‘এদেশ হিন্দুর নয়, মুসলমানদেরও নয়। এ দেশ কে যে নিজের দেশ বলে ভাববে এদেশ তার।
এদেশের কল্যাণ দেখে যার মন আনন্দে ভরে উঠবে এ দেশ তার।
এ যে এদেশ তার।
আর তার এবং তাদের এদেশ যারা এদেশের সাধারণ মানুষের স্বাধীনতার জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছে ও ভবিষ্যতেও দেবে।’
– শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ সেই রক্তে কেনা স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পূর্ণতা পেতে চলেছে। স্বাধীনতা হলো এমন একটি অধিকার যা মানুষকে সঠিক চিন্তা ও তার উপযোগী কর্মের পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং এর প্রতিবন্ধকতাসমূহকে দূর করে।
স্বাধীনতা শুধু ঘোষণা দিয়েই হয়নি। অত্যাচারীর রক্তে সঞ্জীবনী লাভ করেছে স্বাধীনতার বৃক্ষ। স্বাধীনতা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে এসেছে। নতজানু হয়ে বাঁচা অপেক্ষা শির দাঁড়া উচুঁ করে দাঁড়িয়ে মৃত্যুবরণ করাও শ্রেয়। স্বাধীনতা পেয়েও একে অর্থবহ করতে সতর্ক থাকা জরুরী যাতে কোন প্রতিবন্ধকতাই দেশের সার্বিক অগ্রগতি ব্যাহত না করে । দেশ মানুষের সৃষ্টি। দেশ মৃন্ময় নয়, চিন্ময়। মানুষ যদি প্রকাশমান হয় তবেই দেশ প্রকাশিত।
অর্থবহ স্বাধীনতা
স্বাধীনতাই আমাদের শক্তি, সবচেয়ে প্রিয় ও মূল্যবান বস্তু। স্বাধীনতা জন্মগত অধিকার, আজন্ম সাধ, সৈকতবিহীন একটি প্রস্তরময় দ্বীপের মত, উন্নতির শ্বাস-প্রশ্বাস। আলো ব্যতীত পৃথিবী জাগে না, স্রোত ব্যতীত নদী টেকে না, স্বাধীনতা ব্যতীত তেমনি জাতি বাঁচে না। শৃঙ্খল ম্বর্ণ নির্মিত হলেও কেউ বরণ করতে চায় না। মানুষের চিন্তার ,বলার এবং লেখার স্বাধীনতা বিহীন সমাজ পঙ্গু ও পঁচা সমাজ।
স্বাধীনতার বিনিময়ে পরাধীন স্বর্গরাজ্যও যৌবন শক্তি প্রার্থনা করে না। কেননা স্বাধীনতাহীনতায় মস্তিষ্ক এমন একটি কারাগারে পর্যবসিত হয়। যার রুদ্ধ দুয়ারে হাত-পা বাঁধা চিন্তাধারা মাথা কুটে মরতে থাকে। স্বাধীনতা উন্নতির মুখ্য সহায়। মানুষের চিন্তা করিবার ও ব্যক্ত করিবার স্বাধীনতা থাকা আবশ্যক, তদ্রুপ সকল বিষয়েই স্বাধীনতা আবশ্যক যতক্ষণ না কারও অনিষ্ট হয়।
স্বাধীনতার শাশ্বত তীব্র আকাংখা কবির ভাষায়-“স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে কে বাঁচিতে চায়? দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে কে পরিবে পায়?” তাই কথা হলো- স্বাধীন দেশ, স্বাধীন মানচিত্র, স্বাধীন পতাকা থাকার পরও পশু বা দাসের মতো জীবন কাটলে সেই স্বাধীনতা মোটেই অর্থবহ হয় না। স্বাধীনতার প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যকার অনাকাংখিত ব্যাবধান কমিয়ে আনতে দরকার সম্মিলিত প্রয়াস ।
স্বাধীনতার ফসল কার ঘরে?
এখন যাদের বয়স ৪৯ অথবা তার কম, তারা জন্মগ্রহণ করেছেন স্বাধীন দেশের নাগরিকের সৌভাগ্য নিয়ে। তার ওপরে যাদের বয়স কিন্তু ৭৩-এর নিচে, তারা ছিলেন প্রথমে পাকিস্তানের নাগরিক, তারপর স্বাধীন বাংলাদেশের। ৭৩-এর বেশি যাদের বয়স, তারা জন্মেছিলেন পরাধীন ভারতবর্ষে। ১৯৭২ থেকে বাঙালি স্বশাসিত। সেটা কম গৌরবের কথা নয়।
প্রশ্ন হচ্ছে- ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ও ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত রাষ্ট্র তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কিনা। সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১১ তে আছে- ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে। এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে।’ অনুচ্ছেদ-২৭ এ আছে- ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’
৩০, ৩১ এবং ৩২ অনুচ্ছেদেও আইনের আশ্রয় লাভের নিরঙ্কুশ অধিকার, জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ এবং গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির রক্ষাকবচ সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে। এনকাউন্টার, ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ কিংবা গুম সম্পর্কে কোনো অনুমোদনমূলক কথা তো দূরের কথা, ওই শব্দগুলোই সংবিধানে নেই। তাহলে স্বাধীনতার ফসল এখন আসলে কাদের ঘরে?
কী পেলাম আমরা?
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ এক দুর্দান্ত অর্জন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে আমাদের প্রাপ্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এর পাশাপাশি মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, কর্ণফুলী টানেলসহ দেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
শিশু মৃত্যুর হার, মাতৃ মৃত্যুর হার, গড় আয়ুষ্কাল ইত্যাদি মানব উন্নয়ন সূচকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ প্রতিবেশী দেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। আমাদের পোশাকশিল্প, ওষুধশিল্প, সিমেন্ট শিল্প, মাছ, সবজি, ফুল ইত্যাদি পণ্য সারা দুনিয়ায় এখন রপ্তানি হচ্ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ।
বিদেশে কর্মরত নাগরিকেরা যে রেমিট্যান্স প্রতি বছর পাঠান, তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার বিশাল ভান্ডার গড়ে তুলেছি। বিদেশিরা অর্থসাহায্য না দিলেও নিজেরাই পদ্মা ব্রিজসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে সক্ষম। তথাকথিত ‘বিদেশি দাতা দেশগুলো’ আজ আর পরিহাস করে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যা দিতে পারে না।
খাদ্য নিরাপত্তা, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, স্যাটেলাইট, পরমাণু ও সাবমেরিন ক্লাবে যোগদান, ফ্লাইওভার, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নদীর তলদেশে টানেল ও গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপ্লব, এলএনজি টার্মিনাল ও ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের মতো মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাফল্য উল্লেখযোগ্য।
নারীরা কাজে-কর্মে এগিয়ে আসায় অনেক পরিবারেই এখন দুজন উপার্জনকারী সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দারিদ্র্যের চাপ অনেক কমেছে। দেশে প্রায় শতভাগ শিশু এখন প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
আমাদের প্রত্যাশা
২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। ব্যাপক শিল্পায়ন হবে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে। প্রতিষ্ঠানসমূহের দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। গবেষণা বৃদ্ধি ও গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়বে। শ্রমিকের অধিকার, মানবাধিকার, জলবায়ুজনিত নিরাপত্তা এবং সুশাসন কায়েম ও বাস্তবায়ন হবে।
দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে। সরকার অনেক বেশি সহনশীল, গণতান্ত্রিক ও উদার হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা সকলের জন্য গ্রহণযোগ্য করে সাজানো হবে। নানা রকমের সুবিধা নেয়ার জন্য দক্ষতার সঙ্গে দর কষাকষির যোগ্যতা অর্জন করবে। রপ্তানি পণ্যের নানা চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। নতুন নতুন পণ্য রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণ হবে। নতুন নতুন রপ্তানি বাজার তৈরির চেষ্টা হবে। সুশাসন ও জনগণের সব ধরনের অধিকার নিশ্চিত হবে। গণতান্ত্রিক চর্চার ও মানুষের মানবিক অধিকারকে ন্যায্যভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
আমাদের প্রাপ্তি
দিন দিন দুর্নীতির ঘেরাটোপে আটকে যাওয়া। ব্যাংক লুট, শেয়ার মার্কেট লুট কিংবা প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের ঘটনা জনসম্মুখে প্রকাশ পেলেও দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা।
শুধু ভোটাভুটি বা ভোটারবিহীন নির্বাচন। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণকারী সরকার। কার্যকর গণতন্ত্রেও অভাব। ভূলণ্ঠিত মানবিক মর্যাদা। প্রলোভন দিয়ে অথবা ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করিয়ে রাখা। একাত্তরে ছিল মৃত্যুর ভয়, নির্যাতনের ভয়, অপমানের ভয়। স্বাধীন দেশে ভয় ক্রসফায়ারের, মামলার, গুমের, রিমান্ডের, জুলুম ও নির্যাতনের।
বাংলাদেশের সংবিধানে তৃতীয় ভাগে ২৬ নং থেকে ৪৭ (ক) নং অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রেও নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিয়ে বলা হয়েছে। ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো আইন করা যাবে না। আর যদি করা হয়, তবে তা বাতিল হয়ে যাবে। সংবিধানে যেসব মৌলিক অধিকার আছে তা বাস্তবে নিশ্চিত করা যায়নি।
আমাদের করণীয়
অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সাথে কোনোদিন একসাথে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই।
তাতে দেশসেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।
-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি
শিক্ষা খাত, স্বাস্থ্য, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদীয়মান নতুন প্রযুক্তি অভিযোজনের ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
প্রচুর ব্যয় হচ্ছে, বাজেটের কলেবর বাড়ছে, উন্নয়ন প্রকল্প বাড়ছে, কিন্তু ব্যয় কার্যকারিতার দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। ব্যয় অদক্ষতা এটি বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের কৌশলগত সমস্যা। এক্সপেন্ডিচার ইনইফিশিয়েন্সির পেছনে লুকিয়ে আছে- অদক্ষতা, দুর্নীতি, অপচয়, দীর্ঘসূত্রতা। প্রকল্পের ছড়াছড়ি হচ্ছে, কিন্তু সুদক্ষ-কার্যকর প্রকল্প সামনে নিয়ে আসাটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ আমাদের সম্পদ স্বল্প, এজন্য এটাকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহার করে প্রবৃদ্ধির মাত্রা বাড়াতে হবে।
আরএমজি ও রেমিট্যান্স দুটোরই সেলিং পয়েন্ট হলো স্বল্প ব্যয়ের শ্রম। স্বল্প ব্যয়ের শ্রম দিয়ে মানসম্পন্ন মধ্যম আয়ের অর্থনীতি তৈরি করা যাবে না। বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ হলো, লো কস্ট লেবার ইকোনমি থেকে হাই প্রডাক্টিভ ইকোনমিতে উত্তরণ ঘটানো। হাই প্রডাক্টিভ ইকোনমিতে যেতে হলে দুটি খাত খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত।
এ দুটি খাতে প্রচুর খরচ হচ্ছে, কিন্তু মানসম্পন্ন শিক্ষা ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছি না। মানসম্পন্ন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে কৌশলগত চিন্তা পরিষ্কার করা না গেলে লো কস্ট ইকোনমি নিয়ে আমরা যতটা এগোতে পারছি, তাতেই আমাদের আটকে থাকতে হবে। বেশি দূর যেতে পারব না।
বাংলাদেশের তিনটি মূল সম্পদ আছে। এক. অন্ট্রাপ্রেনিউয়াল স্পিরিট। আমাদের উদ্যমী মানসিকতা। এটি অন্যতম বড় সম্পদ। অশিক্ষিত কৃষকই কিন্তু আমাদের কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করেছেন। কারণ অন্ট্রাপ্রেনিউয়াল স্পিরিট ছিল। আরএমজি উঠেছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে এর কারণে। দ্বিতীয়ত, আমাদের আকাঙ্ক্ষা।
অনেক দেশ আছে দারিদ্র্য নিয়ে পড়ে আছে। তকদিরের লিখন, কোনো পরিবর্তন হবে না—এভাবে চিন্তা করে। আমাদের সমাজে আকাঙ্ক্ষা-উদ্দীপনা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের কারণে হোক, সময়ের বিবর্তনে হোক অ্যাসপিরেশনাল সোসাইটি, এটিও কিন্তু একটি অন্যতম সম্পদ। শত ধরনের সমস্যা থাকলেও কেউ বসে থাকতে রাজি নয়। কোনো না কোনোভাবে এগোনোর চেষ্টা করে যাবে। কারণ অ্যাসপিরেশন আছে। এটিও বড় শক্তি।
তৃতীয় একটি সম্পদ আছে। তা হলো সলিউশন মাইন্ডসেট। নিজেরা মিলে সমাধানগুলো বের করার একটি চেষ্টা করা হচ্ছে। এই তিনটিই হলো আমাদের মূল সম্পদ। আজকে এই সম্মেলনে যে কৌশলগত প্রশ্ন করা দরকার তা হলো, এই তিনটি সম্পদকে আমাদের রাজনীতিতে, নীতিনির্ধারণী মহল লালন করছে কিনা, তাদের সহায়তা করছে কিনা, তাদের ক্ষেত্রগুলো সম্প্রসারিত করছে কিনা—এটিই হলো মূল বিষয়।
উপসংহার
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে নতুন আশায় বুক বাঁধতে চাই, লজ্জা-অপমান মুছে, দুর্যোগ কাটিয়ে বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। স্বাধীনতার সঙ্গে ডিগনিটি অব লাইফ—জীবনের মর্যাদা ও অধিকার জড়িত। যে দেশে ‘পুত্রহীনা আর বিধবার কাঁদনে’ ‘মর্মের বত্রিশ বাঁধন’ ছিঁড়ে যায়, সেই দেশেরই একশ্রেণির মানুষ আমেরিকা ও মালয়েশিয়ায় বাড়ি করে আর সুইস ব্যাংকে টাকার হাঁড়ি গচ্ছিত রাখে, সে দেশে স্বাধীনতার অর্থ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সবার কাছে সমান অর্থ বহন করে না।
তথ্যসূত্র
খাদ্য নিরাপত্তা: ঘুরে দাঁড়াতে হবে সবাইকে, আনিসুর রহমান, জনভাষ্য ৫, হৃদয়ে মাটি ও মানুষ, চ্যানেল আই, এপ্রিল ২০১০
বেকারত্ব দূরীকরণে চাই কর্মমুখী শিক্ষা, আনিসুর রহমান এরশাদ, পাক্ষিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পত্রিকা
স্বাধীনতার অর্থ ও মানবিক মর্যাদা, সৈয়দ আবুল মকসুদ, প্রথম আলো, ২১ মার্চ ২০১৭
স্বাধীনতা জন্মগত অধিকার, ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান, প্রথম আলো, ২৮ মার্চ ২০১৪
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাস্তবতা ও প্রায়োগিক প্রসঙ্গ, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ৩০ এপ্রিল ২০১৭
দেশের উন্নয়নে যুব সমাজের করণীয়, আনিসুর রহমান এরশাদ, মাসিক ছাত্রসংবাদ
স্বাধীনতা ও আমাদের প্রত্যাশা, মো: ইমদাদুল খান সোহেল, ২৫ মার্চ ২০১৮
বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম ও আজকের বাংলাদেশ, ড. আতিউর রহমান, ১৬ ডিসেম্বও ২০২০
বাংলাদেশের উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উত্তরণ এবং আমাদের মনোজাগতিক জাগরণ, ৫ মার্চ ২০২১