অটিজমে আক্রান্ত শিশু, বুঝবেন কীভাবে?

প্রতিটি মা-বাবার কাছেই নিজের সন্তান অনেক আদরের। সন্তানের বেড়ে ওঠা, কথা বলা, হাসিসহ সব বিষয়েই থাকে তাদের বাড়তি আগ্রহ। কিন্তু কোনো শিশুর অটিজম হলে এ নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না।

চিকিৎসকের ভাষায়, প্রতিটি শিশুই আলাদা, এবং প্রত্যেকেই নিজস্ব সময়ে বেড়ে ওঠে। একটা সময়ে সে কথা শেখে, খেলা শেখে, বসে, হাঁটে ও স্কুলে যায়। কিন্তু অটিজমের শিকার শিশুদের ক্ষেত্রে এমন স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার ঘটনা দেখা যায় না। তাই শিশুর অটিজমের আক্রান্ত কী না, তা অবিভাবককে জানতে হবে।

সঠিক ট্রিটমেন্টের জন্য যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব শিশুর মাঝে অটিজমের লক্ষণগুলো শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরী। কারণ শনাক্ত করলে বা ওষুখ ধরা পড়লেইতো আপনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন ও ট্রিটমেন্ট দিতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞরা কম বয়সে শিশুর মাঝে অটিজমের কিছু লক্ষণ খুঁজে পেয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা জানান, সাধারণত শিশুর বয়স ১২-১৮ মাস হলে এসব লক্ষণ দেখা যায়। অটিজম স্পেকট্রাম ডিজর্ডারের ট্রিটমেন্ট যতো কম বয়সে শুরু করা যায়, শিশু পরবর্তীতে ততটাই বেশি উপকার পায়। আর তার মানসিক দক্ষতার উন্নতি ঘটানোর জন্য এই ট্রিটমেন্ট খুবই জরুরী।

শিশুর শারীরিক কিছু লক্ষণ থাকতে পারে, বাবা-মা অথবা অন্য শিশুদের সঙ্গে তার আচরণেও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।

* একটি সুস্থ শিশু বাবা-মা অথবা তার সঙ্গে থাকা আয়ার মুখে নিজের নাম শুনলে সাড়া দেবে। অটিজম আছে এমন শিশুদের বেশী ভাগই নিজের নাম শুনলে সাড়া দেয় না।
* অন্য কারও মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে না অটিজম আক্রান্ত শিশু।এক্ষেত্রে ‘জয়েন্ট অ্যাটেনশন’ কথাটা ব্যবহার করা হয়। যেমন : সুস্থ একটি শিশু পছন্দের কিছু দেখলে ওই জিনিসের দিকে বার বার তাকায়, হাত ইশারা করে, মুখে শব্দ করে ও নিতে চায়। কিন্তু অটিজমে আক্রান্ত শিশুর মাঝে এই কাজটা করতে দেখা যায় না। তারা নিজেদের উৎসাহ অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করে না বা করতে পারে না।

* অন্য বাচ্চারা যেভাবে নড়াচড়া করে, একজন আরেকজনের দেখাদেখি তালি দেয়, অন্যদের দেখে হাত নাড়ায় তেমনটা সাধারণত করে না অটিস্টিক শিশুরা।

* সাধারণত শিশুরা অন্যদের আবেগ দেখলে নিজেরাও আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে। মা-বাবাকে কাঁদতে দেখলে কেঁদে ফেলে ও হাসতে দেখলে তারাও না বুঝেই হাসে। কিন্তু অটিজম আছে এমন শিশুরা এমটা করে না।

* সাধারণত শিশুরা নানা ধরনের বানিয়ে খেলা করে যেমন : পুতুলকে বাচ্চা বানিয়ে, লগো দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করে, মোবাইল নিয়ে মিছেমিছি কথা বলে খেলা করে। কিন্তু অটিজম থাকলে এমন খেলার প্রবণতা দেখা যায় না। তারা আনমনা হয়ে বসে থাকে।

এক বছর বয়সে এগুলো ছাড়াও আরও কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে, যেমন : কথা না বলা, হামা না দেয়া, ধরে ধরে হাঁটার চেষ্টা না করা ইত্যাদি।

তাই এক বছর বয়স হওয়ার সময় থেকে অবিভাবকদের এই ব্যাপারগুলো খেয়াল রাখতে হবে। কোনো কিছুতে অন্যরকম মনে হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরী।

About পরিবার.নেট

পরিবার বিষয়ক অনলাইন ম্যাগাজিন ‘পরিবার ডটনেট’ এর যাত্রা শুরু ২০১৭ সালে। পরিবার ডটনেট এর উদ্দেশ্য পরিবারকে সময় দান, পরিবারের যত্ন নেয়া, পারস্পরিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা, পারিবারিক পর্যায়েই বহুবিধ সমস্যা সমাধানের মানসিকতা তৈরি করে সমাজকে সুন্দর করার ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পরিবার ডটনেট চায়- পারিবারিক সম্পর্কগুলো হবে মজবুত, জীবনে বজায় থাকবে সুষ্ঠুতা, ঘরে ঘরে জ্বলবে আশার আলো, শান্তিময় হবে প্রতিটি গৃহ, প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের মানবিক মান-মর্যাদা-সুখ নিশ্চিত হবে । আগ্রহী যে কেউ পরিবার ডটনেট এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যেকোনো বিষয়ে লেখা ছাড়াও পাঠাতে পারেন ছবি, ভিডিও ও কার্টুন। নিজের শখ-স্বপ্ন-অনুভূতি-অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে পারেন সবার মাঝে। কনটেন্টের সাথে আপনার নাম-পরিচয়-ছবিও পাঠাবেন। ইমেইল: poribar.net@gmail.com

View all posts by পরিবার.নেট →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *