ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) বলেন, ‘জ্ঞানী-বুদ্ধিমান ব্যক্তি আগে চিন্তা করে বা অন্তর দিয়ে অনুভব করে, পরে কথা বলে বা মন্তব্য করে; আর বোকা-নির্বোধেরা প্রথমেই মন্তব্য করে এবং পরে চিন্তা করে।
জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা যত বাড়বে, বক্তব্য তত কমবে।
হীনতম জ্ঞান জিহ্বায় থাকে এবং উচ্চমানের জ্ঞান কর্মের মাঝে প্রকাশ পায়।
বুদ্ধিমান লোক নিজে নত হয়ে বড় হয়, আর নির্বোধ ব্যক্তি নিজেকে বড় বলে অপদস্ত হয়।
মানুষের চরিত্র সত্য ও সুন্দর হলে তার কথাবার্তাও নম্র ভদ্র হয়।
যে নিজের মর্যাদা বোঝে না অন্যেও তার মর্যাদা দেয় না!
স্বাস্থ্যের চাইতে বড় সম্পদ এবং অল্পে তুষ্টির চাইতে বড় সুখ আর কিছু নেই।
কৃপণতা সকল বদভ্যাসের সম্মিলিত রূপ।
অভ্যাসকে জয় করাই পরম বিজয়।
আত্মীয়ত্যাগী ধনী অপেক্ষা আত্মীয়বৎসল গরিব ভালো।
আত্মতুষ্টি নিশ্চিতভাবে নির্বুদ্ধিতার লক্ষণ।
নীচ লোকের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে অশ্লীল বাক্য।
বিপদে অস্থিরতা নিজেই একটি বড় বিপদ।
সম্মুখে তারিফ করে দুষমন সে জন।
হীনব্যক্তির সম্মান করা ও সম্মানীয় ব্যক্তির অপমান করা একই প্রকার দোষের।
সততার মাধ্যমে একজন নিরীহ প্রকৃতির লোকও যে মর্যাদার অধিকারী হয়, বুদ্ধিমানেরা রকমারি কলাকৌশল প্রয়োগ করেও তার নিকটে পৌঁছতে পারে না।
প্রতিটি মানুষের মূল্য তার যোগ্যতায়।
যে কাউকে একাকি উপদেশ দেয়, সে তাকে সজ্জিত করে; আর যে কাউকে সবার সামনে উপদেশ দেয়, সে তাকে আরও বিগড়িয়ে ফেলে।
তোমার শত্রুর শত্রু তোমার বন্ধু, আর তোমার শত্রুর বন্ধু তোমার শত্রু।
যা তুমি নিজে করো না বা করতে পারো না, তা অন্যকে উপদেশ দিও না।
কার্পণ্য ত্যাগ করো নতুবা আপনজনরা তোমার জন্য লজ্জিত হবে এবং অপরে তোমাকে ঘৃণা করবে।
মানুষের সাথে তাদের বুদ্ধি পরিমাণ কথা বলো।
বুদ্ধিমান ও সত্যবাদী ব্যক্তি ছাড়া আর কারো সঙ্গ কামনা করো না।
পূণ্য অর্জন অপেক্ষা পাপ বর্জন শ্রেষ্ঠতর।
মন্দ লোক অন্যদের সম্পর্কে ভালো ধারণা করতে পারে না, সর্বোচ্চ সে তাদেরকেও নিজের মতো মনে করে।
তোমার যা ভালোলাগে তাই জগতকে দান কর, বিনিময়ে তুমিও অনেক ভালো জিনিস লাভ করবে।
তুমি পানির মতো হতে চেষ্টা কর, যে কি-না নিজের চলার পথ নিজেই তৈরি করে নেয়। পাথরের মতো হয়ো না, যে নিজে অন্যের পথরোধ করে।
জীবনযাপনকে প্রয়োজনের মধ্যে সীমিত রাখো; শখ-বাসনার দিকে নিয়ে যাবে না। চাহিদা একজন ফকিরেরও পূর্ণ হয়ে যায়। আর শখ-বাসনা একজন রাজা-বাদশাহরও পূর্ণ হয় না।
কোনো মানুষের ভালো বা গুণের কিছু জানলে, তা বলো, প্রকাশ করো। কিন্তু কোনো ত্রুটি পেলে সেক্ষেত্রে তোমার নিজের গুণের পরীক্ষা বলে মনে করবে।
সেসব মানুষের ওপর আস্থা-ভরসা রাখবে, যারা তোমার তিনটি বিষয় মূল্যায়ন করে। ক. তোমার হাসি-আনন্দের ক্ষেত্রে অব্যক্ত দয়া পোষণ করে খ. তোমার ক্রোধের ক্ষেত্রে অব্যক্ত ভালোবাসা পোষণ করে গ. তোমার মৌনতার ক্ষেত্রে গোপনমুখ হিসেবে কাজ করে।
অল্প দান করতে কখনো লজ্জিত হইও না, কারণ অভাবীকে ফিরিয়ে দেয়া তার থেকে বেশী লজ্জার।
দ্রুত ক্ষমা করে দেয়া সম্মান বয়ে আনে আর দ্রুত প্রতিশোধ পরায়ণতা অসম্মান বয়ে আনে।
অতিরিক্ত সমালোচনা ঘৃণা এবং খারাপ চরিত্রের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
কারো অধঃপতনে আনন্দ প্রকাশ করো না, কেননা ভবিষ্যত তোমার জন্য কী প্রস্তুত করে রেখেছে সে সম্পর্কে তোমার কোনো জ্ঞানই নেই।
তিনটি আমল অত্যন্ত কঠিন- প্রচণ্ড রাগের সময় কাউকে ক্ষমা করা, নিদারুণ অভাব থাকা সত্ত্বেও মানুষকে দান করা, একান্ত নির্জনতায় নিজেকে পাপ থেকে বিরত রাখা।
লোকে তোমার প্রশংসা করলে খুশি হয়ো না। লোকে তোমার নিন্দা করলেও দুঃখ পেও না। কারণ লোকের কথায় কয়লা কখনো সোনা হয় না।
স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষার ওপর ভরসা করে বসে থেকো না, কেননা এটা হলো মূর্খ মানুষের পুঁজি।
কখন বুঝবে একটি দেশ ও সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে? যখন দেখবে- দরিদ্ররা ধৈর্য্যহারা হয়ে গেছে, ধনীরা কৃপণ হয়ে গেছে, মূর্খরা মঞ্চে বসে আছে, জ্ঞানীরা পালিয়ে যাচ্ছে এবং শাসকেরা মিথ্যা কথা বলছে।
বন্ধুত্ব করার মতো কোনো যোগ্য লোক পাওয়া না গেলেও অযোগ্যদের সাথে বন্ধুত্ব করতে যেও না।
রাজ্যের পতন হয় দেশ হতে সুবিচার উঠে গেলে, কারণ সুবিচারে রাজ্য স্থায়ী হয়।
মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে, প্রেম-ভালোবাসার জন্য; আর বস্তু সৃষ্টি করা হয়েছে ব্যবহারের জন্য। সমস্যার জন্ম নেয়, যখন বস্তুকে ভালোবাসা হয় এবং মানুষকে ব্যবহার করা হয়।
দুনিয়াতে সব চেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে নিজেকে সংশোধন করা আর সব চেয়ে সহজ কাজ হচ্ছে অন্যের সমালোচনা করা।
নিজের মহানুভবতার কথা গোপন রাখো, আর তোমার প্রতি অন্যের মহানুভবতার কথা প্রচার করো।
বুদ্ধিমানেরা বিনয়ের দ্বারা সম্মান অর্জন করে,আর বোকারা ঔদ্ধত্যের দ্বারা অপদস্ত হয়।
মূর্খলোক সম্পদের জন্য অন্তরের শান্তি বিসর্জন দেয়; বুদ্ধিমান ব্যক্তি মনের শান্তির জন্য সম্পদ লুটিয়ে দেয়।
প্রত্যেক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করাই পাপ। প্রতিটি পাপই হলো অকৃতজ্ঞতা।’