নতুন জীবন সংসার শুরু করার পর দেখতে দেখতে একসঙ্গে দীর্ঘ নয় বছর কেটে গেছে। কত খুনসুটি! কত আহ্লাদ! বহু চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে দিন দিন চলার পথ বেশ মসৃণ হয়েছে। আন্তরিক ভালোবাসা জানান দিয়েছে- মজবুত শিকড়ের, বিশ্বাসের গভীরতার ও বন্ধনে সুদৃঢ়তার।
কী অদ্ভূত আমরা! বছরের পর বছর গেছে, দিনের পর দিন গেছে; তবে বিষাদ বিরক্তির কিছুই জমা হয়নি ঝুলিতে। বিবাহ বার্ষিকীতে কখনো কেক কাটা হয়নি! ফুলের শুভেচ্ছাহীন ভাবেও কেটে গেছে দিনটি! বড্ড নীরবে!
বিবাহবার্ষিকী পালন করা নেই! শুভেচ্ছা বার্তা নেই! সেলিব্রেশন নেই! সুন্দর চিত্রের কার্ড বিনিময় নেই! ফেসবুকে স্ট্যাটাস নেই! স্মৃতিচারণ নেই! অনুষ্ঠান নেই! অতিথি নেই! বিশেষ দিন হিসেবে বিশেষ উদযাপন ছাড়াও বছরের পর বছর বেড়েছে সুখ ও প্রশান্তি।
আমাদের পথচলায়- জীবনকে মধুর ও সুন্দর করতে কৃত্রিমতা দেখাতে হয়নি। স্মৃতিকাতর হতে অ্যালবামের পাতা উল্টাতে হয়নি। স্বর্গীয় বন্ধন উদযাপন করেছি প্রতিটি সময়, প্রতিটি মুহুর্তে। আনন্দের জন্য কোনো নাটকীয় প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়নি। ঘটা করে কোনো সাজানো আয়োজনও করতে হয়নি।
জীবনসঙ্গী হিসেবে যাকে পেয়েছি জীবন সুন্দর করতে সে যথেষ্ট সচেষ্ট! স্রষ্টার উপহারতো কখনো কম মূল্যবান হয় না, তাছাড়া স্রষ্টাতো আর কখনো সৃষ্টিকে ঠকাতে পারে না। যার সেবা, যত্ম ও পরিচর্যা আমায় চমৎকৃত করে, বিস্ময়াভূত করে। আমাদের সুখের তরি পূর্ণতা দিতে কচি প্রাণ দুটি যুক্তও হয়েছে।
যদি কোনো দম্পতি- প্রতিটি দিনকেই ভালোবাসার বিশেষ দিন মনে করে, তাদের হাসির জন্য নতুন ভোরের প্রয়োজন হয় না। দামি উপহার আর শুভেচ্ছা স্মারকের চেয়েও একটু মিষ্টি হাসি আর মায়া-ভরা চাহনিতে যাদের তৃপ্তি; বিচ্ছেদের কাদা ছোড়াছুড়ি এড়াতে আর আনন্দের অফুরন্ত উৎসের জন্য তাদের সমুদ্র সৈকতে যেতে হয় না বা কৃত্রিম পর্যটনে মুগ্ধতাও লাগে না।
২০১৩ সালের ১৮ জুলাই আমি সেজেছিলাম বর, আরেকজন সেজেছিল কনে। বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবার পর, অচেনা অজানা বন্ধুর নতুন পথে দুজন চলতে শুরু করেছিলাম। আজও পথ চলছি। আল্লাহ কল্যাণ ও মঙ্গল দান করুন। আমীন।