ফরমালিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সংক্রমিত হতে না দেয়া। অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাককে মেরে ফেলতে পারে। রং তৈরি, বস্ত্রখাতে কাপড় কুঞ্চিত হতে না দেয়া, সংরক্ষণ, বিস্ফোরণ এবং পলিমার তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
তবে ফরমালিন মানব স্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত ক্ষতিকারক পদার্থ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ফলে ফরমালিনযুক্ত খাবার খেয়ে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। তবে একেবারে সহজ কিছু উপায় অবলম্বন করে খাদ্য থেকে ফরমালিন পুরোপুরি দূর করা যায়।
অনেকেরই ধারণা, ১৫ থেকে ২০ মিনিট বিশুদ্ধ পানিতে ডুবিয়ে রাখলে খাদ্যদ্রব্য থেকে ফরমালিন দূর হয় বা কমে যায়। আসলে কমলেও তা অতটা কার্যকর নয়। তার চেয়ে বরং কাঁচা অবস্থায় খাবার থেকে ফরমালিন অপসারণ করতে চাইলে পানির কল ছেড়ে তার নিচে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে হবে। কারণ কাঁচাসবজি ও ফলের ত্বকে অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র রয়েছে।
আর পানিতে ডুবিয়ে রাখলে ফরমালিন আরো ভালোভাবে খাবারে মিশে যেতে পারে। তাই পানির কল ছেড়ে তার নিচে নির্দিষ্ট খাবার দ্রব্য বা ফলটি রেখে দিন। ভিনেগার বা লেবুর রসে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখেও ফরমালিন দূর করা যায়।
আগুনের তাপে ফরমালিন অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই রান্নার আগে ফরমালিন কমানোর পদ্ধতি ব্যবহার করে রান্না করলে খাবার পুরোপুরি ফরমালিন মুক্ত করা সম্ভব।
ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞরা ফল ধোয়ার কার্যকর কোনো পন্থার বের করতে গবেষণা চালিয়েছেন। ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এমন দুটো কীটনাশ ব্যবহার করেছেন তারা।একটি থিয়াবেনডাজল। এটি আপেলে দেখা যায়।
আরেকটি হলো ফোসমেঠ এটা অর্গানিক আপেলে দেওয়া হয়। এবার আপেলগুলোকে বিশেষজ্ঞরা তিনটি তরলে ধুয়ে পরীক্ষা করেন। পানিতে, একটি বাণিজ্যিক ব্লিচে কএবং বেকিং সোডায়। দেখা গেছে, বেকিং সোডা সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
১২-১৫ মিনিট পর আপেলের ৮০ শতাংশ থিয়াবেনডাজল চলে গেছে। আর ৯৬ শতাংশ ফোসমেট উদাও। প্রথমটিকে আপেল খুব বেশি শুষে নেয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে, থিয়াবেনডাজল আপেলের ভেতরে ৮০ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত প্রবেশ করে। আর দ্বিতীয়টি যায় ২০ মাইক্রোমিটার গভীরে।
তাই ব্লিচ বা পানিতে টানা দুই মিনিট ধোয়ার পর আসলে তেমন কীটনাশক দূর হয় না। কিন্তু বেকিং সোডা জাদু দেখিয়েছে। তাই এর পর থেকে বাড়িতে আপেল আনলে তা বেকিং সোডায় কিছুক্ষণ ধুয়ে নিন।