আনিসুর রহমান এরশাদ
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ফাইজার উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বায়োএনটেক কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা তুর্কী বংশোদ্ভূত জার্মান দম্পতি অধ্যাপক ড. উগার শাহিন ও তার স্ত্রী চিকিৎসক ডা. ওজলেম তুরেসি। উগার শাহিন ও ওজলেম তুরেসি দম্পতি মানবতার সেবায় আত্মনিয়োগ করা কিংবদন্তী বিজ্ঞানী। বিজ্ঞান ও মানুষের সেবায় তারা নিবেদিত। একটি সুন্দর পৃথিবীই তাদের আরাধ্য স্বপ্ন। যে কারণে এমনকি নিজেদের বিয়ের দিনটিও তারা ক্যানসার গবেষণাতেই কাটিয়েছিলেন। করোনার টিকার উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের কোটি মানুষের হৃদয়ে আশা জাগিয়ে তুলেন এই দম্পতি।
এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে কোভিডের টিকা উদ্ভাবন করে এই দম্পত্তি অসাধারণ ব্যবসায়িক ও বৈজ্ঞানিক সফলতা অর্জন করেছেন। দিনরাত প্রাণপাত পরিশ্রম করে, না খেয়ে, না ঘুমিয়ে তারা দুজনে এত অল্প সময়ে অসাধ্য সাধন করেছেন, যা মুসলিম উম্মাহর গর্ব করার মতো বিষয়ই বটে। মাত্র ১০ মাসের গবেষণায় টিকা আবিষ্কার করে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটানোয় ইতিহাসের পাতায় এই মুসলিম দম্পতির নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের লড়াইয়ে সময়কে পরাজিত করেছেন তারা। সবচেয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে তারা তৈরি করেছেন নতুন ইতিহাস। আর এই ইতিহাসের শুরুতেই নাম লেখা থাকবে এই দম্পতির। ২০২১ সালে জার্মান সরকার তাদের দুজনকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান নাইট কমান্ডার ফেডারেল অর্ডার অফ মেরিট উপাধিতে ভূষিত করেছে।
ড. উগার শাহিন
৫৫ বছর বয়সী ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ড. উগার শাহিন। তুরস্কের ইস্কেন্দেরুন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র চার বছর বয়সে ইস্কেন্দেরুন শহর থেকে অভিবাসী হিসেবে পরিবারের সঙ্গে জার্মানিতে স্থানান্তরিত হন। বাবা ফোর্ড গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ কর্মী হিসেবে চাকরি করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। ছোট থেকেই উগার শাহিনের তীব্র ইচ্ছা ছিল চিকিৎসক হওয়ার। নতুন অভিবাসী হিসেবে অনেক কষ্টে চিকিৎসক হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বিশ^খ্যাত চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী হয়েছেন।
মেডিসিন এবং গণিত নিয়ে পড়ালেখা করেন ইউনিভার্সিটি অফ কলোগনিতে। ১৯৯০ সালে চিকিৎসাশাস্ত্রে গ্রাজুয়েশন শেষ করেন। দ্রুতই যোগ দিতে হয় কাজে। শাহিন কোলোন বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও এবং হামবুর্গে দীর্ঘদিন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর জারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৯২ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত একজন চিকিৎসক ও গবেষক হিসেবে সেখানে কাজ করেন।
৮ বছর সারল্যান্ড ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে কাজ করার পরে ২০০০ সালে ইউনিভার্সিটি অফ মেইনজে ফ্যাকাল্টি হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর পদে উন্নীত হন। কর্মস্থল থেকেই ১৯৯৩ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এতে থেমে থাকেননি তিনি। মলিকিউলার মেডিসিন এবং ইমিউনোলজি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।
শাহিনের সঙ্গে প্রায় ২০ বছর ধরে কাজ করেছেন মাইনৎসে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকলজির অধ্যাপক ম্যাথিয়েস্ট থ্রিইবাল্ট। তিনি বলেন, ‘শাহিন খুব বিনয়ী একজন মানুষ। বাইরে থেকে তাকে দেখে বোঝার উপায় নেয়। তার ভিশন বাস্তবায়নের জন্য তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তিনি মেডিসিনের আবিষ্কারের জন্য নতুন একটি পথ বের করতে চান।’
ড. ওজলেম তুরেসি
ড. ওজলেম তুরেসি একজন চিকিৎসক, একজন গবেষক, একজন উদ্যোক্তা। এই ইমিউনোলজিস্টের জন্ম জার্মানির ক্লোপেনবার্গে। জন্মের আগেই তার পরিবার জার্মানিতে পাড়ি জমায়। তার বাবা-মা ছিলেন তুরস্কের নাগরিক। ইস্তাম্বুলের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছিলেন ওজলেম। তার বাবা ছিলেন তুর্কি শল্যচিকিৎসক। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও চিকিৎসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সারল্যান্ড ইউনিভার্সিটির চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুষদে এম.ডি ডিগ্রি লাভ করেন।
হামবুর্গে পড়ালেখা শেষে, সেখানেই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। উগার শাহিনের সঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। গোড়াতে বায়োএনটেকের চিফ মেডিকেল অফিসার ছিলেন তিনি। তারপর ক্রমান্বয়ে সায়েন্টিফিক কমিটির চেয়ারপারসন হন। বর্তমানে ৫৩ বছর বয়সী বায়োএনটেকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ওজলেম তুরেসি। রোগ প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। তিনি ক্যান্সার রোগীদের থেরাপি দিয়ে থাকেন।
তিনি ইউনিভার্সিটি অফ মেইনজ এর লেকচারার হিসেবেও কাজ করেছেন। ২০২০ সালের শুরুতে স্বামী ও কোম্পানির সিইও উগুর সাহিনের সাথে ব্রেকফাস্ট করার সময় একদিন সিদ্ধান্ত নেন, সব কিছু ফেলে এখনই কোভিড নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত। অতিমারি দূর করতে দিনরাত তার কোম্পানিতে যারা কাজ করছে তাদের অর্ধেক কর্মীই নারী। টাইম ম্যাগাজিন জানুয়ারি ২০২১ সংখ্যার প্রচ্ছদ করেছে এই নারী গবেষক ও উদ্যোক্তাকে নিয়ে।
কষ্ট-সংগ্রামের জীবন
জার্মানিতে শাহিন কিংবা ওজলেম কারো জীবনই সহজ ছিল না। অভিবাসী হওয়ায় নানা বাধা পেরিয়ে তাদেরকে এগোতে হয়েছে। পশ্চিম জার্মানি ছিল বৈষম্যে ভরা একটি দেশ। স্কুলগুলোতে অভিবাসী ছাত্রদের তুলনামূলক কম নাম্বার দেয়ার প্রচলন ছিল শিক্ষকদের মধ্যে। তারা স্কুল থেকে বেরিয়ে ভালো কিছু করবে সেই সুযোগও কমে যেত এর সঙ্গে সঙ্গে।
জার্মানি কোনো অভিবাসী সহায়ক দেশ নয়। দীর্ঘদিন ধরে জার্মানরা ধারণা করতো যে, এসব শ্রমিক আজকে হোক আর কালকে হোক একদিন তুরস্কে ফিরে যাবে। আবার যখন জার্মানরা বুঝতে পারলো যে, এই শ্রমিকরা আসলে জার্মানিতেই থেকে যেতে চায় তখনো আবার এ নিয়ে নানা হাঙ্গামা শুরু হলো। তাদের নাগরিকত্ব দেয়াসহ নানা নীতিতে জার্মানদের গড়িমসি ছিল স্পষ্ট। তুরস্ক থেকে আসা মানুষদের জার্মানির জন্য বোঝা মনে করা হতো। তবে শাহিন ও ওজলেম জার্মানদের জন্য বোঝা হননি। তারা এখন দেশের গর্ব।
গ্যানিমেড ফার্মাসিউটিক্যালস
গবেষণায় আগ্রহের জায়গা থেকে ড. উগার শাহিন ও ডা. ওজলেম তুরেসি একত্রে ক্যান্সার বিষয়ক গবেষণা শুরু করেন। ক্যান্সার গবেষণার লক্ষ্যেই দুজনে একত্রে ২০০১ সালে গ্যানিমেড ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। ‘মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’নয়া ওষুধ তৈরি করতো প্রতিষ্ঠানটি, যেটি ক্যানসার কোষকে চিহ্নিত করতে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই কাজে লাগায়। তবে ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দেন তারা; এসট্যালাস ফার্মা এটি কিনে নেয়।
বিয়ে ও সংসার
ক্যানসারের চিকিৎসায় একটি ওষুধ তৈরি প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে হামবুর্গের সারল্যান্ড ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে শাহীন ও ওজলেমের প্রথম সাক্ষাত-পরিচয় হয়। ২০০২ সালে বিয়ে করেন উগুর ও ওজলেম। তাদের একজন কন্যা সন্তান রয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিয়ের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে ওই দিনই তারা গবেষণাগারে ঢুকে পড়েছিলেন। সারা দিন তাদের সেখানেই কেটেছিল।
বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্যাপারে উগার শাহিন সবসময় আগ্রহী ছিলেন। আর এজন্যই ২০০৮ সালে জার্মানির মেইনজে জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা করেন। ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কারের জন্য বায়োটেকনোলজি ফার্মটিতে মনোনিবেশ করেন তিনি। বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তিনিই। যার নাম সারা পৃথিবীর মানুষ জানে।
করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পর উগার শাহিন ও ওজলেম তুরেসি দম্পতির প্রতিষ্ঠিত বায়োএনটেক কোম্পানির বর্তমান বাজারমূল্য বেড়ে ২৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন (২ হাজার ৫০০ কোটি ৭২ লাখ) ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সালে এইচআইভির প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন বায়োএনটেক কোম্পানিকে ৫৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিল।
তাদের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে বর্তমানে ১ হাজার ৪০০ গবেষক কর্মরত। বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ড. শাহিন বায়োএনটেককে ইউরোপের সর্ববৃহৎ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। ফাইজারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে করোনা ভ্যাকসিন তৈরির মাধ্যমে সে স্বপ্নের পথে বায়োএনটেক অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলতে হবে।
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন
এই মুসলিম দম্পতির মাত্র কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বায়োএনটেক কোম্পানিটি ইউরোপে খুব একটা পরিচিত না হলেও করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে বিশ্বখ্যাত হয়ে উঠেছে। ২০০০ সালের জানুয়ারিতে শাহিন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন। তখনই তার আশঙ্কা হয় এটি মহামারী রূপ নেবে। সেসময়ই সমাজের জন্য কিছু করার দায়বদ্ধতা থেকেই ভ্যাকসিন প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ভ্যাকসিন গবেষণার কিছু কাজ শুরুও করেন।
মাত্র দুই বছর আগে জার্মানির একটি সেমিনারে মানবদেহের কোষে অবস্থিত আরএনএ সেল সম্পর্কে গবেষণামূলক তথ্য উপস্থাপন করেছিলেন উগার শাহিন। আরএনএ সেল সম্পর্কে মানুষের বিশদ জ্ঞান থাকলে ভবিষ্যৎ কোনো মহামারির হাত থেকে মানব সভ্যতাকে বাঁচানো সম্ভব বলে সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন। সেখানেই পরিচয় হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ফাইজারের সিইও আলবার্ট বোরলার সঙ্গে।
এ বছরের শুরুতে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পরলে আলবার্ট বোরলা বায়োএনটেকের সিইও ড. শাহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সেই আলাপের সূত্র ধরেই শুরু হয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের গবেষণা। অবশ্য তার আগেই গত জানুয়ারিতে চীনের উহানে নতুন করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়ার পরই উগার শাহিন ক্যানসার চিকিৎসার জন্য তৈরি এমআরএনএ ওষুধকে এমআরএনএ ভ্যাকসিনে রূপান্তরের প্রাথমিক উদ্যোগটি নেন। গবেষণায় অগ্রগতি হলে বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার।
স্বীকৃতি ও অর্জন
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের বদৌলতে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের এমন অর্জনে গোটা বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রে চলা এলেও তাঁরা কিন্তু নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথেই এগিয়ে চলেছেন। ফাইজার বায়োএনটেকের করোনাভাইরাসের টিকার উদ্ভাবক উগুর শাহিন ও ওজলেম তুরেসিকে ২০২০ সালের জন্য ‘পিপল অফ দ্য ইয়ার’ তথা ‘বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব’ ঘোষণা করেছে খ্যাতনামা ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফিন্যানসিয়াল টাইমস।
করোনার প্রথম টিকার উদ্ভাবক হিসেবে বিশ্বের দু’টি বিশ্বাসযোগ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পুরো কৃতিত্ব ডা. শাহিন ও ডা. তুরেসির। সবচেয়ে বিত্তশালী ১০০ জার্মানের তালিকায় উঠে এসেছে শাহীনের নাম। করোনা মোকাবিলায় বায়োএনটেকের টিকা সফলতা পাওয়ায় চিকিৎসাবিজ্ঞান কিংবা শান্তিতে নোবেল পুরস্কারও পেয়ে যাতে পারেন তুর্কি উগুর-ওজলেম দম্পতি।
২০১৯ সালে ড. শাহীন ইরানের সর্বোচ্চ সম্মানসূচক মুস্তফা অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন। ‘মুস্তফা অ্যাওয়ার্ড’ বিশ্বব্যাপী মুসলমান গবেষকদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মানিত অ্যাওয়ার্ড বলে গণ্য করা হয়।
সহজ সরল জীবন যাপন
এই সফলতার পরও সাধারণ জীবনযাপন করেন এই দম্পতি। প্রতিদিন তারা বাইকে করে কাজে যান এবং দিন শেষে সন্তানদের কাছে ফিরে আসেন। গবেষণাপ্রেমী এ জুটি বাস করেন জার্মানির একটি ছোট শহরের অতি সাধারণ অ্যাপার্টমেন্টে। এই নিবেদিতপ্রাণ দম্পত্তির স্বপ্ন তাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনটি পৌঁছে যাবে উন্নত কিংবা উন্নয়নশীল নির্বিশেষে পৃথিবীর সকল দেশের জনসাধারণের কাছে।