আনিসুর রহমান এরশাদ
রাজনীতি মানুষের প্রকৃতির একটি প্রয়োজনীয় দিক। রাজনীতি প্রত্যাশিত আচার-আচরণের জন্য নিয়ম, প্রবিধান ও মান নির্ধারণের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজনীতি সমস্ত সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, জাতি এবং জাতিগত উৎস থেকে নাগরিকদের দৈনিক জীবনকে প্রভাবিত করে।
যদি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো পরিপূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে পারতো, রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা দেখাতো, সংযত হতো, গণতান্ত্রিক ভাষায় কথা বলতো, সাংবিধানিক আচার-আচরণ রপ্ত করতো, সহনশীলতা ও সৌজন্যতাবোধ থাকতো; তাহলে রাজনৈতিক সংকট নানা ধরণের মানবিক সংকট কখনো তৈরি করতো না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে রাজনৈতিক খেলার মাঠে মানুষের প্রাণ খেলনায় পরিণত হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যু থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে নতুন ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে, নাটক সাজানো হচ্ছে।
কালো টাকা ও পেশী শক্তি, দলীয় কোন্দল, নেতৃত্বের বিরোধ, ক্ষমতার অপব্যাবহার, ধ্বংসাত্মক- সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে। অস্থিরতা, অসহিষ্ণুতা, অরাজকতা, দ্বন্ধ-বিদ্বেষ, কপটতা, সঙ্কট, ভাবাদর্শের সংঘাত যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতিবিদদের মানসিকতার পরিবর্তন ছাড়া হিংসা বিদ্বেষ ও মিথ্যাচারের চর্চা বন্ধ হবে না।
ইংল্যান্ড, জার্মান, জাপান ও কোরিয়ায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিপ্লবের কারণ উন্নত সোশ্যাল ক্যাপিটাল তথা মানবিক উন্নয়ন। মানব-উন্নয়ন ছাড়া অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন আসে না –এটাই বাস্তবতা। এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে যাতে মানবিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত ও নিশ্চিত হয়।