ইদানিং নতুন একটা শব্দের সাথে পরিচিত হলাম – ক্রাশ (Crush).
কাউকে দেখে যতটুকু মুগ্ধ হলে তাকে পাওয়ার ইচ্ছা জাগে তাকেই নাকি Crush বলে।
ডিকশনারীতে একটু ঢু দিলাম:
Crush: (informal)
a brief but intense infatuation for someone, especially someone unattainable or inappropriate.
আজকালকার ছেলেপেলেরা বেশ সৎ। তারা দিনে ২-৪টা ক্রাশ খেলেও নাকি তা গার্লফ্রেন্ডের সাথে নি:সঙ্কোচে শেয়ার করে। কিন্তু আমরা এটাকে নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে লুকিয়ে রাখতাম। একজনের সাথে প্রেম করে আরেক জনের উপর ক্রাশ খাওয়া? ওরে বাপরে বাপ! এটা হতে পারতো বিশ্বযুদ্ধের পূর্বাভাস।
অথচ, এখন নাকি এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। এটা আর থলের কোন বিড়াল নয়।
এভাবেই ছানাপোনার কাছ থেকে ক্রাশ শিখলাম, সততা শিখলাম, আর সেই সাথে শিখলাম ভাললাগা ভালবাসার বহুমূখী নগ্ন রূপ।
তাহলে এবার ছানাপোনাদেরও শিখাতে চাই…..
তোমাদের ভাবী/চাচীর উপর ক্রাশ খেয়েছিলাম বহু বছর আগে। ক্রাশ বলতে তোমরা যা বুঝ সেরকম ক্রাশ ছিল না সেটা। এটা অনেকটা গায়েবী/ঐশ্বরিক মনে হত আমাদের কাছে। তাই, এরপর আর অন্য কারও উপর অতটা ক্রাশ খাওয়া আমাদের সফটওয়্যারে ছিল না।
যাহোক, ক্রাশ খেলেই প্রেম, আর প্রেম করলেই তখন আমরা বিয়ে করতাম। এর মাঝামাঝি তখন কিছু ছিল না। অবশ্য সামাজিক কারনে যা ছিল তখন লজ্জার তা এখন হয়েছে জীবনের অলঙ্কার। যেমন, ফেসবুকে in a relation, engaged, complicated, break up, devorced etc প্রভৃতি স্ট্যাটাস publicly ঝুলিয়ে দেয় অনেকে। অথচ, নতুন কোন প্রেম হওয়া বা ব্রেক আপ হওয়ার খবর খুব কাছের মানুষ না হলে অন্যদের থেকে তা গোপন রাখতাম আমরা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন নিজেদের অনেক আনস্মার্ট মনে হয়!
আর, আনস্মার্ট ছিলাম বলেই ছাত্রাবস্থায় বিয়ে করেছিলাম। বাড়ি থেকে বিতারিত হয়ে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিভের চাকুরি আর মাস্টার্সের ক্লাস একসাথে চালাতাম। এরপর আরও অনেক ঘটনা….. যাহোক, প্রাচীন কালের সেই ক্রাশের ফসল ছিল আমাদের বিবাহ।
আজ ২৮জুন আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। আল্লাহর কাছে হাজারো শুকর গোজার করি যে, ভিন্ন কোন ক্রাশ আমাদের এখনও বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। আজকালের ছানাপোনার জন্য শুভ কামনা হিসেবে এই পৌরাণিক কাহিনীটি উপস্থাপন করলাম। মুচকী হেসে উড়িয়ে না দিয়ে আমাদের ক্রাশের এরকম হাজারও ঘটনা তোমারা একটু ঘেটে দেখো। কাজে লাগলে লাগতেও পারে।
আমরা অহংকার করছি না, শুধু তোমাদের কাছে নৈতিকতার ধারাবাহিকতা চাচ্ছি। চিরস্থায়ী হোক তোমাদের একটি ক্রাশের সম্পর্ক… আমীন।
লেখকঃ বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের এডিসি সানি সানোয়ার