একজন মানুষ বড় হয়ে কেমন হবে তা অনেকটাই নির্ভর করছে তাকে কিভাবে এবং কোন পরিবেশে বড় করা হয়েছে। ভুল ভাবে বেড়ে ওঠলে মানুষের মানসিক গঠনে সমস্যা হয়। বাচ্চাদের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠায় ও পরিচর্যায় সফল হয় ভালো প্যারেন্টসরা। হিউম্যান সাইকোলজি বোঝলে ভালো প্যারেন্ট হওয়ার পথে একটু হলেও এগিয়ে যাওয়া যায়।
প্যারেন্টিং কী?
জন্মের পর থেকেই সন্তানের অগ্রগতির প্রতি সজাগ থাকা। মানসিক, শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করা।
প্যারেন্টিং কেন দরকার?
যুগে সন্তানকে কিভাবে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো তা নিয়ে বাবা-মার চিন্তার শেষ নেই। বর্তমান সময়ে সব বাবা মায়েরই উদ্বেগ- আমার সন্তানকে কিভাবে মানুষ করবো? কারণ আজকাল বাচ্চারা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে ডিজিটালভাবে বেড়ে ওঠছে। বাবাদের পাশাপাশি মায়েদেরও ঘরের বাইরেও ব্যস্ততা বাড়ছে। বাচ্চাদের লেখা-পড়া, খেলা, খাওয়া সবকিছুই প্রযুক্তি কেন্দ্রিক হচ্ছে।
এমতাবস্থায় সন্তান প্রতিপালনের মতো শিক্ষনীয় এবং অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিটা সময়ের অনিবার্য দাবি হয়ে পড়েছে। এজন্যই গুড প্যারেন্টিং দরকার। বাচ্চাকে কিভাবে বড় করবেন, কী শেখাবেন এবং কিভাবে শেখাবেন, এগুলো সব প্যারেন্টিং এর আওতাধীন ব্যপার।
প্যারেন্টিং শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
সন্তানের ভালো চেয়ে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ও খাওয়া-দাওয়া নিয়ে চিন্তা করাই বাবা-মায়ের জন্য যথেষ্ট নয়। আবার সকালে টিচার, সারাদিন স্কুল, বিকেলে কোচিং, রাতে আরেক টিচার দিয়ে শুধু পড়ালেখায় সন্তানকে ব্যস্ত রাখাও সঠিক ভালোবাসা নয়। আবার সন্তানের কোনো বিষয়েরই খোঁজ-খবর না নেয়া, পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ হলেই মারধর করা, অপরাধ করলেই শাস্তি দেয়াও ভুল পদ্ধতি। কারণ এতে সন্তানদের মানসিক ভারসাম্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সৃজনশীলতা হারিয়ে যায়, অবাধ চলাফেরা ও বিশৃঙ্খল জীবন যাপনে আকৃষ্ট হয়। ফলে সন্তানকে ভালোবেসেও আখেরে সন্তানের ক্ষতিটাই করেন।
তাহলে আদর্শ পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য আসলে কী? সমাজে স্বামী-স্ত্রীদের প্যারেন্টিং শিক্ষা-প্রশিক্ষণের প্রয়োজনই বা কেন? তাহলে নিজেদের চেয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশি চিন্তিত বাবা-মার করণীয় আসলে কী? সন্তানের সঠিক প্রতিপালনের উপায় কী? পরিবর্তনের জন্য কোন পরিকল্পনা আসলে দরকার? প্যারেন্টিং নিয়ে কোনো স্ট্যাডি ছাড়াই প্যারেন্টিংয়ে নিজেকে খুব দক্ষ ভাবা লোকেরও অভাব নেই। তবে বাস্তবেই এসব প্রশ্নের যথাযথ জবাব পেতে প্যারেন্টিং শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
ভালো প্যারেন্টিং কী?
বাচ্চার প্রতিটি পদক্ষেপ সজাগভাবে পর্যবেক্ষণ এবং তার সব রকম উন্নতির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। বাচ্চাটার মানসিক এবং শারীরিক বিকাশের দিকে খেয়াল রাখা। জীবন মানে নয় শুধু- পরীক্ষায় একশতে একশ পাওয়া, বাসায় দামি শিক্ষক রাখা, কয়েকটি নামি কোচিং করানো। ভারসাম্যহীন অতি চাপে সন্তানের জীবন থেকে জীবনই হারিয়ে যায়। সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করে তার বর্তমানকে ভুলে গেলে, নিজের সন্তানের বদনাম অন্যের কাছে করলে- সেই সন্তান কখনো আপনাকে মন থেকে ভালোবাসবে না!
সন্তান যা দেখে তাই শিখে। তারা অন্ধ নয়! অবুঝ নয়! সন্তান সহপাঠিকে গালাগালি করলো কেন বা ধরে মারলো কেন- এ প্রশ্ন আগে নিজেকে করুন। ছেলে মেয়েরা খুব অল্প বয়সেই অবাধ্য হয়ে যাচ্ছে কেন? মেরে-বকেই বাচ্চাকে মানুষ করার দিন শেষ। সময় বদলেছে, বিভিন্ন সন্তান প্রতিপালনেও কৌশলগত পরিবর্তন আনতে হবে। সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে ভেবে বসে থাকলে সময়ের অপচয় হবে কিন্তু কখনো ঠিক হবে না। ভালো প্যারেন্টিং বলতে আসলে বুঝায়, বাচ্চার প্রতিটি পদক্ষেপ সজাগভাবে পর্যবেক্ষন এবং তার সব রকম উন্নতির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
প্যারেন্টিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ
প্যারেন্টিং এমন শিক্ষনীয় বিষয় যে প্রশিক্ষণ নিতেই হবে। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। প্যারেন্টিং নিয়ে ওয়েবসাইট আছে, ভালো ভালো লেকচার আছে এবং অনেক বইও আছে। জানতে হবে, শিখতে হবে, শিক্ষাকে প্রয়োগ করতে হবে। অনুকরণীয়-অনুসরণীয় সফল বাবা-মায়েরা কিভাবে বাচ্চাদেরকে ডিল করতেন তা জেনে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সন্তান প্রতিপালনের বেসিক জেনে সেগুলো টার্গেট করে প্ল্যান সাজিয়ে নিতে হবে। সন্তান ও নিজের জন্য করনীয়-বর্জনীয় এর একটি লিস্ট তৈরি করে নিতে হবে।
ভালো প্যারেন্টস কারা?
ভালো প্যারেন্টস নিশ্চিত হয় ম্যারেজটা ভালো হলে, দুইজনেই ভালো হলে। যারা ফ্যামিলির কারণে বাচ্চারা স্পয়েল হবে না এটা নিশ্চিত করেন । ভালো এবং খারাপের পার্থক্য বুঝিয়ে দেন। আত্মসম্মানবোধ তৈরি করেন। আদর করেও খারাপ লাগার মতো মন্তব্য করেন না। বিনয়(!) দেখাতে গিয়েও অন্যের কাছে নিজের বাচ্চার সমালোচনা করেন না। বাচ্চার অভিভাবকত্বে অন্যদের অতিরিক্ত নাক গলানোর সুযোগ দেন না। প্রয়োজন হলেও ইউটিউবের একসেস না দিয়ে শুধুমাত্র বাচ্চাদের কনটেন্টগুলো ডাউনলোড করে দেন।
বাচ্চাদের সাথে নিয়ে বড়দের অনুষ্ঠান দেখেন না। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই ঘন্টার বেশী টিভি দেখতে দেন না। মোবাইলের রেডিয়েশন ক্ষতিকর হওয়ায় বাচ্চাদের হাতে মোবাইল- ট্যাব দেন না। চাপিয়ে না দিয়ে, বাধ্য না করে পড়াটাকে আনন্দঘন-উপভোগ্য করে তুলেন।প্রতিটা মূহুর্তকে গুরুত্ব দেন। খারাপ কোনোকিছুতে বাচ্চাদের প্রশ্রয় দেন না। বাচ্চারা কিছু বোঝে না মনে করেন না। ভুল করলে না বকে বড়দের মত করেই বোঝান। বাচ্চারা কি দেখছে কি শুনছে তা নিয়ন্ত্রন করেন।পরিচ্ছন্নতা শেখান, পরিচ্ছন্নতা জ্ঞান দেন। দাঁত ব্রাশ, বেসিনের ব্যবহার, টয়লেট টিস্যুর সঠিক ব্যবহার, কমোড ফ্লাশ ব্যবহার করা ও ওয়াশরুম পরিস্কার রাখা শেখান।
বাসায় লাইব্রেরী বানান। বাচ্চাদের হাতের নাগালে বই রাখেন। বাচ্চাদের সামনে পড়ুন, ওদের পড়ে শোনান। পড়ার আগ্রহ-অভ্যাস তৈরি করেন। স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে জোর করেন না। পড়ালেখাকে এত ইন্টারেস্টিং ব্যপার করে তুলেন যে নিজেই খাতা-কলম-বই নিয়ে পড়তে বসে যায়। আমার খেলনা, আমার এটা, আমার ওটা… এগুলো বাচ্চাদের ভেতরে ঢুকতে দেন না। বাচ্চাদের স্বার্থপর বানান না। মাতৃভাষা আগে শেখান। নিজের খেলনাগুলো গুছিয়ে ঝুড়িতে রেখে দিতে বা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখতে শেখান। স্বাভাবিক বিকাশের স্বার্থেই শাসনের নামে অমানবিক অত্যাচার চালান না। ক্রিয়েটিভ ও প্রোডাক্টিভ হিসেবে গড়ে তোলতে পজেটিভ, আনন্দপূর্ন, নির্ভয় পরিবেশে রাখেন। বাচ্চাদের ভালো আর মন্দের মধ্যে পার্থক্য শেখান।
প্যারেন্টিংয়ে ভুল
বাবামায়ের ভুল বাচ্চার জীবনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তাদের ‘মানুষ’ হয়ে ওঠার পথে পর্বতপ্রমাণ বাধা হয়ে উঠতে পারে, কখনো কখনো জীবনকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে। প্যারেন্টিয়ে ভুল হচ্ছে- খুব দ্রুত প্রশংসা বা তিরস্কার করে ফেলা। সহজে প্রশংসা পেলে সে যা যা করে সব কিছুর জন্য একধরনের অনুমোদন খোঁজে, নিজেকে অযথা জাহির করবার প্রবণতা বাড়ে এবং কাঙ্ক্ষিত প্রশংসা না পেলে হতাশ হয়ে যায়। প্রশংসা বা তিরস্কারের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন করাই শ্রেয়। ভালো কাজে পুরষ্কার, মন্দ কাজে তিরস্কার, মোটাদাগে ঠিক আছে। কিন্তু ভালো কাজে আত্মতৃপ্তি পাওয়ার বিশেষ অনুভূতির শিক্ষা দিতে হবে, কেউ কিছু দেবে এই আশায় সে যেন কোনো ভালো কাজ না করে।
বিপদ থেকে দ্রুত উদ্ধার করে ফেলার মাধ্যমে বাচ্চাকে খুব দ্রুত অযোগ্য বানিয়ে ফেলা হয়, বাচ্চারা পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বাচ্চাদের ঝগড়া বা হালকা রেষারেষির মধ্যে বাবা মায়েরা নাক গলান এবং অন্য বাবা মায়ের সাথে তুচ্ছ বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এতে বাচ্চা বড়বেলার বড় সংগ্রামের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হবে না। শিশুদের কোনো ঝুঁকি নিতে না দেয়ার অতিরিক্ত সাবধানতা বাচ্চার মানসিক বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। নিজের ভুল স্বীকার না করাটা মস্তবড় ভুল। অমুকে তোমার চেয়ে ভালো, অমুক এই কাজটা পারে, তুমি কেন পারছ না- অন্যের সাথে তুলনা করা এইসব কথাবার্তা পুরোপুরি ধ্বংসাত্মক। বাচ্চাকে শুধু উপদেশ দিয়েই ক্ষ্যান্ত হবেন না, নিজেও সেটা করে দেখানোর চেষ্টা করুন।
ইতিবাচক প্যারেন্টিং (Positive parenting)
ধারাবাহিক হওয়া। উষ্ণতা প্রদর্শন ও সংবেদনশীলতা দেখানো। রুটিন ও বিধি থাকা। সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ইতিবাচক আচরণ উত্সাহিত করা। সন্তানের না বলা কথা-অভিমান-আবেগ-চাওয়াও বুঝা। দরকারী উপযুক্ত প্ল্যানিং করা। পরিবারের সবাই শান্ত-সংঘবদ্ধ-স্থিতিশীল থাকা। ব্যক্তিত্ব বজায় রাখা। সন্তানের সাথে কথা বলা। সন্তানের ব্যবহারকে গুরুত্ব দেয়া, অ্যাটেনশন দেয়া।ধীরে ধীরে সময় নিয়ে সংযত হবার ব্যাপারে বুঝান। সন্তানকে সবসময় উপদেশ না দেয়া আর অতিরিক্ত শাসন না করা।শিশুর প্রতি সবসময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মনোভাব নিয়ে আগলে রাখা দরকার। কারণ শিশুর আত্মসম্মানবোধের জন্ম হয় ইতিবাচক ধারণা থেকেই। ইতিবাচকতা শিশুর মননের পরিচর্যা ভুমিকা রাখে।
গুড প্যারেন্টিং কিভাবে?
সবাই চায় তার শিশুটি সঠিক প্যারেন্টেইং-এর মধ্য দিয়ে বড় হোক। কিন্তু সবাই তা দিতে পারে না। আপনার সাধ্যানুযায়ী প্রচেষ্টা গুড প্যারেন্টিং-এর জন্য আসলেই যথেষ্ট কিনা, শিশুটির সঠিক বেড়ে ওঠায় তা যথাযথ ভূমিকা রাখছে কিনা তা জানাটা খুব জরুরি। শিশু যাতে আপনার যত্নআত্তি ও মনোযোগে সন্তুষ্ট ও সুখী থাকে। আপনার পারিবারিক জীবন যাপন যাতে শিশুর জন্য সহজে অনুমান যোগ্য ও স্থিতিশীল হয়। সহনীয় বাধাধরা জীবন ও সেটা পালনের কিছু বাধ্যবাধকতায় শিশুরা নিজের পারফর্মেন্স দেখাবার ও তা দেখিয়ে কৃতিত্ব নেবার সুযোগ সে পায়। যে পরিবেশে শিশুটিকে বড় করছেন, সেটা তাকে যথেষ্ট পরিমানে শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হতে হবে।
যা যা শেখার কথা, তা তা ঠিকঠাক মতো শিখানো। এতে সে আরও পরিপক্ক হবে।শিশুর কথায় আপনি নিজেই উঠবস করলে হবে না। কেউ একজন শিশুকে দিকনির্দেশনা প্রদানের দায়িত্বটা নিলে তা সবার জন্যই হবে সহজ, সুখকর, ভারাসাম্যপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর। শিশুর আমিত্ব থেকে আমরাত্ব-এর উত্তরণ ঘটানো এবং ভদ্রতা, শিষ্টতা, সামাজিক আচার আচরণ, গুরুজনে ভক্তি, ছোটদের প্রতি স্নেহ-মমতার অনুশীলন করানো। অন্যান্য শিশুসহ পরিচিত বড়দের সাথে শিশুকে পরিচিত হতে ও মিশতে সুযোগ করে দেয়া। শিশুকে দৈনন্দিন কাজেকর্মে স্বনির্ভরতা অর্জনের কলাকৌশলগুলো অনুশীলন করানো।
কখনো কখনো কি আনন্দঘন ফ্যামিলি-টাইম কাটানো। বাচ্চাদের সাথে মাঝেমাঝে হালকা সময় কাটানো, গান-কবিতা করা, জোক শোনানো। আপনি যদি প্যারেন্টিং উপভোগ করেন, সেটা শিশুদের বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ার ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিস-ড্রয়িং শেখানো, ডিবেইট করায় বাচ্চাদের সময় নষ্ট হয়না বরং স্কিল ডেভেলাপড হয়, আত্মবিশ্বাস বাড়ে, রেজাল্টও ভালো কর। সময় দিন, তাকে বুঝুন, তার চাহিদা গুলো জানতে চান, আর মাঝে মাঝে তার সাথে বৃষ্টিতে ভিজুন, রাতে চাঁদ দেখুন। বন্ধু হয়ে যান, আর স্পেস দিন নির্ভয়ে মনের কথা বলার। বাচ্চা খায়না দুটো কারণে- হয় তার খিদে নেই, নতুবা খাবারটি তার পছন্দ হয়নি।
হ্যাপি প্যারেন্টিং
প্যারেন্টিং হচ্ছে শিশুর শারীরিক, জ্ঞানীয়, বুদ্ধি ও আবেগকের যথাযথ বিকাশের মাধ্যম, যে যে বয়স সেই বয়স অনুযায়ী সঠিকভাবে প্রকাশ করছে কিনা, সঠিক আবেগ নিয়ে বড় হচ্ছে কিনা, তাদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরি হচ্ছে কিনা সে বিষয়গুলো প্রতি খেয়াল রাখা এবং পরিচর্যা করা। মুলত কঠিন ধৈর্য ও পরিশ্রমের অপর নাম হল গুড প্যারেন্টিং।
শিশুর আচরণ নির্ভর করে সে যে পরিবেশে বড় হয়, বাস করে, যাদের সাথে থাকে এবং মেলামেশা করে। শিশুকে অপরিসীম ভালোবাসার মতো এত চমৎকার আর দ্বিতীয় কোন বিষয় আর নেই শিশু শিক্ষায় সব কিছুই ভালবাসা আর যত্নে হলেই শিশু সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। শিশুর ভাল-মন্দে কোনো একটা আলোচনায় যোগ দিতে গেলে আগে শোনা দরকার।
হুট করে কোনো মন্তব্য করা বোকামির কাজ। মূল বিষয়টি নিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করা। তারপর শিশুর মনোভাব বুঝে কথা বলার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা। সন্তানের ভালো-মন্দে পাশে থাকা এবং দৃষ্টিভঙ্গীর প্রতি খেয়াল রাখা (Keeping Perspective)। বকা-ঝকা নয় বরং শিশুদেরকে আনন্দের মাঝে রাখা দরকার। কোনো কাজে বাধা না দিয়ে বা কোন কাজ খুবই জোর করে শিশুকে করতে বাধ্য না করে ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রতি খেয়াল রাখতে হয়।