সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি ও আত্মঘাতী হামলা ইসলামে সর্বাপেক্ষা বড় অপরাধ। মধ্যমপন্থা, ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ ও অবস্থা মুসলমানদের চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তাই কোনো প্রকৃত মুসলমান চরমপন্থা-ফেতনা-ফ্যাসাদ-সন্ত্রাস-নৈরাজ্য-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মতো মানবতা বিবর্জিত কাজে জড়িত হতে পারেন না। নিরপরাধ মানুষকে ভয় দেখানো, তাদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা, কোনো দূতাবাসে আক্রমণ করা, তাদেরকে হত্যা করা, তাদেরকে জিম্মি করা, কোনো স্থাপনা ধ্বংস করা, বিমান ছিনতাই করা সবই নিষিদ্ধ কর্ম। সমস্ত রকমের সন্ত্রাসই ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কাজেই বিক্ষুদ্ধ হয়ে মানবতার কল্যাণের আদর্শ ইসলামের বিপরীত পন্থায় কোনো পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ নেই।
সন্ত্রাস কী?
সন্ত্রাস অর্থ- অতিশয় ত্রাস, মহাশঙ্কা, ভয়ের পরিবেশ। কোনো উদ্দেশ্যে মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা, অতিশয় শঙ্কা বা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হলো সন্ত্রাস। সন্ত্রাসের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো- Terror-extreme fear. আরবি ভাষায় সন্ত্রাস শব্দের প্রতিশব্দ হলো ‘ইরহাব’। এ শব্দটি এসেছে রাহবুন থেকে যার অর্থ খাওফ। বাংলায় ভীত হলো, ভয় পেলো ইত্যাদি। আর ‘ইরহাব’ অর্থ হলো তাখভীফ তথা ভীতিপ্রদর্শন, শঙ্কিতকরণ, আতঙ্কিতকরণ।
সন্ত্রাসের সংজ্ঞা
১৯৮৮ সালের এপ্রিল মাসে আরব রাষ্ট্রগুলোর স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রীদের এক সম্মেলনে সন্ত্রাসের সংজ্ঞায় বলা হয়- সন্ত্রাস হলো ব্যক্তি বা সামষ্টিক অপরাধের মনোবৃত্তি হতে সংঘটিত নিষ্ঠুর কাজ বা কাজের হুমকি, তা যে লক্ষ্যেই হোক না কেন। তা দ্বারা মানুষের মনে ভয়ভীতি সঞ্চার করা হয় বা তাদেরকে কষ্টে ফেলার হুমকি দেয়া হয়, বা তাদের জীবন, স্বাধীনতা বা নিরাপত্তাকে ধ্বংসের মুখে ফেলা হয় বা পরিবেশকে ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়া হয় বা সাধারণ জনগণের বা সরকারি সম্পত্তি ছিনতাই, জবর দখল, নষ্ট করা হয়। সন্ত্রাস হল ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য হিংসাত্মক কাজ সংঘটিত করা অথবা এর হুমকি প্রদান করা। সন্ত্রাসীরা হত্যা, অপহরণ, অগ্নিসংযোগ, বিমান হাইজাক, বোমা হামলাসহ ইত্যাদি মারাত্মক অপরাধের কাজ করে। কূটনৈতিক, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ ও বিচারকরা সন্ত্রাসীদের দ্বারা হত্যা ও অপহরণের শিকার হন।
সন্ত্রাস হলো ব্যক্তি বা সামষ্টিক অপরাধের মনোবৃত্তি হতে সংঘটিত নিষ্ঠুর কাজ বা কাজের হুমকি, তা যে লক্ষ্যেই হোক না কেন। তা দ্বারা মানুষের মনে ভয়ভীতি সঞ্চার করা হয় বা তাদেরকে কষ্টে ফেলার হুমকি দেয়া হয়, বা তাদের জীবন, স্বাধীনতা বা নিরাপত্তাকে ধ্বংসের মুখে ফেলা হয় বা পরিবেশকে ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়া হয় বা সাধারণ জনগণের বা সরকারি সম্পত্তি ছিনতাই, জবর দখল, নষ্ট করা হয়।
সামাজিক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে কোনো সরকার, বেসকারি জনগণ বা অন্য যে কোনো অংশকে ভীতি প্রদর্শন বা দমনের জন্য ব্যক্তিবর্গ বা সম্পদের উপর অবৈধ শক্তি প্রয়োগ বা সহিংস আচার ব্যবহারকে সন্ত্রাস বলা হয়। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুশৃঙ্খলভাবে সহিংসতা ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করাই সন্ত্রাস।
সন্ত্রাসী কারা?
যেসব কর্মকাণ্ড সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জান-মালের ক্ষতি সাধন, দেশ ও সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, শান্তি ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন, স্থাপনা ও স্থাপত্য ধ্বংস এবং সর্বস্তরের নাগরিকদের আতঙ্কিত করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির সম্মুখীন করে তাকে বলা হয় সন্ত্রাস। অর্থাৎ যে কর্মকাণ্ড জনগণের মাঝে ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং জানমালের ক্ষতি সাধন করে তাই সন্ত্রাস এবং যে বা যারা এ সকল কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত তারাই সন্ত্রাসী।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা সন্ত্রাসকে দুটি শব্দ দ্বারা বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ ‘ফিতনা’ ও ‘ফ্যাসাদ’। যার সরল বাংলা- সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, বিপর্যয় ইত্যাদি। বর্তমান সময়ে সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ বলতে যা বোঝায় তার সবই কুরআনে বিবৃত হয়েছে ‘ফিতনা’ ও ‘ফ্যাসাদ’ হিসেবে।
আতঙ্কসৃষ্টি সহিংসতা আগ্রাসন ত্রাস
অনেক রাজনৈতিক নেতা ও চিন্তাবিদই আরবী ‘উনুফ’ বা ‘সহিংসতা’ (Violence) শব্দ ও ‘ইর‘আব’ বা ‘আতঙ্কসৃষ্টি’ (Terrorism) শব্দের মধ্যে, তেমনি ‘উনুফ’ বা ‘সহিংসতা’ ও ‘আল-ইর‘আব আল-উদওয়ানী’ বা ‘আগ্রাসন’ শব্দের মধ্যে এবং ‘উনুফ’ বা ‘সহিংসতা’ ও ‘আল-ইর‘আব আয-যরুরী’ বা ‘ত্রাস’ শব্দের মধ্যে পার্থক্য করেন না। তবে ‘উনুফ’ ও ‘ইরহাব’ শব্দের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। ‘উনুফ’ অর্থ চিন্তা, মতবাদ, দর্শন কিংবা সাধারণ বা বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে সহিংস মাধ্যম বা উপায় অবলম্বন করা। যেমন : আঘাত, শারীরিক নির্যাতন বা অস্ত্র ব্যবহার। পক্ষান্তরে ‘ইরহাব’ ও ‘ইরআব’ শব্দদুটি এর চেয়ে ব্যাপক অর্থ বহন করে। কারণ তা হতে পারে সহিংস উপায়ে আবার হতে পারে অহিংস উপায়ে। যেমন : আকার-ইঙ্গিতের মাধ্যমে ভয় দেখানো অথবা কথার দ্বারা ভয় দেখানো। অর্থনৈতিকভাবে বয়কটের হুমকি, কঠোরতা আরোপের হুমকি, না খেয়ে মারার হুমকি কিংবা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি ইত্যাদি।
‘ইরহাব’ ও ‘ইর‘আব’ শব্দদুটি ভেটোর ক্ষমতা প্রয়োগ অথবা জালেমের নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দেয়াকেও অন্তর্ভুক্ত করে। অসত্য অভিযোগ প্রচারের মাধ্যমেও ‘ইরহাব’ ও ‘ইরআব’ সংঘটিত হতে পারে। যেমন : টার্গেট গোষ্ঠীর সুনাম ক্ষুণ্ন করতে বা তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াতে অপপ্রচার ও প্রচলিত মিডিয়া যুদ্ধের কৌশল গ্রহণ করা। এই ‘ইরহাব’ ও ‘ইরআব’ কখনো হামলার শিকার ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিক হত্যা করে না। বরং তাকে দীর্ঘ শাস্তি ও ধারাবাহিক নির্যাতন করে ধুঁকিয়ে ধুঁকিয়ে মারে। অর্থাৎ এ দুটি কখনো তৎক্ষণাৎ না মেরে ধীরে ধীরে মৃত্যু ডেকে আনে। এটি করা হয় তাকে গৃহহীন অবস্থা ও ক্ষুধার মুখে ঠেলে দেয়ার মাধ্যমে।
অত্যাচার সীমালঙ্ঘন প্রত্যাখান
ইসলাম অন্যের ওপর অত্যাচার বা সীমালঙ্ঘনমূলক ‘ইরহাব’ ও ‘ইরআব’ সংঘটনকে কঠোরভাবে হারাম ঘোষণা করে। তীব্রভাবে একে প্রত্যাখান করে এবং সীমালঙ্ঘন বা উৎপীড়নমূলক ‘ইরহাব’ ও ‘ইর‘আব’ এর জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে। ইসলাম এতদুভয়ের অনুমতি দেয় ঠিক; তবে তা শাস্তিকে অপরাধী পর্যন্ত সীমিত রাখা এবং অনুমোদিত ক্ষেত্র অতিক্রম না করার শর্তে। অনুমোদিত ক্ষেত্র হলো, আত্মরক্ষা, শত্রু দমন ও নির্যাতিতের সাহায্যের জন্য।
বিশেষত জুলুম প্রতিরোধের কোনো ক্ষমতাই সেসব দুর্বল ও অক্ষম ব্যক্তির নেই। ‘কিতাল ফী সাবীলিল্লাহ’ এর উদ্দেশ্য কেবল নিরস্ত্র, অক্ষম ও দুর্বলদের থেকে জুলুম তুলে দেয়া। কারো ওপর জুলুম চালানো বা অন্যকে শায়েস্তা করার জন্য নয়; ইসলামে ‘জিহাদ’ নামক বিধান রাখা হয়েছে বৈধ প্রতিরোধের জন্য। আর নির্যাতন প্রতিরোধের পদক্ষেপকে গণতান্ত্রিক ও অন্যান্য দেশের মানব রচিত সকল ব্যবস্থাই সমর্থন করে। এ উদ্দেশ্যেই তো সকল রাষ্ট্র শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করে।
সন্ত্রাসবাদ কী?
সন্ত্রাস ভিত্তিক বা কেন্দ্রিক মতবাদ ও কর্মকাণ্ডকে বুঝাতে সন্ত্রাসবাদ শব্দটি বহুল প্রচলিত। সন্ত্রাসবাদ বা Terrorism হচ্ছে- সন্ত্রাসের পদ্ধতিগত ব্যবহার, যা প্রায়শই ধ্বংসাত্মক এবং বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ঘটানো হয়। Terrorism শব্দটি সর্বপ্রথম ইংরেজি ভাষায় গৃহীত হয় ১৭৯৮ সালে। সন্ত্রাস এর সমার্থক শব্দ হিসাবে সন্ত্রাসবাদ, আতঙ্কবাদ, বিভীষিকাপন্থা, সহিংসতা, উগ্রপন্থা, উগ্রবাদ, চরমপন্থা ইত্যাদিও ব্যবহৃত হয়।
অভিধানে ‘সন্ত্রাসবাদ’ অর্থ লেখা হয়েছে যে, রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের জন্য হত্যা অত্যাচার ইত্যাদি কার্য অনুষ্ঠাননীতি। সন্ত্রাসবাদের প্রচলিত সঙ্গানুযায়ী যে সকল বিধ্বংসী কার্যকলাপ জনমনে ভীতির উদ্বেগ ঘটায়, ধর্মীয়, রাজনৈতিক অথবা নীতিগত লক্ষ্য অর্জনের জন্য কৃত রুচি বিরুদ্ধ কাজ, ইচ্ছাপূর্বক সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার বিষয় উপেক্ষা অথবা হুমকি প্রদান করা, আইন বহির্ভূত কার্যকলাপ এবং যুদ্ধকেও সন্ত্রাসবাদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
সন্ত্রাসবাদের ব্যাখ্যা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর সন্ত্রাসবাদকে ব্যাখ্যা করেন এভাবে- পরিকল্পিতভাবে অনৈতিক সহিংসতা বা অনৈতিক সহিংসতার হুমকি প্রদানের মাধ্যমে বারবার ভয় প্রদর্শন করা, যা রাজনৈতিক, ধর্মীয় অথবা আদর্শগত কারণে কোনো লক্ষ্য উদ্ধারের জন্য সরকার বা সমাজকে দমন করা বা ভয় দেখিয়ে বশে আনাকে সন্ত্রাসবাদ বলে। এ সংজ্ঞা হতে যে তিনটি বিষয় স্পষ্ট হয়- ১. সহিংসতা ২. ভয় ৩. দমন করা।
রিচার্ড রুবেনস্টাইন বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ হলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এক প্রকার হিংসাত্মক কাজ। যেখানে জনগণের প্রতিনিধিত্বের দাবী নিয়ে একটি ছোট গোষ্ঠী হিংসাত্মক কাজ করে। যা অপরাধমূলক এবং বেআইনি, রাষ্ট্রব্যবস্থার আইনের দ্বারা অনুমোদিত নয়।’
অধ্যাপক ব্রাইন জেনকিন বলেন, সন্ত্রাসবাদ হলো রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য শক্তি প্রয়োগ বা শক্তি প্রয়োগের হুমকি।
সন্ত্রাসবাদের উদ্দেশ্য
সন্ত্রাসবাদ হলো কোনো সংগঠিত গোষ্ঠী যারা উদ্দেশ্য অর্জন বা রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করার জন্য বা রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভের জন্য সরকার বা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপ পরিচালনা করা কিংবা অত্যাচার-হত্যা প্রভৃতি হিংসাত্মক ও ত্রাসজনক কর্ম অবলম্বন। আর এ হিংসাত্মক কার্যকলাপ রাষ্ট্রের কাছে হয়তো বা অনৈতিক, কিন্তু তাদের কাছে সেটা যৌক্তিক। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রও সন্ত্রাসী হতে পারে তার লক্ষ্য অর্জনের জন্য, আবার ব্যক্তিও সন্ত্রাসী হতে পারে।
আধুনিক সন্ত্রাসবাদ তত্ত্ব
আধুনিক সন্ত্রাসবাদ তত্ত্বের মূল কথা হলো যে, সন্ত্রাসের মাধ্যমেই বিপ্লবী আদর্শকে জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিচিত করা যায়। শত্রুপক্ষের মধ্যে ভয় ভীতিও সঞ্চার করা সম্ভব। তাছাড়া সাধারণ লোকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে প্রচলিত ব্যবস্থার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করা যায় সন্ত্রাসের মাধ্যমে। অতএব প্রচারণার কৌশল হিসেবে তাদের মতে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে সন্ত্রাসী কার্যক্রম। এ লক্ষ্যে তারা যাবতীয় সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে মহিয়ানরূপে উপস্থাপন করার প্রয়াস চালায় এবং তথাকথিত বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের অপরিহার্য কর্মসূচি হিসেবে সন্ত্রাসকে গ্রহণ করে।
চরমপন্থা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
যাদের আছে- ঈমানী জোশ-দ্বীনি জযবা-ইসলামী স্পৃহা-স্পিরিট, যারা চান- স্পীড-সংগ্রামের তুফান-আন্দোলনের ঝড়; এসব কিছুতে লাগাম-ব্রেক-সংযম-বাঁধ-বন্ধন না থাকলে মহাসর্বনাশ। ধর্মীয় চরমপন্থা বা জঙ্গিবাদ ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। চরমপন্থা অবলম্বন ইসলামী ঈমান-আকিদা-বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনার সম্পূর্ণ বিরোধী। তাই কোনো মুসলমানই চায় না মানুষ জঙ্গি বা সন্ত্রাসীর কাছে জিম্মি হয়ে থাকুক।
বিশ্বমানবতা আজ সন্ত্রাসবাদের তাণ্ডবলীলায় ভীতসন্ত্রস্ত ও হতাশাগ্রস্ত। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ; এর ভয়াল থাবা বিশ্বকে অক্টোপাসের মতো ঘিরে ফেলেছে। যা মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ব মানবতার চিরশত্রু; এর কোনো গোত্রীয়-জাতীয়-ধর্মীয় পরিচয় নেই। কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য পুরো জাতি বা কোনো ধর্মকে সন্ত্রাসী চরিত্রে আখ্যায়িত করা যায় না। মুসলমানরা মধ্যমপন্থী জাতি; চরমপন্থী কিংবা সন্ত্রাসী সম্প্রদায় নয়। একজন প্রকৃত মুসলমান কখনো কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে পারে না।