পারিবারিক শিষ্টাচার পরিবারের সৌন্দর্য

আনিসুর রহমান এরশাদ

পারিবারিক শিষ্টাচার পরিবারের সৌন্দর্য। মানুষের আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, কার্যকলাপ, ভাববিনিময় সুন্দররূপে-ভদ্ররূপে প্রকাশিত হওয়াই শিষ্টাচার; যা মানুষের চরিত্রের অলংকার। যেসব গুণাবলি চরিত্রকে সুন্দর, আকর্ষণীয় ও গৌরবান্বিত করে তুলে তার মধ্যে শিষ্টাচার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সত্য কথন, পরোপকার, ক্ষমা, দয়া-দানশীলতা, ভক্তি, শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভালোবাসা, ক্ষমা, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, শালীনতা, বিনয়, ভদ্রতা ইত্যাদি বিশ্বজনীন গুণাবলি নিজের মধ্যে ধারণ, অনুশীলন ও এর বিপরীত বিষয়গুলো বর্জন করাই হচ্ছে শিষ্টাচার।

শিষ্টাচারের অভ্যাস করা

শিষ্টাচারের অভ্যাস বা কৌশল রপ্ত করার প্রাথমিক ও প্রধান শিক্ষালয় হলো পরিবার। একজন শিশু কিছু বুঝতে শিখলেই সে মা-বাবা, ভাইবোন এবং নিকটাত্মীয়ের কথা-বার্তা ও আচার-আচরণ অনুসরণ করার চেষ্টা করে। শিশুরা প্রশ্ন করলে বিরক্ত হয়ে ধমক দিয়ে শিশুদের শেখার বা জানার আগ্রহ নষ্ট করবেন না। তাকে ধমক বা শাসন না করে বিষয়বস্তু বুঝিয়ে বলুন। বড়দের জরুরি কোনো কথা বলার সময় যেন অহেতুক প্রশ্ন করে বিরক্ত না করে- এ শিষ্টাচার শেখাতে হবে। অনেকে প্রাইভেসির নামে সন্তানকে দূরে সরিয়ে রাখে, আবার অনেকে সন্তানকে ভালোবাসে বলে নিজের প্রাইভেসি নষ্ট করে। সন্তানকে শেখাতে হবে কারও রুমে ঢুকতে হলে তার অনুমতি নেয়া প্রয়োজন।

কাউকে হেয় না করা

পরিবারে ছোট-বড় সবার মাঝে পারস্পরিক সালাম বিনিময়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বাবা-মা, কারও বাবা-মা না থাকলে স্ত্রীকে বলে বের হোন। ছোটরা অবশ্যই বড় কাউকে না বলে বাইরে যাবে না। বাসায় ফেরার পর অন্যদের খোঁজখবর নিন। খাবার টেবিলে বয়োজ্যেষ্ঠদের খাবার উঠিয়ে দিন বা সাধাসাধি করুন,  তাদের স্বাস্থ্যের নিয়মিত খোঁজখবর নিন। পারিবারিক কোনো বিষয়ে সবাই মিলে একমতে পৌঁছাতে চেষ্টা করুন। পারিবারিক অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করুন।  একজনের কাজ কর্মে অন্যজনকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করুন। অন্যদের সামনে কাউকে হেয় করা উচিত নয়।

নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা

মেহমান এলে তাদের সাদরে গ্রহণ করুন এবং যথাসম্ভব আপ্যায়নের ব্যবস্থা করুন। হাসিমুখে কথা বলুন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও সদ্ভাব বজায় রাখুন। তাদের সঙ্গে বিনয়ীভাবে কথা বলুন এবং বিপদে-আপদে সহযোগিতা করুন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুন। ভুল করলে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। প্রশংসা করুন যখন কেউ সেটা প্রাপ্য হয়। বস্তুনিষ্ঠ বিতর্ক করুন, কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়। উত্তেজিত হওয়া, রাগ করা, খারাপ ভাষা ব্যবহার করা এবং উচ্চস্বরে কথা বলা একেবারেই খারাপ আচরণ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভালো আচরণ ব্যাপক প্রভাব রাখে। খাবার টেবিল থেকে শুরু করে খেলার মাঠে সর্বত্রই  কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত।

সহযোগিতার মনোভাব লালন

পরিবারে দীর্ঘস্থায়ী অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা মারাত্মক ক্ষতিকর। কারো অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, অন্যায্যভাবে আধিপত্য বিস্তার কিংবা কর্তৃত্বপরায়ণতা, কাউকে পণ্য করে তোলার মানসিকতা, কাউকে সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত করা, একজনের অপরাধে ঢালাওভাবে অন্যকে দোষারোপ করা  এবং  নিজের মতের বিরোধী হলেই প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা সুস্থ মনোভাব নয়। প্রকৃত শিক্ষা সংসারে সবার মতামতের গুরুত্ব দিতে শেখায়, সংসারে শান্তি বজায় রাখাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করতে শেখায়। পারস্পরিক গভীর বন্ধন, সহাবস্থানের জন্য ভারসাম্য বজায় রাখা, সীমাবদ্ধতার দিকগুলোর ব্যাপারে স্পষ্ট বোধোদয় ও সহযোগিতার মনোভাব লালন করাই সমীচীন।

খারাপ কাজে নিরুৎসাহিত করা

পরিবারের উদ্দেশ্য শুধু বংশবৃদ্ধি নয়, পরিবারের সদস্যদেরকে সামাজিক কাজেও অংশগ্রহণ করায়ে সৃষ্টির সেবায় জড়িত করা। অপসংস্কৃতি ও অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে কখনোই প্রশ্রয় দেয়া ঠিক নয়। পরিবার থেকে খারাপ কাজে উৎসাহ দেওয়া জঘন্য কাজ। ইতিবাচকতা নিয়ে পরিবারে দক্ষতা অনুশীলন করার সুযোগগুলো সামনে আনতে হবে। কারো ভূমিকা যাতে আরেকজনের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা না হয়। সাফল্যের পাশাপাশি হতাশা, ব্যর্থতা, ভুল এবং ক্ষমতার অপব্যবহার পরিবারে দেখা যায়।

সবাই সমান আত্মবিশ্বাসী হয় না, সমান মূল্যবান বলেও বিবেচিত হয় না। তবে পরিবারের ভালো ঐতিহ্যগুলো এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে চলে যায়। যৌথ পরিবারে সাধারণত দৈনন্দিন জীবনের রুটিনগুলিতে এসবের প্রতিফলন সহজে ঘটে। দাদা-দাদীর উপস্থিতিতে নাতি-নাতনীরা নিকটবর্তী থাকায় দ্রুত শিখে থাকে, অতীতের কাহিনী শুনে নিজেরাও কঠোর পরিশ্রমী এবং ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন হবার অনুপ্রেরণা লাভ করে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঐক্য এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে অবহেলা বা কারো প্রতি বৈষম্য করা ঠিক নয়।

শিষ্টাচার

পারিবারিক শিষ্টাচার পরিবারের সৌন্দর্য। মানুষের আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, কার্যকলাপ, ভাববিনিময় সুন্দররূপে-ভদ্ররূপে প্রকাশিত হওয়াই শিষ্টাচার; যা মানুষের চরিত্রের অলংকার। যেসব গুণাবলি চরিত্রকে সুন্দর, আকর্ষণীয় ও গৌরবান্বিত করে তুলে তার মধ্যে শিষ্টাচার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সত্য কথন, পরোপকার, ক্ষমা, দয়া-দানশীলতা, ভক্তি, শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভালোবাসা, ক্ষমা, ধৈর্য, সহিষ্ণুতা, শালীনতা, বিনয়, ভদ্রতা ইত্যাদি বিশ্বজনীন গুণাবলি নিজের মধ্যে ধারণ, অনুশীলন ও এর বিপরীত বিষয়গুলো বর্জন করাই হচ্ছে শিষ্টাচার।

শিষ্টাচারের অভ্যাস করা

শিষ্টাচারের অভ্যাস বা কৌশল রপ্ত করার প্রাথমিক ও প্রধান শিক্ষালয় হলো পরিবার। একজন শিশু কিছু বুঝতে শিখলেই সে মা-বাবা, ভাইবোন এবং নিকটাত্মীয়ের কথা-বার্তা ও আচার-আচরণ অনুসরণ করার চেষ্টা করে। শিশুরা প্রশ্ন করলে বিরক্ত হয়ে ধমক দিয়ে শিশুদের শেখার বা জানার আগ্রহ নষ্ট করবেন না। তাকে ধমক বা শাসন না করে বিষয়বস্তু বুঝিয়ে বলুন। বড়দের জরুরি কোনো কথা বলার সময় যেন অহেতুক প্রশ্ন করে বিরক্ত না করে- এ শিষ্টাচার শেখাতে হবে। অনেকে প্রাইভেসির নামে সন্তানকে দূরে সরিয়ে রাখে, আবার অনেকে সন্তানকে ভালোবাসে বলে নিজের প্রাইভেসি নষ্ট করে। সন্তানকে শেখাতে হবে কারও রুমে ঢুকতে হলে তার অনুমতি নেয়া প্রয়োজন।

কাউকে হেয় না করা

পরিবারে ছোট-বড় সবার মাঝে পারস্পরিক সালাম বিনিময়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বাবা-মা, কারও বাবা-মা না থাকলে স্ত্রীকে বলে বের হোন। ছোটরা অবশ্যই বড় কাউকে না বলে বাইরে যাবে না। বাসায় ফেরার পর অন্যদের খোঁজখবর নিন। খাবার টেবিলে বয়োজ্যেষ্ঠদের খাবার উঠিয়ে দিন বা সাধাসাধি করুন,  তাদের স্বাস্থ্যের নিয়মিত খোঁজখবর নিন। পারিবারিক কোনো বিষয়ে সবাই মিলে একমতে পৌঁছাতে চেষ্টা করুন। পারিবারিক অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করুন।  একজনের কাজ কর্মে অন্যজনকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করুন। অন্যদের সামনে কাউকে হেয় করা উচিত নয়।

নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা

মেহমান এলে তাদের সাদরে গ্রহণ করুন এবং যথাসম্ভব আপ্যায়নের ব্যবস্থা করুন। হাসিমুখে কথা বলুন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও সদ্ভাব বজায় রাখুন। তাদের সঙ্গে বিনয়ীভাবে কথা বলুন এবং বিপদে-আপদে সহযোগিতা করুন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করুন। ভুল করলে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। প্রশংসা করুন যখন কেউ সেটা প্রাপ্য হয়। বস্তুনিষ্ঠ বিতর্ক করুন, কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়। উত্তেজিত হওয়া, রাগ করা, খারাপ ভাষা ব্যবহার করা এবং উচ্চস্বরে কথা বলা একেবারেই খারাপ আচরণ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভালো আচরণ ব্যাপক প্রভাব রাখে। খাবার টেবিল থেকে শুরু করে খেলার মাঠে সর্বত্রই  কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত।

সহযোগিতার মনোভাব লালন

পরিবারে দীর্ঘস্থায়ী অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা মারাত্মক ক্ষতিকর। কারো অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, অন্যায্যভাবে আধিপত্য বিস্তার কিংবা কর্তৃত্বপরায়ণতা, কাউকে পণ্য করে তোলার মানসিকতা, কাউকে সম্পত্তি হিসেবে পরিগণিত করা, একজনের অপরাধে ঢালাওভাবে অন্যকে দোষারোপ করা  এবং  নিজের মতের বিরোধী হলেই প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা সুস্থ মনোভাব নয়। প্রকৃত শিক্ষা সংসারে সবার মতামতের গুরুত্ব দিতে শেখায়, সংসারে শান্তি বজায় রাখাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করতে শেখায়। পারস্পরিক গভীর বন্ধন, সহাবস্থানের জন্য ভারসাম্য বজায় রাখা, সীমাবদ্ধতার দিকগুলোর ব্যাপারে স্পষ্ট বোধোদয় ও সহযোগিতার মনোভাব লালন করাই সমীচীন।

খারাপ কাজে নিরুৎসাহিত করা

পরিবারের উদ্দেশ্য শুধু বংশবৃদ্ধি নয়, পরিবারের সদস্যদেরকে সামাজিক কাজেও অংশগ্রহণ করায়ে সৃষ্টির সেবায় জড়িত করা। অপসংস্কৃতি ও অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে কখনোই প্রশ্রয় দেয়া ঠিক নয়। পরিবার থেকে খারাপ কাজে উৎসাহ দেওয়া জঘন্য কাজ। ইতিবাচকতা নিয়ে পরিবারে দক্ষতা অনুশীলন করার সুযোগগুলো সামনে আনতে হবে। কারো ভূমিকা যাতে আরেকজনের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা না হয়। সাফল্যের পাশাপাশি হতাশা, ব্যর্থতা, ভুল এবং ক্ষমতার অপব্যবহার পরিবারে দেখা যায়।

সবাই সমান আত্মবিশ্বাসী হয় না, সমান মূল্যবান বলেও বিবেচিত হয় না। তবে পরিবারের ভালো ঐতিহ্যগুলো এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে চলে যায়। যৌথ পরিবারে সাধারণত দৈনন্দিন জীবনের রুটিনগুলিতে এসবের প্রতিফলন সহজে ঘটে। দাদা-দাদীর উপস্থিতিতে নাতি-নাতনীরা নিকটবর্তী থাকায় দ্রুত শিখে থাকে, অতীতের কাহিনী শুনে নিজেরাও কঠোর পরিশ্রমী এবং ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন হবার অনুপ্রেরণা লাভ করে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঐক্য এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে অবহেলা বা কারো প্রতি বৈষম্য করা ঠিক নয়।

About পরিবার.নেট

পরিবার বিষয়ক অনলাইন ম্যাগাজিন ‘পরিবার ডটনেট’ এর যাত্রা শুরু ২০১৭ সালে। পরিবার ডটনেট এর উদ্দেশ্য পরিবারকে সময় দান, পরিবারের যত্ন নেয়া, পারস্পরিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা, পারিবারিক পর্যায়েই বহুবিধ সমস্যা সমাধানের মানসিকতা তৈরি করে সমাজকে সুন্দর করার ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পরিবার ডটনেট চায়- পারিবারিক সম্পর্কগুলো হবে মজবুত, জীবনে বজায় থাকবে সুষ্ঠুতা, ঘরে ঘরে জ্বলবে আশার আলো, শান্তিময় হবে প্রতিটি গৃহ, প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মানবিক মান-মর্যাদা-সুখ নিশ্চিত হবে । আগ্রহী যে কেউ পরিবার ডটনেট এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যেকোনো বিষয়ে লেখা ছাড়াও পাঠাতে পারেন ছবি, ভিডিও ও কার্টুন। নিজের শখ-স্বপ্ন-অনুভূতি-অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে পারেন সবার মাঝে। কনটেন্টের সাথে আপনার নাম-পরিচয়-ছবিও পাঠাবেন। ইমেইল: poribar.net@gmail.com

View all posts by পরিবার.নেট →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *