ব্যর্থতাকে কখনওই ভুলের শাস্তি হিসেবে দেখবেন না। এটাকে সামনে এগুনোর শিক্ষা হিসেবে দেখুন। ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিগুণ উৎসাহে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যান।
ব্যর্থ হবার কারণ
সবজান্তা মনোভাব
অনেকেই নিজেকে সবজান্তা মনে করেন এবং অন্য কারো কাছ থেকে শিখতে লজ্জাবোধ করেন।
অযথা সময় নষ্ট করা
সফল হবে কিনা। সফল না হলে কি হবে! এইসব চিন্তা করে অযথা সময় নষ্ট করে।
সমালোচনা করা
প্রতিনিয়ত একজনের দোষ ত্রুটি অন্যের নিকট বর্ণনার দ্বারা মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়।
শৃঙ্খলার অভাব
যার মধ্যে শৃঙ্খলা নেই তার জীবনে ব্যর্থতা অনিবার্য। সুশৃঙ্খল মানুষের প্রধান গুণ হল সময়ের কাজ সময়ে করা। আলস্য, ঢিলেমি, কাজ ফেলে রাখা – এগুলো সাফল্যের সবচেয়ে বড় শত্রু।
না বলতে দ্বিধা
সফল হতে হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে “না” বলা শিখুন। যেখানে না বলা প্রয়োজন সেখানে অযথা ‘হ্যাঁ’ বলার দরকার নেই।
এগিয়ে যেতে ভয়
পরিকল্পনা করেন, কাজও করেন। কিন্তু, “যদি ব্যর্থ হই” এই ভয়ে সামনে পা বাড়ানোর সাহস পান না। সম্ভাবনা নিশ্চিত না হয়েও অনেক সময় চেষ্টা করে দেখতে হয়।
দ্রুত হাল ছেড়ে দেন
হঠাৎ কিছু ব্যর্থতায় মনোবল ভেংগে যায়। নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে পারেন না, তাই দ্রুত হাল ছেড়ে দিয়েছেন।হাল ছেড়ে দেয়াটাই হল সবচেয়ে বড় পরাজয়। সহজে হাল ছেড়ে দেয়ার অভ্যাস মানুষকে ব্যর্থ হওয়ার আগেই ব্যর্থ করে দেয়। কোনও জিনিসের শেষ না দেখেই তাকে শেষ বলে ধরে নেন। এটা এক ধরনের মানসিক পঙ্গুত্ব।
ধৈর্য না ধরা
বড় লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ধৈর্য ধরতে শিখতে হবে। বড় লক্ষ্য পূরণের জন্য ধৈর্য ধরে চেষ্টার কোনও বিকল্প নেই।
আত্মবিশ্বাসের অভাব
আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না এই ধরণের মন মানুষিকতা নিয়ে যা করেন তারা সফলতার পথ খুঁজে পান না।সাফল্যের জন্য বুদ্ধি আর প্রতিভার চেয়েও আত্মবিশ্বাস জরুরী। আত্মবিশ্বাস থেকেই মূলত চেষ্টা আসে।
অজুহাত দাঁড় করানো
অজুহাত দেখানো মানে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো। অপারগতা স্বীকার দুর্বল মানুষের লক্ষণ।
অহঙ্কার
অহঙ্কার পতনের মূল। অহঙ্কারও মানুষকে চেষ্টা ও শেখা থেকে বিরত রাখে। অহঙ্কারী মানুষ নিজের ভুল ত্রুটি দেখতে পায় না, পরামর্শ নেয় না। মনে করে নিজেই সবচেয়ে ভালো বোঝে।
ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা না নেয়া
অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেন না। ভাবেন যা করেছেন ঠিকই করেছেন। অন্য মানুষের ভুলের কারণে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
অযোগ্য ভাবা
নিজের যোগ্যতার ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। যারা নিজের যোগ্যতার ওপর বিশ্বাস করে না, তারা চেষ্টা করারও সাহস পায় না। ফলে, দিনশেষে তারা ব্যর্থ হয়।
চর্চা না করা
প্রাকটিস ছাড়া কোনওকিছুতেই মানুষ সেরা পারফর্মার হয় না। আজ হয়তো চেষ্টা করে পারছেন না, কিন্তু প্রাকটিস করলে আগামী সপ্তাহে ঠিকই আরেকটু ভালো পারবেন।
অতিরিক্ত তাড়াহুড়া
সফল হওয়ার জন্য অতিরিক্ত তাড়াহুড়া মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি ব্যর্থতা মেনে নিতে তাড়িত করে। অতি দ্রুত সেই লক্ষ্য পূরণের আশা করলে খুব সহজেই হতাশ হয়ে পড়তে হয়।
পরিকল্পনার অভাব
সফল হওয়ার জন্য শুধু লক্ষ্য বা ইচ্ছা থাকাই যথেষ্ঠ নয়। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য যথাযথ পরিকল্পনা থাকতে হবে। হাতে একটি রোডম্যাপ থাকলে তা আপনাকে সত্যিকার কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। পরিকল্পনাহীনতার ফলাফল অনিবার্য ব্যর্থতা। এন্টনি ডি সেইন্ট বলেন, ‘পরিকল্পনা ছাড়া লক্ষ্য দিবা স্বপ্নের চেয়ে বেশি কিছু নয়’।
মানসিক পঙ্গুত্ব
কিছু মানুষ আশার চেয়ে খারাপ ফলাফল পেলেই ধরে নেন যে তাদের দিয়ে আর হবে না। তারা আর চেষ্টা করেন না। অন্য কিছু করার চেষ্টা করেন। এই অভ্যাস মানুষকে ব্যর্থ হওয়ার আগেই ব্যর্থ করে দেয়। কোনও জিনিসের শেষ না দেখেই তাকে শেষ বলে ধরে নেন। এটা এক ধরনের মানসিক পঙ্গুত্ব।
ঝুঁকি নিতে ভয় পাওয়া
অতিরিক্ত নিরাপদ থাকতে চেয়ে একটু ঝুঁকি দেখলেই কোনও কিছু থেকে পিছিয়ে আসেন যারা, তারাও বেশিরভাগ সময়ে ব্যর্থ হন।
ব্যর্থতার ভয়
অতিরিক্ত ব্যর্থতার ভয় মানুষকে কাজ শুরুই করতে দেয় না। অতিরিক্ত ব্যর্থতার ভয়ের কারণে মানুষ জীবনে অনেক সুযোগ নষ্ট করে ফেলে। কারণ তারা চেষ্টাই করে না। রবার্ট এফ কেনেডির একটি উক্তি হল, ‘যারা বড় ব্যর্থতাকে ভয় পায় না, একমাত্র তারাই বড় সাফল্য পায়’।
মানুষ কি বলবে ভাবা
মানুষ কি বলবে – এটা ভেবে নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দেবেন না। আজ যারা আপনাকে নিয়ে কথা বলবে, কাল সাফল্য পেলে তারাই আপনার প্রশংসা করবে।