অতি আদরে ঝুঁকিতে নাতি-নাতনি!

নুসরাত শারমিন

নাতি-নাতনি কিছু চাওয়ার আগেই হাজির করে দেন দাদা-দাদী বা নানা-নানী। বাবা-মায়ের কাছে চকলেট চেয়ে না পেলেও তাদের কাছে চাইলে কখনোই আপত্তি করেন না তারা। তাদের এই ভালোবাসা অকৃত্রিম। কিন্তু এই অকৃত্রিম ভালোবাসাই অনেক সময় নাতি-নাতনির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগ্লো এর একটি গবেষণায় এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।

গবেষণায় দেখা গেছে শিশুদের অতিরিক্ত মেদের পেছনে অনেক ক্ষেত্রেই দাদা-দাদী কিংবা নানা-নানী। অতিরিক্ত আদরে তারা বেশি খাইয়ে থাকেন বলেই নাকি এই সমস্যায় ভুগে থাকে শিশুরা। গবেষকরা ইংল্যান্ড, আমেরিকা, চীন এবং জাপান সহ ১৮টি দেশের ৫৬টি পরিবারের উপর গবেষণা চালিয়েছেন। দেখা গেছে শিশুদের বাড়তি মেদের প্রাথমিক কারণ হিসেবে দাদা-দাদী বা নানা-নানী দায়ী না হলেও পরোক্ষ কারণ হিসেবে তাদের ভূমিকা রয়েছে। এমনকি অনেক সময় দেখা যায় নাতি-নাতনির সামনে ধূমপান করছেন তারা। অতিরিক্ত লবণ, চিনি এবং ফ্যাট যুক্ত খাবার দিয়ে তারা নাতি-নাতনিদেরকে খুশি করার চেষ্টা করছেন। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, দাদা-দাদী বা নানা-নানীর কাছে পালিত শিশুরা ব্যায়াম কিংবা খেলাধুলাও কম করছে। ফলে কায়িক শ্রমের অভাবে দেহের মেদ বাড়ছে তাদের।

এক্ষেত্রে অনেক সময় অভিভাবকেরও কিছু করার থাকে না। কারণ তারা নিজেদের বাবা-মায়ের উপর বিশ্বাস করেন এবং তাদেরকে সম্মান করছেন। সপ্তাহে একদিন বেড়াতে যাওয়া আর প্রতিদিন দেখাশোনার মধ্যেও তাই আছে অনেক পার্থক্য।

গবেষণার মূল গবেষক স্টেফানি চেম্বারস এর মতে, ‘দাদা-দাদী বা নানা-নানীর সঙ্গে আলোচনা করা বাবা মায়ের জন্য কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে ধূমপানের বিষয়টি।’ তিনি আরও বলেন, শিশুদের সামনে ধূমপানের এধরণের অভ্যাসে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

দাদা-দাদী বা নানা-নানীর কাছে বেড়ে ওঠা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। তাঁদের কাছ থেকে সামাজিকে এবং নৈতিক শিক্ষা পেয়ে আদরযত্নে বেড়ে ওঠা এসব শিশুরা অন্যদের চাইতে অনেক বেশি সফল হয়। ব্যস্ত বাবা মা যখন সময় দিতে পারেন না, তখন দাদা-দাদী বা নানা-নানীর মুখে রূপকথার গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু একই সঙ্গে যেহেতু সন্তানের স্বাস্থ্যের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ তাই বিষয়গুলো তাদেরকে বুঝিয়ে বললেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

সূত্র:  চ্যানেল আই অনলাইন ও বিবিসি

About পরিবার.নেট

পরিবার বিষয়ক অনলাইন ম্যাগাজিন ‘পরিবার ডটনেট’ এর যাত্রা শুরু ২০১৭ সালে। পরিবার ডটনেট এর উদ্দেশ্য পরিবারকে সময় দান, পরিবারের যত্ন নেয়া, পারস্পরিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা, পারিবারিক পর্যায়েই বহুবিধ সমস্যা সমাধানের মানসিকতা তৈরি করে সমাজকে সুন্দর করার ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পরিবার ডটনেট চায়- পারিবারিক সম্পর্কগুলো হবে মজবুত, জীবনে বজায় থাকবে সুষ্ঠুতা, ঘরে ঘরে জ্বলবে আশার আলো, শান্তিময় হবে প্রতিটি গৃহ, প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মানবিক মান-মর্যাদা-সুখ নিশ্চিত হবে । আগ্রহী যে কেউ পরিবার ডটনেট এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যেকোনো বিষয়ে লেখা ছাড়াও পাঠাতে পারেন ছবি, ভিডিও ও কার্টুন। নিজের শখ-স্বপ্ন-অনুভূতি-অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে পারেন সবার মাঝে। কনটেন্টের সাথে আপনার নাম-পরিচয়-ছবিও পাঠাবেন। ইমেইল: poribar.net@gmail.com

View all posts by পরিবার.নেট →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *