, ক্লাসে সহপাঠীকে, অফিসে সহকর্মীকে, যানবাহনে সহযাত্রীকে, এলাকার একটা শিশুকে। তোমার সাধ্যের মধ্যে যা আছে, তা-ই করো। জীবনে এমন ভালো কাজই হৃদয় স্পর্শ করবে।
জনসেবা
জনসেবা সমাজজীবনে আনে স্থীতিশীলতা, আর ব্যক্তিজীবনে আনে অনাবিল শান্তি। প্রত্যেকের কাউকে না কাউকে সাহায্য করার সুযোগ আছে। পরিচিত কিংবা অপরিচিত, কাছের কিংবা দূরের, দেশের কিংবা ভিনদেশের যেকোনো মানুষের ভালোর জন্য কাজ করা যায়। কারো জন্য কিছু না করার চেয়ে একজনের জন্য কিছু করাও ভালো। তবে বিনিময়ে কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা রাখা যাবে না। ইচ্ছে থাকলেই যে কেউ মানুষের জন্য কাজ করতে পারে। মানুষের কল্যাণে কাজ করার মানসিকতা থাকলেই গণ-মানুষের প্রকৃত মঙ্গল হয়।