মানুষের আবেগের বিভিন্ন মাত্রা থাকে। সাধারণ মাত্রা অতিক্রম করলে ভয়-ডরহীন সাহসী হয়। যে মানুষ দেশের জন্য জীবন দেয়, আদর্শের জন্য জীবন দেয় সে মৃত্যুকেও পরোয়া করে না।
যে শুধু টাকার জন্য কাজ করে সাধারণত সে হয় ভীতু প্রকৃতির! টাকা কামানো বন্ধ হতে পারে বা চাকরি চলে যেতে পারে বা সম্পদের ক্ষতি হতে পারে- এমন ভাবনাই তাকে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকার মস্তিষ্ককে ব্যবহার করতে দেয় না।
যে মস্তিষ্ককে ব্যবহার করতে পারে তাকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ওপরই পুরোপুরি নির্ভরশীল হতে হয় না! যা আছে তাই নিয়ে দ্বিধাহীন চিত্তে সে স্বপ্ন দেখতে পারে ও চিন্তা-ভাবনাকে স্বপ্ন থেকে বাস্তবে রূপ দিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। যে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হলেই যে অন্যে কিভাবে সমাধান করেছে তা অনুকরণ করে, সে নতুন ধরনের কোনো সমস্যার মুখোমুখি হলে দিশেহারা হয়ে যায়।
যে সেক্টরের সমস্যা সেই সমস্যার সমাধান সবসময় সেই সেক্টর থেকেই আসতে হবে- এমন নয়! নিয়মিত সমস্যার সমাধান অন্য এরিয়া থেকেও বের করে আনা যেতে পারে, যাতে উভয় ক্ষেত্রই উপকৃত হবে। তবে এজন্য দরকার সেতুবন্ধন, মেলবন্ধন তথা একসঙ্গে কাজ করার মানসিকতা।
অজ্ঞতা থেকে আসা জেদি-অনমনীয় মানসিকতা ও একরোখা-একগুঁয়ে প্রবণতাকে অনেকে সাহস ভেবে ভুল করেন। কারণ সংকীর্ণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ থাকাটাই অযোগ্যতা। যতই বুদ্ধিমত্তা থাকুক কাজ শুরুই না করলে কখনো তাতে কোনো সুফল আসবে না। যারা সমস্যা-সঙ্কটের মধ্য দিয়ে তা সমাধান-মোকাবিলা করে করে বড় হন তারাই হুজুগে না মেতে ভালো উদাহরণ তৈরি করেন।
যোগ্য মানুষ নিজের-দলের-জাতির স্বপ্ন-ইচ্ছা পূরণের জন্য উদ্যোগ-পরিকল্পনা নিজে চিন্তা করেই নিতে পারেন। অযোগ্যদের চিন্তা করার ক্ষমতা নেই বলেই কে কী বলে তা গুরুত্ব দেয় বেশি। যিনি সিদ্ধান্ত বারবার পরিবর্তন করায় কোনোটাতেই দীর্ঘসময় লেগে থাকতে পারে না, তিনি সফলতা পর্যন্ত পৌঁছতেই পারেন না। ভালোটা বুঝে ভালোটাই করার প্রবণতা না থাকার ফলে একসময় আত্মবিশ্বাস ধ্বংস হয়ে যায়।
কিছু মানুষ আছেন যারা সারাক্ষণ খাই খাই করেন আর নাই নাই করেন। যা আছে তা থেকে ভালো কিছু বের করে আনার দিকে মনোযোগ না দিয়ে কী নেই তা নিয়ে হা-হুতাশ করেন। এদের যত যাই কিছু থাকুক, সুখ থাকে না!
মানুষকে উপেক্ষা-অবহেলা করে গুরুত্ব না দিয়ে বস্তুতে সুখ খোঁজলে তা কখনও সুখ দিতে পারে না। যে ঠিকভাবে চিন্তাই করতে পারে না, সে কাজ-সময়-অর্জনকে যথাযথভাবে উপভোগ করে সুখী হবে কিভাবে!
নিজেদের সমস্যার সমাধান নিজেদেরকেই করতে হবে। নিজেদের খারাপ-তুচ্ছ দিক ভেবে মন খারাপ না করে উন্নতির সম্ভাবনার দিকে নজর দিতে হবে। আনন্দের জন্য সবসময় সমস্যার সমাধান করে বা সমস্যা কমিয়ে মটিভেটেড থাকাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যার ধরন ভিন্ন হলে সমাধানের ধরনও আলাদা হয়।
পার্টনার তাকেই বানানো উচিত যার ভিশন একই। অনেকে একসাথে অনেক কিছু করতে চেয়ে স্কিল ব্যক্তিকে পার্টনার বানিয়ে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়, কারণ ভিশন ভিন্ন হওয়ায় ফোকাসও ভিন্ন!
কেবলমমাত্র একটা উদ্যোগ সফল করার পরই নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করা যেতে পারে। শুধুমাত্র পার্টনারশিপের সমস্যার কারণে এবং লংটার্মে না দেখায় অনেক সম্ভাবনাময় উদ্যোগ ভেস্তে যায়।
যত উত্তম আইডিয়া বা চিন্তাই থাকুক তা কাজে প্রতিফলিত না হলে নতুন কোনো সম্ভাবনাই সৃষ্টি হয় না। পদক্ষেপ ছোট হলেও লক্ষ্যকে অনেক বৃহৎ হওয়া উচিত। কারণ পদক্ষেপ বড় হলেও লক্ষ্য ছোট হওয়ায় অনেক উদ্যোগই ভবিষ্যতে মুখ থুবড়ে পড়ে। যা উত্তম তা অধমের সাথে জিতে আসলেই কেবল মানুষ ব্যাপকভাবে গ্রহণ করে।
শতভাগ নিখুঁত করতে গিয়ে কাজই অসমাপ্ত রাখা বা কাজ শুরুই করতে না পারার চেয়ে কিছু ভুলত্রুটিসহ একটি কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কোনো মানুষই ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল থাকবেই; বারবার চেষ্টা করে ভুল কমিয়ে আনতে হবে।