পারিবারিক  ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ দিক

সাধারণত পরিবারের সদস্যরা একে অপরের স্বার্থ রক্ষা করে। তবে যারা স্বার্থ ত্যাগ করে, পরিবারের বৈষয়িক চাহিদাকে অবদমিত করে দেশের স্বার্থে গণমানুষের কল্যাণে, সংগঠনের উন্নয়নকল্পে নিষ্ঠা ও ঐকান্তিকতা নিয়ে কাজ করেন তারা ক্ষণজন্মা মানুষ, নমস্য ব্যক্তিত্ব। তাদের নিঃস্বার্থ অবদানে দেশ সমৃদ্ধ হয়, সমাজ এগিয়ে যায়। মৃত্যু তাদের কাছে পরাজিত হয়। বিশ্বের সব প্রদীপ্ত মানুষ যুগ যুগ ধরে তাদের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নত করে। তারা অসাধারণ মানুষ। লোভ, ভয়, স্বার্থের ঊর্ধ্বে তাদের মৃত্যুঞ্জয়ী অবস্থান। দেশপ্রেমী ও মানবপ্রেমী দরদি মানুষ ভালো পরিবার থেকেই তৈরি হতে পারে। স্বার্থ ও লোভের উর্ধ্বে উঠতে পারলে পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী করা ও সম্পর্কন্নোয়ন করা সহজ হয়। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে পারিবারিক ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি।

জীবন-যাপন পদ্ধতি

ভালো পরিবার অভাবগ্রস্ত আত্মীয়-স্বজনকে সাহায্য করে, মানুষের জন্য কল্যাণকর কাজ করে, মানুষকে অকল্যাণ থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে; এভাবে সদস্যরা আত্মসমৃদ্ধি লাভ করে এবং জীবনে অমৃত স্বাদ উপভোগ করে। পরের কল্যাণে নিবেদিতরা ভোজনবিলাসী হতে পারে না, নিজের উদরপূর্তির চেয়ে ক্ষুধার্তকে খাদ্যদানে বেশি আগ্রহী হন। ভোগে বাড়ে দুঃখ, ত্যাগে বাড়ে মুক্তি। দামি ব্র্যান্ডের পোশাক পরিধানে আভিজাত্যের চেয়ে বস্ত্রহীন পথশিশুদের মুখের হাসি কম আনন্দদায়ক নয়। যে অসৎ-বদ, যার অধঃপতন নিশ্চিত; তার ভবিষ্যৎও চরম অনিশ্চয়তার।

এমতাবস্থায় বাবা-মা সন্তানকে সঠিকভাবে বাঁচতে ও চলতে-ফিরতে শেখাতে পারেন। নিজেদের কাজ-কর্মের মাধ্যমে বাস্তব উদাহারণ হয়েই সন্তানদের প্রকৃত শিক্ষাদান করা যায়। শুধু মুখে বলে, উপদেশ-পরামর্শ দিয়ে সন্তানদের শেখানো যায় না। সন্তানরাও জানে মা-বাবাও তাদের মতই মানুষ, তাই তারা বাবা-মাকে সবক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিখুঁত হয়ত মনে করে না; তবে তারা একটি পর্যায়ে প্রত্যাশা করে। তাই বাবা-মাকে সেই প্রত্যাশার নূন্যতম মানের নিচে যাওয়া ঠিক হবে না। জীবনে হাজারো ব্যর্থতা সত্ত্বেও সন্তানদের জন্য ভালো কিছু উদাহরণ স্থাপন করা উচিত হবে।

বাবা-মায়েরা সঠিকভাবে সন্তানদের দায়িত্ববান ও সুঅভ্যাস সম্পন্ন করে গড়ার প্রচেষ্টা চালালে শিশুরা অবশ্যই দায়িত্ববোধ সম্পন্ন ও অনুগত হবে। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব পালন করতে হবে, বয়স্কদের প্রতি দায়িত্বও মনে রাখতে হবে। পরিবারের সবাই মিলে ভালো থাকার জন্য কাজ করা পরিবার-কেন্দ্রিক ভালো অনুশীলন। পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্যও দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে পরিবারের বড়দের অন্যদের দুর্বলতা ও সামর্থ্য, প্রয়োজনীয়তা, পছন্দ ও উন্নতি বুঝতে হয়। শিশুদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে পরিবারগুলোর অনন্য ভূমিকা রয়েছে।

মাতাপিতা অসুস্থ সন্তানদের মানসিক সহায়তা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে;  রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসেবা দেয়, অসুস্থতার সময়ে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করে। পরিবার সবার জন্য, সব বয়সীর জন্য। পরিবার মানবাধিকার শেখায় এবং মানুষের মানবিক গুণাবলি জাগ্রত করে। গৃহহীন মানুষ, শিকড়চ্যুত বা ঠিকানাহীন মানুষ প্রকৃত পারিবারিক পরিবেশ পায় না।

হালাল জীবিকা

হালাল রিজিক দ্বারা রক্ত-মাংস পবিত্র হয়। ‘অর্থতেই সব সুখ ধারণাটা সঠিক নয়। শুধু অর্থের  জৌলুস দেখেই তৃপ্তির ঢেঁকুর গেলা নয় বরং অর্থের উৎস ভালো না মন্দ সেটিও বিবেচনায় আনা উচিত। অর্থ থাকলেই সম্মান পাওয়া যায় না। অভাবীদের কল্যাণে অর্থ ব্যয় না হলে আতঙ্ক গ্রাস করে, উৎকণ্ঠা বাড়ে।  অর্থের পিছে পাগলপারা হয়ে ছুটে শরীর নষ্ট করা অযৌক্তিক। কারণ সুস্থ শরীরই পারে সুখ-শান্তি-আনন্দকে উপভোগ করতে। অর্থের জন্য জীবন নয়, জীবনের জন্যই অর্থ। তারপরও অর্থের পিছনে বিরাম বিরতিহীন ছুটে চলে মানুষ! একজনের অর্থ উপার্জনের কোনো কৌশল যদি কারো হালাল জীবিকার জন্য মরণফাঁদ হিসেবে দেখা দেয়া অগ্রহণযোগ্য। অর্থের লোভে বন্ধুও শত্রুতে পরিণত হয়, আপনজন পর হয়, পর আপন হয়। স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে শত্রুর সাথেও গলাগলি ধরে চলতে আপত্তি থাকছে না। অর্থের প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মানুষ জীবনে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। অর্থ প্রেম অনেক মানুষকে মানবিকতা বিবর্জিত যান্ত্রিক মানুষে পরিণত করে।

হালাল অর্থ উপার্জন বা হাসিলের প্রত্যাশা ব্যক্তিকে সক্রিয়-কাজে-কর্মে গতিশীল রাখে, কর্মতৎপর ও ব্যস্ত রাখে। আসলে অর্থ তো জীবনেরই জন্য। সেই জীবনকে বিপন্ন করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রয়াস মারাত্মক ক্ষতিকর নিঃসন্দেহে। অর্থকে মুখ্য ধরে জীবনকে গৌণ জ্ঞান করা সমীচীন নয়।  নিজের জীবন, সময়কে তুচ্ছ জ্ঞান করে সবার উপরে অর্থকে স্থান দেয়া মানে মানুষকেই ছোট করা । এতে সৃষ্টির অপমান, স্রষ্টার অপমান। জীবন মানে সময়ের সমষ্টি। অর্থ-সম্পদ ব্যবহার করে অনেক মানুষে সময়কে, মেধাকে, কিনে নেয়া যায়। অর্থাৎ একজন মানুষ অর্থশক্তির জোরে আরেক মানুষের কর্মঘণ্টা, সময়কে তথা জীবনকে, জীবনের একটি অংশকে ইচ্ছামতো নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন। যার অর্থ নেই সে অনেক সংখ্যক মানুষকে ব্যবহার করতে পারেন না। এক্ষেত্রে একজনের অর্থ যেহেতু আরেকজনের সময়কে কিনে নিতে পারে তাই অনেকে বলতেই পারে অর্থের শক্তিই বেশি। আসলে ব্যাপারটাকে এতটা সরলীকরণ করে ব্যাখ্যা দেয়া যায় না। সময় যদি না থাকে, জীবনই যদি না থাকে তবে টাকা দিয়ে কী করবেন? প্রাণহীন হাত মানুষের কাছে তার অর্থ-সম্পদ, মূল্যহীন বিবেচিত হয়। আমি আপনাকে যত টাকা চান, যত অর্থ চান দেব। আপনি কি আমাকে একজন টমাস আলভা এডিসন কিংবা আলবার্ট আইনস্টাইন দিতে পারবেন? পারবেন না? অর্থাৎ কিছু জীবন, কিছু মানুষের সময়কে অর্থমূল্যে পরিমাপ করা যায় না।

আমরা দুই ধরনের মানুষ দেখি। একধরনের মানুষের জীবনও সময়ের চেয়ে মনে হয় যেন টাকাই বেশি মূল্যবান। তাই টাকার যেমন মায়া, সময়ের প্রতি, জীবনের প্রতি দরদের পরিমাণ অতটা নেই। আবার আরেক ধরনের মানুষের সময়ের দাম, জীবনের দাম বেশি। যাদেরকে অর্থ দিয়ে পরিমাপ করা যায় না, কেনা যায় না। যারা অর্থের বিনিময়ে আরো মানুষের শ্রম,মেধা, সময়কে কিনে নিতে পারেন। যিনি টাকার কাছে নিজের সবকিছু বিক্রি করেন আর যিনি অন্যের জীবন ও সময়কে টাকার বিনিময়ে সবকিছু বিক্রি করেন আর যিনি অন্যের জীবন ও সময়কে টাকার বিনিময়ে ক্রয় করে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেন দু’জন সমান নয়। হালাল রিযিকের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। মায়ের ধমনিতে একগ্রাস বে-আইনি বা হারাম খাবার ও পরবর্তীতে সন্তানের স্থায়ী বা অস্থায়ী দুর্নীতির কারণ হয়ে উঠতে পারে।

অধিকার প্রতিষ্ঠা

ইমাম সাজ্জাদ (রহ.)১৩০ পিতা-মাতার ওপর সন্তানের অধিকার সম্পর্কে বলেছেন: ‘আর তোমার সন্তানের অধিকার হলো এটা জানবে যে, সে তোমার থেকেই এবং এই দুনিয়ায় তোমার সাথেই সম্পর্কযুক্ত, ভালো হোক আর চাই মন্দ হোক। তোমার উপরই তার পৃষ্ঠপোষকতার ভার। তাকে ভালভাবে প্রতিপালন এবং তার মহাপ্রতিপালকের প্রতি নির্দেশনা দানের মাধ্যমে এবং তাকে তোমার ব্যাপারে ও তার নিজের ব্যাপারে আনুগত্যের ক্ষেত্রে সাহায্য করার মাধ্যমে তুমি সওয়াব লাভ করবে। আর অবহেলা করলে শাস্তি পাবে। কাজেই তার জন্য এমন কাজ করো যাতে অস্থায়ী এ দুনিয়ায় তার সুফল পায়, আর তোমার ও তার মধ্যে সম্পর্ককে শোভামণ্ডিত কর, যাতে প্রতিপালকের কাছে তাকে উত্তমরূপে পৃষ্ঠপোষকতা এবং তার থেকে যে খোদায়ী ফল লাভ করেছ তার কারণে ক্ষমার পাত্র হতে পারো।’ যার যা অধিকার তা তাকে দিতে হবে।

পরিবারের জন্ম তথা উৎপত্তি বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে। সামাজিক জীবনের প্রাথমিক বুনিয়াদ বৈবাহিক সম্পর্কের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ইসলাম সমাজ বিবাহ প্রথাকে সহজতর করে দিয়েছে। কতিপয় নিকটাত্মীয় এবং পৌত্তলিক নারী ব্যতীত সকলের সাথে বিবাহ বন্ধনকে বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। অতঃপর পারিবারিক জীবনে যদি কোন প্রকার বিঘ্নের সৃষ্টি হয়, যাতে কোন অবস্থাতে ঐক্যবিধান সম্ভব হয়ে না ওঠে, তাহলে পুরুষের জন্য তালাক এবং স্ত্রীর জন্য ‘খোলা’র তথা দেনমোহর মাফ করে দেয়া বা অন্য কোন অর্থ বা সম্পদ দানের মাধ্যমে স্বামীর  নিকট তালাক গ্রহণে  অধিকার ইসলামে স্বীকৃত রয়েছে। এ ভাবেই ইসলাম নারী-পুরুষের অধিকারকে সংরক্ষণ করেছে। ইসলাম পবিত্র বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে সামাজিক পবিত্রতা রক্ষার যে সুন্দরতম বিধান দিয়েছে তার ব্যতিক্রমে সামাজিক পবিত্রতা ক্ষুণ্ন হওয়া স্বাভাবিক। তাই সে এ পন্থায় নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার ফলে উদ্ভূত সমস্যা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করেছে এবং বিবাহ পদ্ধতিকেও সহজ করে দিয়েছে। এমনকি এক স্ত্রীতে যদি কারও বাস্তব অসুবিধা থাকে সেক্ষেত্রে তাকে একাধিক স্ত্রী গ্রহণেরও অনুমতি দিয়েছে। তবুও যদি কেউ শরীয়তের নিয়ন্ত্রণসীমা অতিক্রম করে অবৈধ যৌন সম্ভোগে লিপ্ত হয় তাহলে তার জন্য কঠিনতম শাস্তির ব্যবস্থা ইসলামে রয়েছে। ইসলামী শরীয়ত এরূপ অপরাধীর জন্য কশাঘাত এবং প্রস্তর আঘাতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান দিয়েছে।

অপর পক্ষে নারীর ওপর অর্পিত হয়েছে ঘরকন্না, শিশুপালন, শিশুর শিক্ষা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাংসারিক দায়িত্ব। মহানবী (সা.) বলেছেন- নারী তার স্বামীর গৃহের কর্ত্রী হিসাবে তার স্বামী ও সন্তানদের দায়িত্বশীল। মহানবী (সা.) বলেন- নারীর জন্য জিহাদ ও সংগ্রাম হল উত্তম পরিবার ব্যবস্থাপনা। হযরত আলী রা. বলেছেন: নারীর জন্য জিহাদ হল উত্তমরূপে সংসার পরিচালনা করা।   তিনি নারীদের প্রকৃতি সম্পর্কে বলেছেন: নারীদের ওপর তার সাধ্যাতীত বোঝা চাপিয়ে দিও না। কেননা, তারা বসন্তের ফুলের ন্যায়, বলবান বীর নয়।

ইসলাম নারীর ওপর পর্দার নির্দেশ জারি করেছে এবং তাকে সংসারের অভ্যন্তরীণ দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করেছে। এ ছাড়া ইসলাম স্বাভাবিক অবস্থায় নারীকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করেছে, নিষেধ করেছে তার অলংকার ও রূপ সৌন্দর্যের প্রদর্শনী করতে। বিশেষ প্রয়োজনবশত বাইরে যেতে হলেও পর্দা রক্ষা করে যেতে বলা হয়েছে: ‘নিজ নিজ ঘরে অবস্থান কর। অন্ধকার যুগের নারীরা যেভাবে সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বাইরে ঘোরাফেরা করত তদ্রƒপ কর না।’

পিতা-মাতার সাথে ছেলে-মেয়েদের সম্পর্ক ও ব্যবহার সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে যে, তাদের (মাতাপিতাকে) ‘উহ্’ করার মতো কষ্টদায়ক কথাও যেন বল না।  অর্থাৎ তোমাদের কথা এবং কাজে এমন কিছু কর না যা তাদের জন্য মনোকষ্টের কারণ হতে পারে। কুরআনের নির্দেশ হচ্ছে: ‘তাদের সামনে ভালোবাসার সাথে নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল: হে আমাদের পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’  এ ছাড়া পিতা-মাতা যতক্ষণ পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা ও মূলনীতির স্পষ্ট বিরোধী কোন নির্দেশ না দেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের আদেশ অমান্য করা যাবে না।

ছেলে-মেয়েদের সৎ ও উপযুক্ত নাগরিকরূপে গড়ে তোলার জন্য পিতা-মাতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। খাদ্যাভাব এবং দারিদ্র্যের ভয়ে শিশু তথা সন্তান-সন্ততিকে হত্যা করতে নিষেধ করেছে। এরূপ কর্মকে অমার্জনীয় অপরাধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। পিতা-মাতার অবশ্য কর্তব্য হচ্ছে তাদের ছেলেমেয়েদের ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া এবং অন্যায় ও অপকর্ম থেকে বিরত রাখা।

কোনো মাতা- পিতার পক্ষেই সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহণে দু:খিত হওয়া বা সন্তানের আগমণকে একটি বিপদ বা বোঝা মনো করা কখনো উচিত নয়। মন্দ লোকের সন্তান মন্দই হয়-এ চিন্তাধারা কোনোক্রমেই সঠিক নয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যাকে সন্তান দান করেছেন তার কাজ হচ্ছে তার ভালো নাম রাখা, তাকে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া এবং বালেগ হলে বিবাহ দেয়া। বালেগ হবার পর বিবাহ না দেয়ায় কোনো গুনাহতে লিপ্ত হলে এর শাস্তি পিতার ওপরই বর্তায়।’ বিলম্বে বিবাহের পরিণাম খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি।

সমাজের ওপর মাতৃত্বের অধিকার

পিতা-মাতার দেখাশোনা করার দায়িত্ব পুরো সমাজব্যাপী বিস্তৃত। সমাজের দায়িত্ব হচ্ছে- সন্তান প্রসব পর্যন্ত নারীর মাতৃত্বের যত্ন নেওয়া এবং শান্তি ও নিরাপত্তার মাঝে  তাকে খাদ্য, চিকিৎসা ও সামাজিক সেবা দিয়ে সহযোগিতা করা। কর্মজীবী মাকে গর্ভাবস্থায় চাকরির কাজ হালকা করা, প্রসবের পর উপযুক্ত মাতৃত্ব ও দুগ্ধপানকালীন পূর্ণ বেতনসহ ছুটি দেয়া ইত্যাদি। মা সন্তানের কাছে তার স্বাস্থ্য, যৌবন ও মান্তি সবই দিয়ে দেন, কিন্তু এসবের জন্য খোঁটা দেন না। সন্তানের ঘুমের জন্য রাাত জাগা, সন্তানের শান্তির জন্য কষ্ট করা, সন্তানকে খাওয়ানো ও বড় করার জন্য নিজে ক্ষুধার্ত থাকাকেও উপভোগ করেন মা। বার্ধক্যে দুর্বল পিতা-মাতা দেখাশোনা ও যত্নের মুখাপেক্ষী হলে সদ্ব্যবহার ও সদাচরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসময় তাদের অনুভূতি খুবই আবেগপ্রবণ ও সংবেদনশীল থাকায় যেকোনো অনুপযুক্ত কথা ও বিরক্ত প্রকাশ অনুচিৎ।

সমাজের ওপর পিতৃত্বের অধিকার

যদি  পিতা সংকটে পতিত হন এবং স্ত্রী-সন্তানের অধিকার আদায়ে অক্ষম হয়ে পড়েন,  তবে সমাজের কর্তব্য হলো তার প্রতি সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া; যাতে পিতা সামাজিক অবস্তান অনুযায়ী উপযুক্তভাবে সন্তানের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সকল অধিকার ন্যায়সংগতভাবে আদায় করতে পারে।

সন্তানের অধিকার

জন্মের পর প্রত্যেক শিশুর অধিকার হচ্ছে তাকে দেখাশোনার জন্য একজন পিতা এবং তাকে সস্নেহে প্রতিপালনের জন্য একজন মা থাকা। সন্তানকে তার পিতা-মাতার কোনো একজন থেকে বঞ্চিত করা গুরুতর অপরাধ। প্রকৃত মা  ও প্রকৃত পিতা আবশ্যক। অবিবাহিত মাতৃকুল সন্তানকে পরিচয় সঙ্কটে ফেলে দেয়। তালাকপ্রাপ্ত হলে স্বামীকে কষ্ট দেওয়ার জন্য বা অন্য পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় বলে সন্তানকে বুকের দুধ পান করানো থেকে বিরত থেকে সন্তানের কোনো কষ্ট বা ক্ষতি করতে পারবে না মা। সন্তানের মাথায় বাবা বা মা সম্পর্কে এমন সব কথা ঢুকিয়ে দেওয়া ঠিক না, যার ফলে সে পিতা বা মাতা অথবা তাদের আত্মীয় স্বজনদের অপছন্দ করতে শুরু করে। অনেকে বিচ্ছেদের পরও সন্তানকে প্রাধান্য দিয়ে পুনরায় বিবাহ  করে না। পিতৃত্ব আর মাতৃত্বে গাফিলতির কারণে পিতা-মাতার অবহেলা বা স্নেহ বঞ্চিত হয় সন্তান। সন্তান যত বড়ো হতে থাকে, পিতার দায়িত্বও তত বাড়তে থাকে; আস্তে আস্তে বাবার দায়িত্ব মায়ের চেয়ে বেশি হতে থাকে। এমন যেন না হয়-পিতা সন্তানের ব্যাপারে কঠোর নীতি অবলম্বন করবে, আর মাতা শুধু আদর-সোহাগের নীতি অবলম্বন করবে; বরং উভয়ের উচিত মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা।

কোনো কোনো পিতা মনে করে, তার দায়িত্ব কেবল সন্তানের বস্তুগত চাহিদা মেটানোর মাঝেই সীমাবদ্ধ। কবি আবুল আতাহিয়া বলেন, ‘যৌবন, অবসর ও সম্পদের সুলভ্যতা একজন মানুষের নষ্ট হওয়ার জন্য অনেক বড়ো কারণ।’ নীলনদের কবি হাফেজ ইবরাহিম বলেছেন- ‘মা এমন এক বিদ্যাপীঠ, যাকে যথাযথভাবে প্রস্তুত করার মানে হলো উত্তম চরিত্রের একটি জাতি প্রস্তুত করা।’

শিশুদের অন্যতম অধিকার হলো- তাদের জন্য যথেষ্ট খেলাধুলার সুযোগ করে দেওয়া। বর্তমান যুগে বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলনা বেরিয়েছে, যেগুলোতে বুদ্ধি ব্যবহার করতে হয়।  ছোটোদের জন্য এসব খেলনার ব্যবস্থা করাও উত্তম। সন্তানের বয়স ও সক্ষমতা অনুযায়ী কম্পিউটারে উপযুক্ত খেলা বাছাই করে দেওয়া যেতে পারে। সন্তান প্রতিপালনে  মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অপ্রয়োজনীয়। ভালো ব্যবহার দূরে কথা, অনেকের কন্যাসন্তান হবার সংবাদ শোনামাত্রই মুখ অন্ধকার হয়ে যায়। অথচ মেয়ের স্বীকৃতি না দিলে মায়ের স্বীকৃতিও দেয়া হয় না। কন্যা সন্তানের সাথে কোমলভাবে কথা বলা,  ভালোবাসা দেখানো, আত্মবিশ্বাস তৈরি করে দেয়া, বিশ্বাস করা, প্রশান্তি নিশ্চিত করা, দয়ার্দ্র আচরণ ও সুন্দর ব্যবহার করার মাধ্যমেই হওয়া যায় সর্বোৎকৃষ্ট পিতা। বৈষম্য চর্চা না করার সৌন্দর্যকে অস্বীকার করলে কন্যাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে, তাদের প্রতি বাবার হৃদয় হতে হবে নমনীয়। সন্তানের অধিকারসমূহ ১. সুযোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে গড়ে ওঠতে সন্তানের কদর ও মূল্য পাওয়া ২. লালন পালন ৩. সুন্দর আচরণ ৪. ভালো নাম রাখা ৫. স্নেহ ও ভালোবাসা ৬. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ৭.বিবাহ

দুগ্ধদান ও দুধ মা

সন্তানকে সব ধরনের এলাার্জি, পেটের ব্যথা ও বদহজম থেকে মুক্ত রাখতে বুকের দুধ পান করান। শিশু যার দুধ খাবে তার সাথে শিশুর মায়ের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হবে। তার দুধ পিতা, দুধ ভাই, দুধ বোন ইত্যাদি দুধ সম্পর্কীয় আত্মীয়দের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হয়ে যাবে বলে বলা হয়েছে ফাতাওয়ায়ে শামীতে।  বুকের দুধ একই সাথে খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসা, জীবাণুরোধী, জীবাণুনাশক, সম্পূর্ণ নিরাপদ, শিশুর দেহমনের সঠিক বৃদ্ধি  ও বিকাশের নিশ্চয়তা দানকারী আশ্চর্য এক টনিক। যা শিশুর দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়, কিছু মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ করে, পাকস্থলী-খাদ্যনালী ও ফুসফুসের রোগ কম হয়, প্রাণঘাতী ডায়রিয়া-শ্বাসনালীর সংক্রমণ-কানপাকা রোগ কম হয়। অন্য দুধ শিশুর দেহে এ্যালার্জি তৈরি করে, ডায়রিয়ার ঝুঁকি ৩০ গুন বাড়ায়, দেহকে অতিরিক্ত মোটা করে, হৃদরোগের সৃষ্টি করে। গরুর দুধের আমিষ শিশুদের ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ; এছাড়া হার্টের করোনারি ডিজিজ, স্নায়ুরোগ ও আকস্মিক মৃত্যু রোগ সিডসের সহায়ক। শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট হবার ভয়ে শিশুকে দুধ খাওয়াতে মায়েদের আগ্রহী না হওয়া আশ্চর্য কথা। সন্তানের ভবিষ্যতের চেয়ে দেহের সাময়িক সৌন্দর্য বড়!

মায়ের অধিকার

পিতার তুলনায় মায়ের তিনগুন বেশি অধিকারের কারণ ১. মা কষ্ট স্বীকার করে গর্ভে স্থান দিয়েছে। ২. কষ্ট স্বীকার করে তাকে জন্মদান করেছে। ৩. মা তাকে নিজের দুধ পান করিয়েছে। শিশুর রক্ষণাবেক্ষণ ও তার লালন-পালনে সুব্যবস্থার সেবাদানেই মায়ের প্রকৃত কৃতিত্ব ও সাফল্য। সাধারণত মায়ের আবেগ নাজু ধরনের হয়ে থাকে। সামান্য কথাতেই তাদের অন্তরে আঘাত লাগে। মায়ের আবেগ ও অনুভূতি, অভ্যাস ও মন এবং পছন্দ-অপছন্দকে সম্পূর্ণরুপে লক্ষ্য রাখা উচিৎ। মাকে দু:খ-কষ্ট দেয়া, অবাধ্য হওয়া এবং অন্তর ক্ষত-বিক্ষত করার চিন্তাও যাতে মনে না আসে। মায়ের সাথে শুভ আচার-আচরণ করতে হবে। যথাসম্ভব কৃতজ্ঞতা, আনুগত্য ও সু-আচরণের প্রমাণ দিতে হবে।

পিতা-মাতার অবাধ্যতা মারাত্মক পাপ, এর শাস্তি দুনিয়াতেও অবশ্যম্ভাবী। মা-বাবার খেদমত করা অত্যাধিক মর্যাদাপূর্ণ কাজ। তাদের সার্বিক কল্যাণের প্রতি লক্ষ্য রাখা, ভালোবাসার দৃষ্টি রাখা, প্রয়োজনে অর্থনৈতিক সাহায্য করা, সামর্থ্য থাকলে তাদের ঋণ পরিশোধ করা, কোমল স্বরে আলাপ-আলোচনা করা কর্তব্য। সন্তান লাল-পালনের অর্থ হচ্ছে দুই ধরনের দায়িত্ব পালন করা। ১. শিশু প্রতিপালনের খিদমত ২. শিশু লালন-পালনের খরচ বহন করা।

সম্পত্তির ওয়ারিশ

কোনো মুসলমান মারা গেলে তার সম্পত্তি বণ্টনের আগে সম্পত্তি থেকে তার দাফন-কাফনের যাবতীয় খরচ মেটাতে হবে। তিনি যদি জীবিত থাকা অবস্থায় ধার-দেনা করে থাকেন তবে তাও রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে পরিশোধ করে দিতে হবে। তার স্ত্রী বা স্ত্রীদের দেনমোহর পরিশোধিত না হয়ে থাকলে বা আংশিক অপরিশোধিত থাকলে তা সম্পূর্ণ পরিশোধ করে দিতে হবে। মৃৃৃৃৃৃত ব্যক্তি কোনো দান কিংবা উইল করে গেলে তা প্রাপককে দিয়ে দিতে হবে। এর পরে মৃত ব্যক্তির অবশিষ্ট সম্পত্তি ফারায়েজ আইন অনুযায়ী তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে।

উত্তরাধিকার লাভকারী নিকটাত্মীয়তার সম্পর্ক থাকা ২৫ শ্রেণির লোকের মধ্যে ১৫ শ্রেণির পুরুষ ও ১০ শ্রেণির নারী রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে যারা ওয়ারিশ: পুত্র, পৌত্র, পিতা, দাদা, আপন ভাই, বৈমাত্রেয় ভাই, বৈপিত্রেয় ভাই, আপন ভাইয়ের পুত্র, বৈমাত্রেয় ভাইয়ের পুত্র, আপন চাচা, বৈমাত্রেয় চাচা, আপন চাচাত ভাই, বৈমাত্রেয় চাচাত ভাই, স্বামী, মুক্তিদানকারী মুনিব। নারীদের মধ্যে যারা ওয়ারিশ: কন্যা, মাতা, পৌত্রী, দাদী, নানী, আপন বোন, বৈমাত্রেয় বোন, বৈপিত্রেয় বোন, স্ত্রী, মুক্তিদানকারিনী। যে সব আত্মীয় ওয়ারিশ হবে না: মৃতের সৎপুত্র ও কন্যা অর্থাৎ স্ত্রীর প্রাক্তন স্বামীর সন্তান, সৎপিতা, মৃত মহিলার সৎপুত্র ও কন্যা, সৎমা, মৃতব্যক্তির শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালিকা, মৃত মহিলার শ্বশুর শাশুড়ি দেবর ননদ ও অনুরুপ পুত্রবধূ, ভাবী, পোষ্য পুত্র ও কন্যা, ধর্ম পিতা-মাতা।

দুইভাবে মানুষ সম্পদের উত্তরাধিকার পায় তার একটি হলো- সম্পদের মালিক মৃত্যুবরণ করলে। আর দ্বিতীয়টি হলো- মৃত্যুকালে ওয়ারিশদের জীবিত থাকা। কাজেই সম্পদের মালিকের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তার সম্পত্তিতে ওয়ারিশদের হক প্রতিষ্ঠিত হবে না। মৃতব্যক্তির কোন উত্তরাধিকার না থাকলে এবং তা তিনি জীবিতকালে কাউকে না দেয়ার ব্যবস্থা করে গেলে সরকার তার সম্পত্তির ওয়ারিশ হবে।

বন্টনযোগ্য সম্পদ থেকে প্রথমে অংশীদারগণকে তাদের জন্য নির্ধারিত অংশ প্রদান করা হবে। মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ নীতি হচ্ছে: মৃতের সাথে যার কারণে বা মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত তিনি বেচেঁ থাকলে পরবর্তী সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তি ওয়ারিশ হবে না। যেমন পিতা বেচেঁ থাকলে ভাই সম্পত্তি পায় না। একই শ্রেণির উত্তরাধিকারীদের মধ্যে নিকটবর্তীর কারণে দূরবর্তী বঞ্চিত হয়। যেমন পিতার কারণে দাদা বঞ্চিত হয়। ব্যতিক্রম-কন্যার কারণে ভাইয়ের ছেলে বঞ্চিত হয় না।

পুত্র ও কন্যা সন্তান, পিতা, মাতা, স্বামী ও স্ত্রী হচ্ছে প্রাথমিক উত্তরাধিকারী; এরা কোনো অবস্থাতেই বঞ্চিত হবে না। উপরোক্ত ৫ জনের মধ্যে তিনজনের বিকল্প উত্তরাধিকারী রয়েছে। তারা হচ্ছে-সন্তানের সন্তান (যত নিম্নে হতে পারে), দাদা (যত উপরে হতে পারে), দাদী অথবা নানী (যত উপরে হতে পারে)। স্বামী ও স্ত্রীর কোনো বিকল্প উত্তরাধিকারী নাই। প্রাথমিক উত্তরাধিকারী থাকলে তার বিকল্প উত্তরাধিকারী সম্পত্তি পাবে না। ব্যতিক্রম-যখন কোনো পুত্র থাকবে না কিন্তু এক কন্যা ও ছেলের কন্যা থাকলে কন্যা ১/২ অংশ এবং পুত্রের কন্যা ১/৬ অংশ পাবে। সাধারণ সমপর্যায়ের নারী পুরুষের অর্ধেক থেকে পাবে। যেমন কন্যা পুত্রের অর্ধেক পাবে।

যার সম্পত্তি বন্টন হচ্ছে তাকে হত্যা করলে ও ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করলে একজন উত্তরাধিকারী সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়। কোন ব্যক্তির মৃত্যুর সময় তার জীবিত আত্মীয়গণ উত্তরাধিকারী হিসাবে বিবেচিত হবে। যাহোক কন্যা কখনো মাতাপিতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হয় না। পিতা মারা গেলে তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় যে সম্পত্তি পেতেন তা তার মৃত্যুর পরও তার উত্তরাধিকারীরা পাবে। তবে কোনো ব্যক্তি রেজিস্ট্রিকৃতভাবে সম্পত্তি দান বা হস্তান্তর করে গেলে এবং সন্তানকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে সন্তানের অংশ উল্লেখ না করে গেলে ঐ সন্তান আর সম্পত্তি পাবে না। সৎ ছেলে-মেয়ে, সৎ বাবা বা সৎ মায়ের সম্পত্তি পায় না; সৎ বাবা বা সৎ মা, সৎ ছেলে-মেয়ের সম্পত্তি পায় না। কেউ কাউকে হত্যা করলে হত্যাকারী তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না। জীবিত থাকা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে কেউ কারো সম্পত্তি পাবে না। জারজ সন্তান তার মা ও মায়ের আত্মীয়দের থেকে সম্পত্তি সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী পাবে।

 

About পরিবার.নেট

পরিবার বিষয়ক অনলাইন ম্যাগাজিন ‘পরিবার ডটনেট’ এর যাত্রা শুরু ২০১৭ সালে। পরিবার ডটনেট এর উদ্দেশ্য পরিবারকে সময় দান, পরিবারের যত্ন নেয়া, পারস্পরিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা, পারিবারিক পর্যায়েই বহুবিধ সমস্যা সমাধানের মানসিকতা তৈরি করে সমাজকে সুন্দর করার ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পরিবার ডটনেট চায়- পারিবারিক সম্পর্কগুলো হবে মজবুত, জীবনে বজায় থাকবে সুষ্ঠুতা, ঘরে ঘরে জ্বলবে আশার আলো, শান্তিময় হবে প্রতিটি গৃহ, প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মানবিক মান-মর্যাদা-সুখ নিশ্চিত হবে । আগ্রহী যে কেউ পরিবার ডটনেট এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যেকোনো বিষয়ে লেখা ছাড়াও পাঠাতে পারেন ছবি, ভিডিও ও কার্টুন। নিজের শখ-স্বপ্ন-অনুভূতি-অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে পারেন সবার মাঝে। কনটেন্টের সাথে আপনার নাম-পরিচয়-ছবিও পাঠাবেন। ইমেইল: poribar.net@gmail.com

View all posts by পরিবার.নেট →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *