মায়ের শক্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগালের মাদেইরা অঞ্চলে শৈশব কেটেছিল এই ফুটবল তারকার। মা মারিয়া দোলোরেস দোস সান্তোস অ্যাভেইরো, আর বাবা জোসে দিনিস অ্যাভেইরো। মা-বাবা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিলেন বলে বন্ধুদের কাছ থেকে জুটত কটু কথা। রোনালদোর বাবা ছিলেন মালি আর মা পেশায় রাঁধুনি। মাত্র ২০ বছর বয়সে বাবাকে হারান এই তারকা। সেই শৈশব থেকে রোনালদোর পুরো দুনিয়া যেন মাকে ঘিরেই। আর তাই তো, ফিফা ব্যালন ডি’অর পুরস্কার নিয়ে মায়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি।
তবে রোনালদোর জন্মের সময় তেমন খুশি ছিলেন না মারিয়া। মারিয়ার আত্মজীবনী মাদার কারেজ-এ এমনটি লিখেছেন তিনি। রোনালদো যখন মায়ের কাছে এ কথা জানেন তখন বলেছিলেন, ‘দেখো মা, তুমি আমাকে চেয়েছিলে না কিন্তু আমিই এখন বাড়িতে একমাত্র টাকাপয়সা উপার্জন করছি।’
এক সাক্ষাৎকারে নিজ সন্তানের খেলা সম্পর্কে মারিয়া বলেন, ‘রোনালদো আমার শক্তি। আমি তার মধ্যে আমাকে দেখতে পাই। সে যেখানেই খেলতে যায় আমাকে ফোন করে। আমি মা হিসেবে “গুড লাক” বলে শুভকামনা জানাই তাকে। আরও বলি, “তোমার জন্য প্রার্থনা করব”। প্রতিবারই এমন করি। সে যখন কোনো ম্যাচ হেরে যায় তখন তাকে ধৈর্য ধরতে বলি। সে হেরে গেলে বেশ বিষণ্ন হয়ে যায়।’
শৈশব থেকে সব সময় রোনালদোকে সমর্থন দিয়েছেন মারিয়া। ২০০২ সালের পরেই অনেক কিছু বদলে যায়। সেই সময় রোনালদো মাকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে অনুরোধ করে লিসবন চলে যেতে বলে। এরপর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিলে জীবনের গতি বদলে যায় রোনালদো ও তাঁর মায়ের। বড় তারকা হলেও এখনো রোনালদোকে ছোটবেলার মতোই পরামর্শ দেন মা। মা তাঁকে সব সময়ই বলেন, ‘যত দূরে যাও না কেন, বিনয়ী হতে হবে। অর্থবিত্তে নিজেকে হারিয়ে ফেলা যাবে না। একদিন হয়তো আমরা সবার ওপরে উঠতে পারি, কিন্তু তারপরের দিনই আমরা সব হারিয়ে ফেলতে পারি। যত ওপরে উঠব ততই নিচে নামার ঝুঁকি বাড়বে। আমি আর আমার সন্তান সব সময় আগামীকালের জন্য চিন্তা করি।’