সবার মাঝে মানবতাবোধ জাগাতে পারলে শান্তির স্বর্গ রচনা করতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তবে মানবতাবোধ জাগ্রত করাটা খুব সহজ ব্যাপার নয়। অসম্ভবকে সম্ভব করা, অসাধ্যকে সাধ্য করা যায় প্রচেষ্টা দ্বারা, সাধনার মাধ্যমে। তাই সুখের নীড় গড়তে ত্যাগ স্বীকারের বিকল্প নেই।
আমাদের বড় অভাব উদ্যোক্তার, উদ্যোগ গ্রহণের। উদ্যোগী হলেই অনেক কার্য সমাধা হয়ে যায়। উদ্যোগই বয়ে আনে সফলতা। উদ্যোগ না থাকার কারণেই বারবার আমাদেরকে সামনে চলার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়ে পেছনে চলে যেতে হচ্ছে। তাই দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে কল্যাণমূলক কর্মতৎপরতা পরিচালনার জন্যে বেশি বেশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হতে হবে। ভালো ভালো উদ্যোগ নিলে তা সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতা করতে অনেকেই এগিয়ে আসবে, এতেই রয়েছে সত্যিকার কল্যাণ।
সেক্ষেত্রে দেশকে ভালবাসুন; ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হউন। জন্মভূমির প্রতি মায়া-মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। দেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসাই মানুষের ধর্ম। মা, মাতৃভাষা, মাতৃভূমি এসবই অত্যন্ত প্রিয় হওয়াটাই স্বাভাবিক। হৃদয়ের গভীরে অত্যন্ত সুদৃঢ়ভাবে অবস্থান করে থাকে দেশের আলো, বাতাস, প্রকৃতি। আমার অস্তিত্ব মিশে আছে যেন সুনীল আকাশ, উর্বর জমিন তার তাদের মধ্যকার বিদ্যমান সবকিছুর সাথে।
এদেশের জন্য, দেশের মাটি ও মানুষের জন্য, লাল সবুজ পতাকার জন্য আমি সবকিছু উৎসর্গ করে দিতে প্রস্তুত। সবকিছু বিসর্জন দিয়ে হলেও আমি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণ ও মঙ্গল চাই। নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দেয়ার উদার মানসিকতা আমার আছে। আমি মনে করি, এরকম মন-মানসিকতা অনেকের মধ্যেই বিদ্যমান। এই আবেগ, এ শক্তিকে কাজে লাগানোর জন্যে নেই পরিকল্পিত কোনো উদ্যোগ, সমস্যা এখানেই। ভালোবাসা ও দেশপ্রেমের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক চিন্তার রাজ্য দখল করে থাকে।
আবেগ, অনুভূতি, স্বপ্ন সবকিছু কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য নির্দিষ্ট করাটা প্রকৃতির স্বধর্ম বিরোধী কাজ। সবাইকে আপন করে কাছে টানার মত বিশাল হৃদয়ের প্রয়োজন বেশি। উদারমনের স্বল্পতা উন্নতি ও অগ্রগতির প্রতিবন্ধক। কারো ধর্ম, বর্ণ, গোত্র অনুসন্ধান নয়, সব মানুষকেই ভালোবাসতে শিখতে হবে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে অনেক সম্ভাবনাই চোখে পরে।
পরের দুঃখ, কষ্ট, বেদনা, অসহায়ত্ব যার হৃদয়কে ব্যথিত করে না সে মানবিকতা ও মনুষ্যত্বের আর্তনাদ, প্রতিভার অপমৃত্যু দেখলে যাদের মনে হাহাকার করে ওঠে তারাই ভালো কিছু করতে উদ্যোগী হয়। খুব স্বল্প সংখ্যক মানুষই যা ভালো তার পক্ষে আমরণ টিকে থাকে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়ে হলেও। মান দেয়ার চেয়ে জান দেওয়াটাই নিঃসন্দেহে উত্তম।