‘হৃদয়জয়ী নেতৃত্বের পথ বইয়ের লেখক আনিসুর রহমান এরশাদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। লেখকের পরিবার ও হৃদয়জয়ী নেতৃত্বের পথ বই দুটি পড়ে আমার মনে হয়েছে গবেষণাধর্মী লেখা তরুণ লেখকের পছন্দ। এটি খুবই কঠিন কাজ। এই কঠিন কাজে যিনি হাত দিতে পারেন তার বুকে অনেক সাহস। তার মনে অনেক স্বপ্ন।
তার মনে অনেক ব্যাথাও আছে, যন্ত্রণাও আছে, সমাজ সচেতনতা আছে, সমাজকে নিয়ে তার ভাবনা আছে। কিছু একটা করতে চান। সমাজের উন্নয়নের জন্য, পরিবর্তনের জন্য, মানুষের চিন্তার জগতে পরিবর্তন আনার জন্য কিছু একটা করতে চান। তা না হলে সহজ কথা লিখে যে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করা যায় সেদিকে মনোনিবেশ না করে এত কঠিন কঠিন বিষয় বেছে নেয়ার আর কী কারণ থাকতে পারে?
আমার মনে হয় আমাদের আনিসুর রহমান এই লেখনির মধ্য দিয়ে অনেকদিন বেঁচে থাকবেন। তার লেখা বই যারা সমাজে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে, যেসব তরুণরা সুন্দর সমাজ ও মানুষের উন্নয়নে কাজ করে, যারা চায় এখানে কোনো কষ্ট থাকবে না, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হবে, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে এবং অন্যায় দূরীভূত হবে- তাদের জন্য এই বইটি খুবই প্রয়োজনীয় একটি বই হতে পারে। এটি মাঝে মাঝে পড়লে তাদের উপকারে আসবে বলে আমি মনে করি।
একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত যারা আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করেন তারা সবাই আসলে কাজে নেতৃত্বই দেন। সেজন্য এই বইটি সবারই পড়া দরকার। এই বই লিখতে গিয়ে লেখক যে কী কঠোর পরিশ্রম করেছেন, কত পড়াশুনা করেছেন, সেটা রেফারেন্সটা দেখলেই বুঝা যায়। দৃশ্যত যেটা মনে হয়- উনি কারো প্রতি কোনো বায়াসনেস নিয়ে কোনো লেখা এখানে লেখার চেষ্টা করেননি। মূলত নেতৃত্ব এবং হৃদয়জয়ী নেতৃত্ব বলেতে কী বুঝায় এবং এটা কেমন করে সৃষ্টি হয়- এটাকে উনি খুবই সুন্দরভাবে প্রকাশিত-প্রস্ফুটিত করতে পেরেছেন বইটির ভেতরে- এটি আমার কাছে মনে হয়েছে।
আমার ধারণা কিয়ামত পর্যন্ত এই লেখা কেউ কোনোদিন ভুলবে না। এই লেখা মানুষের মনের কথা লেখা, এই লেখা কালজয়ী লেখা, এই লেখা মানুষের হৃদয়কে সম্পর্শ করে এরকম লেখা। আমাদের অনেক নেতা আছে, যারা আমাদেরকে নেতৃত্ব দেয়; কিন্তু জনগণের মনটাকে তারা জয় করতে পারে না। সেই জয় করার জন্য যা যা দরকার তার ম্যাটেরিয়ালস এই বইয়ের ভিতরে খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। বইটির গেটাপও খুবই সুন্দর, এটা খুবই আকর্ষণীয়।
আগেকার দিনে উপহার দেয়া হতো বই, আর এখনকার দিনে উপহার দেয়া হয় এন্ড্রয়েড ফোন। আমরা যদি চালু করতে পারি আমরা যত জায়গায় উপহার দেব, আমরা বই উপহার দেব। তাহলে বই পড়ার পাঠক বাড়তে পারে এবং তার মধ্য দিয়ে মানুষের ভবিষ্যত প্রজন্মের মনোজগতে পরিবর্তন আসতে পারে। না হলে যেভাবে যুবসমাজ তরুণরা গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে অন্ধকারের দিকে দৌঁড়াচ্ছে, সেখান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্যে যেমন নেতৃত্ব প্রয়োজন আছে, তেমন এরকম সাহিত্য এরকম লেখা, এরকম প্রবন্ধ, এরকম গবেষণাধর্মী লেখা আমাদের দরকার আছে।
আমি লেখকের সুন্দর জীবন কামনা করি। তার লেখা উত্তরোত্তর আরো সুন্দর হোক, আরো বৃদ্ধি পাক এবং তার জীবনের এই প্রতিজ্ঞা যেন ঠিকমতো থাকে, অব্যাহত থাকে। সারাজীবন যেন তিনি লিখে যেতে পারেন তার জন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দোয়া করি। সবার কাছে বইটি পড়ার জন্য অনুরোধ রাখলাম।
এই বইটিকে আমি একেবারে প্রথমে মনে করেছিলাম একটু সেক্যুলারধর্মী লেখা। কিন্তু আমি গিয়ে দেখলাম- না, পৃথিবীর নামি-দামি অনেক প্রতিষ্ঠিত অনেক সফল ব্যক্তিবর্গের কথা এখানে উল্লেখ রয়েছে। উনি সব দিকেই টাচ করেছেন বলে আমার কাছে মনে হয়। যারা ইসলামী আদর্শ ধারণ করেন, লালন করেন তাদের কাছেও বইটি আকর্ষণীয় হতে পারে; যারা অন্যান্য আদর্শ ধারণ করেন তারাও এই বই থেকে উপকৃত হতে পারেন। ভবিষ্যতে আরো এই ধরণের বই বের হবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ ইলিয়াস মোল্লার বইটির পাঠ পরবর্তী আলাপের কিছু অংশ। তিনি বাংলাদেশ কেমিক্যাল সোসাইটি ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর দ্যা এডভন্সমেন্ট অফ সায়েন্সেস এর সদস্য। তিনি জার্মানি বায়রুথ বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ছিলেন। তার গবেষণা জার্মানির আলেকজান্ডার ভন হাম্বোল্ট ফাউন্ডেশন ও দ্য রয়েল সোসাইটি লন্ডন কর্তৃক পুরস্কৃত হয়েছে। দেশি-বিদেশি জার্নালে তার প্রায় অর্ধশত গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।