অবহেলা অবহেলিত ও অবহেলাকর পরিস্থিতি

অবহেলা অবহেলাই। এর পেছনে ব্যাখ্যা থাকুক বা না থাকুক, কারণ থাকুক বা না থাকুক, যুক্তি থাকুক বা না থাকুক, যুক্তিসঙ্গত কোনো প্রশ্ন থাকুক বা না থাকুক, যুক্তিসঙ্গত কোনো উত্তর থাকুক বা না থাকুক। কেউ অবহেলা সহ্য করতে পারে, কেউ অবহেলা সহ্য করতে পারে না।

এক নজরে দেখে নিন লুকিয়ে রাখুন

অবহেলা ইচ্ছাকৃতই হয়

কেউ অবহেলা করেন, কেউ অবহেলিত হন। কেউ অবহেলা পাওয়াকে মেনে নেন, কেউ নেন না। যে অবহেলা করে, সে আসলে যাকে অবহেলা করে- তাকে গুরুত্ব পাওয়ার যোগ্য মনে করেন না। কেউ অবহেলা থেকেও শিখতে পারে, কেউ অবহেলা থেকে শিখতে পারে না। অবহেলা অনিচ্ছাকৃত হয় না, ইচ্ছাকৃতই হয়; অনিচ্ছায় হলে সেটা ভুল মাত্র!

অবহেলিত হওয়া আত্মবিশ্বাসহীনহীনতা থেকে

অবহেলিত অনেকে অবহেলিত হওয়াকেই ভাগ্যের লিখন বলে মেনে নিয়ে সহ্য করতে থাকেন, আবার অনেকে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা-সাধনায় মনোযোগী হন। ফলে অবহেলা মন-মননে ও চিন্তা-ভাবনায় কী প্রভাব-প্রতিক্রিয়া ফেললো তার ওপরই ভাগ্যের গতিবিধি নির্ধারিত হয়। নিজেকেই কেউ যদি অবহেলার যোগ্য মনে করে, আত্মবিশ্বাসহীন তার জন্য অবহেলা অবধারিত।

পরিবর্তনের প্রয়াসের অভাবেই অবহেলা

যে ব্যক্তি নিজের অবস্থা বদলাতে নিজে প্রচেষ্টা চালায় না, তাকে দিনের পর দিন অবহেলা করতেই থাকে! কিন্তু যে দক্ষতা-যোগ্যতা বাড়িয়ে পরিবর্তনের প্রয়াস চালায়, সে অবহেলা কাটিয়ে ওঠতে থাকে। কেউ অবহেলা পেলে হারিয়ে যায়, আবার কেউ অবহেলা পেলে নিরুদ্দেশ না হয়ে নতুন প্রাণশক্তিতে জেগে ওঠে! জীবন একটাই, এটি এতটা মূল্যহীন নয় বা জগতও এতটা সংকীর্ণ নয় যে ধুর ধুর ছাই ছাই করে তার পেছনেই সময়-শ্রম-মেধা অবলীলায় ব্যয় করতে হবে।

অবহেলা পাবারই যোগ্য যিনি

সে অবহেলা পেতেই থাকে, যে অবহেলা পাবারই যোগ্য; অর্থাৎ কর্মে নিষ্ক্রীয়, চিন্তায় পশ্চাদপদ, বিশ্বাসে নিরুদ্যম। মূল্য পাবার সামর্থ্য থাকার পরও মূল্যায়ন না হলেও দেখবেন, সময়ের ব্যবধানে মূল্যায়িত হবেই! অবহেলা পাওয়া- সফলতার পথে হাঁটতেও সহায়ক, ব্যর্থতার পথে হাঁটতেও সহায়ক! কে কোন পথে হাঁটবে তা নির্ভর করে তার জীবন-বেঁচে থাকা-মরণের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির ওপর!

অবহেলার চোখে দেখায় গুনাহ

আসলে অধিকাংশ মানুষ তাই করে যা সে করতে চায় বা পেতে চায়, নিতান্ত বাধ্য না হলে স্বকীয়তা ও ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে অন্যের স্বপ্ন পূরণে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে না। ফলে অবহেলার কারণে অনুভূতিগত ভিন্নতা- কাউকে জিতিয়ে দেয়, কাউকে পরাজয়ের গ্লানিও এনে দেয়! অবশ্য অবহেলার পরও কেউ ফিরে আসলে তাকে নির্লজ্জ না ভেবে সে যে সত্যিকারেই ভালোবাসে তা মনে করতে হবে। সহীহ মুসলিমে আছে- ‘একজন মুসলিমের জন্য এটা বড় ধরনের গুনাহের কাজ যে, সে ওপর একজন মুসলিমকে অবহেলার চোখে দেখে।’

অবহেলার কষ্ট হজমের সক্ষমতা

যে যাকে খুব করে পেতে চায়, সে তাকে সহজে পায় না। আর যাকে খুব সহজে পায়, তাকে সবচেয়ে বেশি অবহেলা করে। কারো কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেলে পাত্তা না দেয়া, আর কাউকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিলে তার প্রত্যাখ্যানের শিকার হন। অবহেলার কষ্ট হজমের সক্ষমতা- জীবনকে কষ্টকর কন্টকাকীর্ণ পথেও দৃঢ়পদে চলে তা মসৃণ করতে সক্ষম করে।

অবহেলা সফলতার অন্তরায় নয়

অবহেলা সফলতার অন্তরায় নয় বরং সহায়ক। কারণ বারুদ থেকে আগুন জ্বালানোর জন্য ঘর্ষণের প্রয়োজন হয়। অনেক বিখ্যাত ও সফল মানুষও জীবনে সীমাহীন অবহেলা পেয়েছেন। অবহেলার গল্পই তাদের বিখ্যাত হতে সাহায্য করছে। কামিয়াবী হওয়া না হওয়া-অবহেলা পাওয়া না পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল নয়, তবে পরিশ্রম-সাধনা করা না করার ওপর নির্ভরশীল।

অবহেলার ক্ষতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে

অবহেলা আপেক্ষিক। একজন একটি ক্ষেত্রে সম্মান-মর্যাদার শীর্ষে অবস্থান করার পরও আরেক ক্ষেত্রে অবহেলা পেতে পারেন। যার সান্নিধ্য পেলে একজন নিজেকে ধন্য মনে করে, আারেকজন তার সান্নিধ্যকে চরম বিরক্তিকর-অসহনীয় মনে করতে পারেন। যেমন- একজন মা যদি সন্তান লালন-পালনের কাজকে অবহেলা করা শুরু করেন, তবে তার ক্ষতিটা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়বে।

অবহেলা সহ্য করা কঠিনই

যে বেশি বেশি অবহেলা করে, সে বেশি বেশি অবহেলাও পায়। অবশ্য যে অন্যকে মোটেই অবহেলা করে না, সেও অবহেলা পায়- তবে তা পরিমাণ-মাত্রায় তুলনামূলক কম। অবহেলা কমই হোক আর বেশিই হোক, অবহেলা সহ্য করা কঠিনই! অবহেলার পাত্র হতে কারোরই ভালো লাগে না। যে মানুষটি নিজের মনে স্থায়ী দাগ কাটে, তার মনেও যে নিজের স্থায়ী দাগ ফেলা যাবে এমনটি নাও হতে পারে।

অবহেলায় ভেঙে পড়া নয়

কিছু মানুষ জীবিতাবস্থায় অবহেলা পায়, মৃত্যুর পরও অবহেলা পায়; কিছু মানুষ জীবিতাবস্থায় অবহেলা পায়, মৃত্যুর পর গুরুত্ব পায়; কিছু মানুষ জীবিতাবস্থায় গুরুত্ব পায়, মৃত্যুর পর অবহেলা পায়। নিজের সাথে অবহেলার যত ঘটনাই ঘটুক না কেন- দুশ্চিন্তা ও মানসিক যন্ত্রণায় ভোগা যাবে না, উদ্বেগের তাড়নায় স্বাস্থ্যহানি ঘটানো যাবে না, বিভ্রান্তিতে ভোগে সমস্যার বেড়াজালে জীবনহানী করা যাবে না।

অবহেলা করলেই আত্মগোপন নয়

কেউ অবহেলা করলেই আত্মগোপনে চলে যাওয়া ঠিক না, লুকিয়ে না থেকে বুক ফুলিয়ে চলার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সবাইতো আর আপনার খেয়াল রাখবে না, যে রাখতে চায় তাকে রাখার অধিকার-সম্মান দিন; যে চায় না সে যার খেয়াল রাখতে ব্যাকুল তার কাছেই যেতে দিন!

কারণ জোর-জবরদস্তি করে মন পাওয়া যায় না, ভালোবাসা পাওয়া যায় না, সম্মান-মর্যাদা পাওয়া যায় না। দুর্বলরা অবহেলায় ভেঙে পড়ে, সবলরা অবহেলাকে পাত্তাই দেয় না আর বুদ্ধিমানরা অবহেলাকে আপন শক্তিতে জ্বলে ওঠার প্রেরণা হিসেবে নেয়!

অবহেলার ফলাফলে ভিন্নতার নেপথ্যে

অবহেলার পর কেউ কেউ নতুন করে অস্তিত্বের জানান দেয়, কারো কারো অস্তিত্বের বিলয় ঘটে। বিপরীত ফলাফলের পেছনে লক্ষ্য ও মনোযোগের কেন্দ্রের ভিন্নতা দায়ী। অবহেলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে কেউ যদি খারাপ কিছুকে বাদ দেয়া এবং ভালো কিছুকে গ্রহণ করতে শিখে- তবে তা সন্দেহাতীতভাবে কল্যাণকর। কারো কাছে অবহেলিত হলে তাকে পুনরায় আর বিরক্ত করা কখনোই ঠিক নয়!

ব্যক্তিত্বহীনের প্রশ্রয়েই অবহেলার সম্পর্ক

যে অবহেলা করে তাকে বেশি প্রশ্রয় দিলে সে তোমাকে নিয়ে হাসিতামাশাও করবে। অবহেলিত হবার পরও অক্ষমতার কারণে যারা উদারতা দেখান তারা একেবারেই ব্যক্তিত্বহীন। যে অবহেলা করে সে কখনোই বন্ধু নয়, সে স্বার্থের কারণে বন্ধুত্বের অভিনয় করে মাত্র। অবহেলিত হয়ে সম্পর্ক রক্ষার চেয়ে একাকিত্ব লক্ষ-কোটি গুন ভালো।

অবহেলা কেটে যায় সাধনার গুণে

কারো কাছে যিনি অযোগ্য, তিনিই কারো কাছে অধিকতর যোগ্য। যিনি কাউকে অযোগ্য বলে অবহেলা করেন, তিনিওতো কারো কারো কাছে অযোগ্য। অন্যের দৃষ্টিতে আসতে কমবেশি সবাই চায়! তাই যোগ্য বিবেচনা করে নিতে হয়। সমাজে অবহেলিত মানুষও সাধনার গুণে বড় হন, যেন গোবরে পদ্মফুল কিংবা ছাই থেকে বেড়ে ওঠা!

অবহেলাকর পরিস্থিতি হতাশার

অবহেলাকর পরিস্থিতি হতাশার। অবহেলাকর কথার মাধ্যমে মন আঘাত পায়, অবহেলাকর কাজের মাধ্যমে হৃদয় ভেঙে যায়; অবহেলাকর আচরণে অন্তর চূর্ন-বিচূর্ণ হয়ে যায়। অবহেলিত কেউ উন্নতির শিখরে উঠলে অবহেলাকারীরা অবাক তাকিয়ে রয়! যে আপনাকে অবহেলা করে, তার জন্য আপনি যতই ত্যাগ স্বীকার করেন না কেন সে আপনাকে অবহেলা করা থেকে খুব সহজে ফিরে আসবে না!

অবহেলা  স্থায়ী নয়

শত অবহেলার পরও নিজের গন্তব্যের দিকে মূল লক্ষ্য থাকলে এগিয়ে যাওয়াই যায়। মনে রাখতে হবে এটাই স্বাভাবিক যে- গতকাল মুখে হাসি ফোটায়েছেন তিনিই আজ যেমন অবহেলা করতে পারেন; আজ যিনি অবহেলা করছেন আগামীকাল তিনি ভালোবাসতেও পারেন। কোনো অবস্থা আসলে অপরিবর্তিত বা স্থায়ী নয়।

অবহেলার জীবন নিরানন্দের জীবন

কেউ কেউ অবহেলাকর মন্তব্য-উক্তি করে তৃপ্তি পান৷ কেউ কেউ দায়িত্বে-কর্তব্যে অবহেলা করে আরামবোধ করেন, অবহেলাকর মুহূর্ত পার হতে বক্রপথ ধরেন, অবহেলাকর মনোভাব নিয়ে চলেন। যিনি যাকে অবহেলা করেন- তাকে অহেতুক অপেক্ষা করান, সবসময় ব্যস্ততা দেখান, তার মতামতের গুরুত্ব দেন না, আলাপের সময়ও তার দিকে মনোযোগ দেন না, মিথ্যে বলে ঠকান, যোগাযোগ নিয়মিত করেন না, অন্যে যোগাযোগ করলেও বিরক্ত হন। অবহেলার জীবন আসলে আনন্দের জীবন নয়!

অবহেলার দেয়াল প্রয়োজনহীনতা থেকে

অবহেলার দেয়ালই বুঝিয়ে দেয় প্রয়োজনহীনতা। তারপরও অনেকে আবেগে নিজের ভূমিকাকে খুব দরকারী মনে করে। যে বিকল্প খুঁজে, সে বিকল্প পায়। তবে অবহেলা খুব যত্নে গড়া সম্পর্ককেও নিমিষেই নিঃশেষ করে। অবহেলা এতটা ভয়ঙ্কর যে- কখনো কখনো কান্নার কারণ হয়, কখনো কখনো রুখে দাঁড়ানোর শক্তি হয়, কখনো কখনো নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়াকে সহজ করে, অন্যের উপর নিজের ভালো-মন্দ নির্ভরকারীরা জীবনকেই অর্থহীন ভাবে । অথচ যার সাথে সময় কাটাতে চাইতে হয় ভিখারির মতো, যার জন্য অপেক্ষা করতে হয় পাগলের মতো, ভালোবাসাকে বিশ্বাস করাতে যার পিছনে লেগে থাকতে হয় জোঁকের মতো- তার কাছ থেকে অবহেলা ছাড়া কিছুই পাবার নেই।

কাছের মানুষের অবহেলা বেশি যন্ত্রণাদায়ক

যে যত বেশি কাছের মানুষ, তার অবহেলা তত বেশি যন্ত্রণাদায়ক। যে অন্যকে বেশি বেশি অবহেলা করে, সে নিজে অবহেলিত হবার পথেই এগিয়ে যায়। নিজের মন নিয়ে অন্যকে খেলা করার সুযোগ তারাই বেশি দেন, যারা অবহেলাকে অবধারিত ভেবে মেনে নেন। অবহেলার সমাধান ঝগড়ায় নেই, প্রতিশোধে নেই; আছে নিজেকে বদলে ফেলায়, নতুন করে সাজিয়ে তোলায়, নিজের প্রতিভাকে মূল্যায়ন করায়, নিজের ভালোলাগার কাজগুলোকে ভালোবাসায়, পরিবর্তনকে মেনে নেয়ায়।

অবহেলা স্পষ্ট হয় ব্যবহারেই

কে কাকে অবহেলা করে তা মুখের ভাষায় বুঝতে বা বুঝাতে হয় না; ব্যবহারেই স্পষ্ট হয়। যাকে তুচ্ছ ভাবে তার সাথেই কঠিন দুর্ব্যবহার করে। কেউ কেউ নিজেকে অবহেলা করার সুযোগ অন্যকে দেয়, কেউ কেউ অবহেলিত হওয়াকে বিনাবাক্য ব্যয়ে বিনাপ্রশ্নে মেনে নেয়, কেউ কেউ অবহেলার কারণে নিজেকে বহু দূরে সরিয়ে নেয়। অবহেলা মানুষের প্রাণোচ্ছ্বাস কমায়, প্রাণচাঞ্চল্য থামায়, ভেতরটাকে ক্ষয় করে ফেলে, দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হয়।

অবহেলিত হওয়া থেকে উত্তরণ

অবহেলিত হওয়াটা বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো। এমনটি হলে- মানসিকভাবে শক্ত হোন, অবজ্ঞায়ও উৎসাহ ও কর্মোদ্দীপনা ধরে রাখুন, মনকে শক্ত রেখে পরিশ্রম করুন। তর্ক না করে কম কথা বলে কাজ দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করুন। অবহেলার কারণ বের করে সমস্যার সমাধান করুন। নিজেকেও আরো ভালোভাবে জানা-বুঝার চেষ্টা করুন।

About আনিসুর রহমান এরশাদ

শিকড় সন্ধানী লেখক। কৃতজ্ঞচিত্ত। কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী। ভেতরের তাগিদ থেকে লেখেন। রক্ত গরম করতে নয়, মাথা ঠাণ্ডা ও হৃদয় নরম করতে লেখেন। লেখালেখি ও সম্পাদনার আগ্রহ থেকেই বিভিন্ন সময়ে পাক্ষিক-মাসিক-ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিন, সাময়িকী, সংকলন, আঞ্চলিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও জাতীয় দৈনিকের সাথে সম্পর্ক। একযুগেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা, গবেষণা, লেখালেখি ও সম্পাদনার সাথে যুক্ত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। পড়েছেন মিডিয়া ও জার্নালিজমেও। জন্ম টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানার হাতীবান্ধা গ্রামে।

View all posts by আনিসুর রহমান এরশাদ →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *