‘যদি উড়তে না পার, তবে দৌড়াও; যদি দৌড়াতে না পার, তবে হাঁটো; হাঁটতে না পারলে হামাগুড়ি দাও। যে অবস্থাতেই থাকো, সামনে চলা বন্ধ করবে না। যা-ই করো না কেন সামনে এগিয়ে যেতে হবেই।
তোমার জীবনে তুমি যা নিয়েই কাজ কর, তাকে সবচেয়ে ভালোভাবে করার চেষ্টা কর। এমনভাবে কাজ কর, যেন তোমার আগে-পরে কেউ এতটা ভালো করে করতে না পারে।
যতক্ষণ না একজন মানুষ জানছে সে কিসের জন্য মরতে রাজি, ততক্ষণ সে জানবে না সে কিসের জন্য বেঁচে আছে।
যারা নিজের জন্য সুখ খোঁজে না, সুখ তাদেরই খুঁজে নেয়। কারণ, যারা নিজের জন্য সুখ খোঁজে তারা জানে না যে, প্রকৃত সুখ তাদের কাছেই ধরা দেয়, যারা অন্যের জন্য সুখ খোঁজে।
ভয়ের বন্যাকে ঠেকাতে আমাদের সাহসের বাঁধ তৈরি করতে হবে।
যদি কোনো কিছুর জন্য মরতে রাজি না থাকো, তবে তুমি বাঁচার উপযুক্ত নও।
যে কেউ মহৎ হতে পারে। কারণ সেবা করার ক্ষমতা সবারই আছে। মানুষের সেবা করার জন্য তোমার কোনো কলেজ ডিগ্রি দরকার নেই, ব্যাকরণ শেখার দরকার নেই। তোমার শুধু একটি মহৎ হৃদয় আর ভালোবাসায় পূর্ণ আত্মা থাকতে হবে।
সবচেয়ে খারাপ মানুষগুলোর মাঝেও অল্পকিছু ভালো গুণ আছে। আবার সবচেয়ে ভালো মানুষগুলোর মাঝেও অল্প হলেও খারাপ গুণ আছে। এটা বুঝতে পারলে আমরা ঘৃণার পথে অনেক কম যাব।
সবচেয়ে অন্ধকার রাতেই সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাগুলো দেখা যায়।
যে তোমার ছোট উপকার করেছে তাকে এমনভাবে কৃতজ্ঞতা জানাও যেন, সে কেন তোমার আরও বড় উপকার করল না- এই ভেবে আফসোস করে।
একজন সত্যিকার নেতা শুধু আদর্শ খোঁজে না, সে নতুন আদর্শের সৃষ্টি করে।
আমাদের জীবন সেখানেই শেষ হওয়া শুরু করে, যেখান থেকে আমরা সত্যের ব্যাপারে চুপ হয়ে যাই। মানুষের জন্য সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া এবং বোকা সেজে থাকার চেয়ে বিপজ্জনক কিছু আর পৃথিবীতে নেই।
জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, অন্যদের জন্য আমি কী করছি?
সবাই বিখ্যাত হতে পারবে না। কিন্তু সবার পক্ষেই মহান হওয়া সম্ভব।
মানুষের জীবনে অনেক সময়ে এমন দিন আসে যখন তাকে এমন কিছু করতে হয় যা নিরাপদ নয়, যার কারণে অন্যরা তাকে অপছন্দ করবে। কিন্তু সঠিক কাজ করতে হলে তাকে তা করতেই হবে।
প্রেম ও ভালোবাসা ব্যতিত ব্যক্তিজীবন সর্বদাই অসম্পূর্ণ। ব্যক্তি তার কর্মজীবনে যা-ই হোক, তার জীবনে প্রেম ও ভালোবাসার প্রভাব থাকবেই এবং তা নিয়ে তাঁর অনুভূতিও থাকবে। ভালোবাসা হলো পৃথিবীর একমাত্র শক্তি, যা শত্রুকেও বন্ধু বানাতে পারে। যার দয়া দেখানোর ক্ষমতা নেই, সে ভালোবাসার ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত। আমি বিশ্বাস করি নিরস্ত্র সত্য আর নি:স্বার্থ ভালোবাসাই দিনশেষে জয়ী হয়। এই কারণেই, সাময়িকভাবে পরাজিত হলেও সত্য খারাপ ও মিথ্যার চেয়ে শক্তিশালী।
বজ্র আঘাত করার পরেই শব্দ করে, আগে নয়। যদি বড় কিছু করার না পাই, তবে ছোট কাজই সবচেয়ে ভালো করে করবো। তোমার স্বপ্ন পূরণে বাধা দেয়ার অধিকার কোনো মানুষের নেই।
সময়কে অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করতে হবে। কারণ সঠিক কাজ করলেই সময় সবচেয়ে ভালো ফল দেবে।
একজন মানুষের জন্য এরচেয়ে খারাপ কিছুই হতে পারে না যে, সে লম্বা একটি জীবন কাটালো, কিন্তু তেমন কোনো জ্ঞান অর্জন করতে পারলো না।
সত্যিকার শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো মানুষকে গভীরভাবে এবং নতুনভাবে চিন্তা করতে শেখান।
যেসব কাজে মানুষের কল্যাণ হয়, তার প্রতিটিই সর্বোচ্চ যত্নের সঙ্গে করা উচিত।
একজন মানুষের সত্যিকার জীবন ততক্ষণ পর্যন্ত শুরু হয় না, যতক্ষণ না সে শুধু নিজের স্বার্থের জন্য বাঁচা বন্ধ করে অন্যদের জন্য বাঁচা শুরু করে।
একজন মানুষ কতদিন বাঁচলো, তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সে তার জীবনে কী করেছে।
ভাইয়ের মতো একসাথে বাঁচতে শিখতে হবে, না হলে নির্বোধের মতো একসাথে ধ্বংস হতে হবে।
অন্ধকার অন্ধকারকে তাড়াতে পারে না; কেবল আলোই অন্ধকারকে তাড়াতে পারে।
ঘৃণা দিয়ে ঘৃণা দূর করা যায় না। কেবল ভালোবাসা দিয়ে ঘৃণা দূর করা যায়।
কিছু মানুষ তোমাকে পছন্দ করে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, তুমি তার কোনো ক্ষতি করেছ। তবু তুমি তার কাছে স্রেফ অপছন্দের মানুষ। তোমার হাঁটা-চলা, কথাবার্তা অনেকের কাছেই ভালো লাগবে না। কেউ হয়তো তোমাকে অপছন্দ করে, কারণ তুমি তার চেয়ে ভালো কাজ জান। তুমি জনপ্রিয়, তোমাকে লোকে পছন্দ করে, সেটাও অপছন্দনীয় হওয়ার কারণ হতে পারে। তোমার চুল তার চেয়ে সামান্য বড় বা ছোট, তোমার গায়ের রং তার চেয়ে খানিকটা উজ্জ্বল কিংবা অনুজ্জ্বল- হয়তো কারণটা এমন! কেবল কারও কোনো ক্ষতি করলেই তুমি তার অপছন্দের পাত্র হবে, তা নয়।
অপছন্দ ব্যাপারটা আসে ঈর্ষাকাতরতা থেকে। মানুষের সহজাত চরিত্রেই এ অনুভূতির প্রভাব আছে।
যেখানেই জন্মাক মানুষ মানুষই। আমি মানুষ-এটাতো অবশ্যই বড় পরিচয়।
সত্যিকার নেতা আদর্শ খোঁজে না, সে আদর্শের জন্ম দেয়।’
আফ্রিকান-আমেরিকান মানবাধিকার কর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র এর বক্তৃতা থেকে