আনিসুর রহমান এরশাদ
শি জিনপিং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের কাণ্ডারি। ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট। একচ্ছত্র নেতা। সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান। সামরিক বাহিনীর প্রধান। ২০১৮ সালে দেশটির সংবিধানে সংশোধনী এনে তিনি যতদিন চান ততদিন চীনের রাষ্ট্রপ্রধান থাকার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি জানেন কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছতে হয়।
চীনের শুরুর দিককার প্রসিদ্ধ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের সন্তানদের মধ্যে তাকে সবচেয়ে সার্থক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি সন্তোষজনক মানুষ, আবেগের দিক থেকে স্থিতিশীল মানুষ। যিনি নিজের বিচার বিবেচনাকে ব্যক্তিগত ভোগান্তি বা দুর্ভোগের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেন না। চিন্তাশীল মানুষটি রাজনৈতিক জীবনে বহু পরীক্ষা ও পর্যায় পার হয়ে এই অবস্থানে এসেছেন। আজ জানাব বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রনেতা ‘দ্য চেয়ারম্যান অব এভরিথিং’ সম্পর্কে।
দ্য চেয়ারম্যান অব এভরিথিং
চীনে প্রধানত তিনটি উপাধিতে পরিচিত শি জিনপিং। রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটির প্রধান। সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দেশটির সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) কমান্ডার-ইন-চিফ এবং কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়নার (সিপিসি) জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রধান।
চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের অনেক পদবি রয়েছে। সবগুলো মিলিয়ে এখন তিনি ‘দ্য চেয়ারম্যান অব এভেরিথিং’ নামে পরিচিত। ২০০৯ ও ২০১১ সালে টাইম ম্যাগাজিন ঘোষিত বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষের তালিকায় ছিলেন। ২০১০ সালে ব্রিটিশ ম্যাগাজিন নিউ স্টেটসম্যান ঘোষিত ৫০ জন সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিলেন।
দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স
শি জিনপিং দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান এবং রাজনৈতিক ও বাজার অর্থনীতির সংস্কার প্রসঙ্গে উদার নীতির জন্য বিখ্যাত। প্রশাসক হিসেবে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ব্যাপারে তাকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে বিশ্বাসী বলে মনে করা হয়।
ট্রাবল শ্যুটার
সমস্যা সমাধানে দক্ষতার জন্য তাকে অভিহিত করা হয় ‘ট্রাবল শ্যুটার’ হিসেবে। তিনি খুবই স্পষ্টভাষী। তিনি একজন উদ্যোগী, আন্তরিক, সতর্ক, পরিশ্রমী, সাধাসিধে ও মুখচোরা মানুষ। তিনি একজন বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ যিনি সহজে কোনো সমস্যা সমাধান করতে পারেন এবং কখনও উচ্চপদের ভাবগাম্ভীর্যে আবদ্ধ থাকেন না।
সৎ ও দায়িত্বশীল
অত্যন্ত সৎ ও দায়িত্বশীল মানুষ। ক্ষমতার দিক থেকে তিনি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছেন, যা মাও সে তুং-এর পর আর কেউ ভোগ করেননি। তিনি দেশের শাসন ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছেন। খুবই নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন সেই বদলের সঙ্গে। আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকার পথও পরিষ্কার করেছেন ব্যক্তিগত জীবনে পরাক্রমশালী এই লৌহমানব।
জন্ম ও বংশ পরিচয়
শি জিনপিং এর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৫ জুন বেইজিংয়ে। তার পৈতৃক নিবাস হনান প্রদেশের তেংচু জেলার শিয়িং শহরে। তিনি উত্তর চীনের শানসি প্রদেশে কমিউনিস্ট গেরিলা আন্দোলনের অন্যতম নেতা, পরবর্তীতে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী শি জোংশুনের দ্বিতীয় সন্তান। জিনপিংয়ের জন্মের সময়ে জোংশুন কমিউনিস্ট পার্টির প্রপাগান্ডা বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং পরে ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কৃষি মজুর
জিনপিংয়ের ১০ বছর বয়সে তার বাবা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পর্যায়ে রাজনৈতিক কোন্দলের শিকার হন এবং প্রতিহিংসাবশত বদলির ফলে হেনান প্রদেশের লুইয়াং শহরের একটি কারখানায় নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ সালের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ফলে জোংশুন আবারও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হন ও গ্রেপ্তার হন, যখন জিনপিংয়ের বয়স ১৫। এই সময়ে তরুণ বয়সে কোদাল হাতে মাঠে কাজ করতে হয় তার। ক্ষেতে কৃষি মজুর হিসেবে কাজ করেছেন, গুহায় থেকেছেন। এক প্রত্যন্ত গ্রামে কঠিন জীবন যাপন করতেন।
মাথার নিচে ইট দিয়ে ঘুমানো
গৃহযুদ্ধের সময় কমিউনিস্টদের শক্ত ঘাঁটি ও চীনা বিপ্লবের পবিত্র ভূমি ইয়ানানকের কৃষি খামারে কাজ করেছেন তিনি। ওই সময়ই শির প্রতিভার স্বতঃস্ফূর্ত স্ফূরণ ঘটে। দিনের বেলা কৃষকদের সঙ্গে কঠিন পরিশ্রম, রাতে তাদের পাশেই মাথার নিচে ইট দিয়ে ঘুমানো। ফলে রাজনীতিক হিসেবে শি জিনপিংয়ের উঠে আসা কুসুমাস্তীর্ন ছিলো না। অভিজাত রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নিলেও কৈশোর ও তারুণ্যে অশেষ দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাকে। কৈশোর ও তারুণ্যের কঠোর পরিশ্রমের অভিজ্ঞতাই তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শিক্ষা।
কঠোর পরিশ্রম
নেতৃত্বের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি তার জীবনে সংমিশ্রিত হয়েছে আধুনিক শিক্ষা। জিনপিং মাও সেতুং-এর ডাউন টু দ্য কান্ট্রিসাইড বা গ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা কর্মসূচীতে অংশ নেন ও ১৯৬৯ সালে শানসি প্রদেশের ইয়ানানে ইয়াঞ্চুয়ান শহরে বসবাস করতে যান। ১৯৭৪ সালে পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। তবে এর আগে পরপর সাতবার খারিজ হয় তার আবেদন।
তিনি ইয়ানানে কমিউনিস্ট পার্টির উৎপাদন বিষয়ক উপদলের প্রধান নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে তিনি যখন এই কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসেন তখন তার বয়স মাত্র ২২ বছর। জিনপিং ১৯৭৫ সালে রসায়ন প্রকৌশল অধ্যয়নের জন্য চীনের বিখ্যাত কিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৭৯ সালে উত্তীর্ণ হন। রসায়ন প্রকৌশল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রিও লাভ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরুবার পর তিনি জেঙ্গ বিয়াওর সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্বে ছিলেন। জিনপিং ১৯৮৫ সালে মার্কিন কৃষিব্যবস্থা বিষয়ে গবেষণারত একটি চীনা প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের মুস্কাটিন শহর ভ্রমণ করেন।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৭১ সালে কমিউনিস্ট ইউথ লীগে যোগদান করেন এবং ১৯৭৫ সালে সেখান থেকে কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়নায় যোগ দেন। ১৯৮২ সালে দলের একজন সম্পাদক হিসেবে তাকে হাবেই প্রদেশের চেঙ্গডিং জেলায় পাঠানো হয়। রাজনৈতিক জীবনে তিনি চারটি প্রদেশে কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন- শানশি, হুপেই, ফুচিয়েন ও চচিয়াং। তিনি ফুচিয়েন প্রদেশের ফুৎসু পৌর শহর কমিউনিস্ট পার্টির একাধিক পদে বহাল ছিলেন ও ১৯৯০ সালে ফুৎসু দলীয় বিদ্যালয়ের সভাপতি হন।
১৯৯৯ সালে তিনি ফুচিয়েন প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর নিযুক্ত হন, এবং পরের বছর গভর্নর ঘোষিত হন। ২০০২ সালে চিনফিং চচিয়াং প্রদেশের শীর্ষ একাধিক রাজনৈতিক ও সরকারি পদে নিযুক্ত হন। এ বছরই ভারপ্রাপ্ত গভর্নর থাকা অবস্থায় তিনি অর্থনৈতিকভাবে সফল এই উপকূলীয় প্রদেশটির কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নিযুক্ত হন।
১৫তম সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির একজন বিকল্প সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৬তম সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটিরও একজন সদস্য ছিলেন এবং এর মধ্য দিয়ে চীনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বে তার প্রবেশ ঘটে। ২০০৬ সালে সাংহাই কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান হন তিনি। এত গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় তিনি কখনও কোনো রাজনৈতিক বিতর্ক, কেলেঙ্কারি ও কোন্দলের মুখে পড়েননি।
২০০৭ সালের অক্টোবরে সিপিসির ১৭তম কংগ্রেসে ৯-সদস্য বিশিষ্ট পলিটব্যুরো কার্যকরী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হন। একই সময়ে জিনপিং কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের প্রধান নিযুক্ত হন। ২০০৮ সালের মার্চে সিপিসির ১১তম জাতীয় গণসম্মেলনে জিনপিং ভাইস প্রেসিডেন্ট ঘোষিত হন।
২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের আয়োজক দলের নেতৃত্ব দেন। ২০০৮ সালের মে মাসে মাত্র ৮ দিনের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, মঙ্গোলিয়া, সউদি আরব, কাতার ও ইয়েমেন ভ্রমণ করেন। তার উপর গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের মহোৎসব আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বিদেশ সফর
২০০৯ সালের অক্টোবরে পাঁচদিনের আন্তর্জাতিক সফরে বেলজিয়াম, জার্মানি, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি ও রোমানিয়া সফর করেন। ঐ বছরেরই ডিসেম্বরে এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যে তিনি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কম্বোডিয়া ও মায়ানমার সফর করেন। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে চিনফিং যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড ও তুরস্ক সফর করেন। এভাবেই তিনি ধীরে ধীরে চীনের সীমানার বাইরেও বিশ্বনেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠতে শুরু করেন।
রাষ্ট্রপতি
২০১২ ও ২০১৩ সালে যথাক্রমে সিপিসির মহাসচিব ও গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রপতি হন। ২০১৬ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ‘প্রধান’ হিসেবে শি জিনপিংয়ের নাম ঘোষণা করা হয়।
পছন্দ
শি জিনপিং বাস্কেটবল খেলতে পছন্দ করেন। হলিউডের যুদ্ধ নির্ভর ছবিগুলো দেখতে পছন্দ করেন। নিজে কোনো দিন চীনের বাইরে গিয়ে থাকেননি। তার পড়াশোনার পর্বও সম্পূর্ণ কেটেছে নিজের জন্মভূমিতেই।
বিবাহবিচ্ছেদ
তিনি কোনো দিন চীনের বাইরে থাকতে আগ্রহী ছিলেন না। এ কারণে নাকি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ অবধি হয়ে গিয়েছিল। কারণ তার প্রথম স্ত্রী কে লিংলিং চীন ছেড়ে ব্রিটেনে গিয়ে থাকতে চেয়েছিলেন। লিংলিংয়ের সঙ্গে তিন বছরের দাম্পত্য শেষ হয়ে যায় ১৯৮২ সালে। কে লিংলিংকে বিয়ে করেছিলেন ১৯৮০ সালে। তিনি ছিলেন একজন কূটনীতিকের কন্যা।
দ্বিতীয় বিয়ে
প্রথম স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের পাঁচ বছর পরে বিখ্যাত লোকগীতি শিল্পী ও অভিনেত্রী পেং লিউয়ানকে বিয়ে করেন শি জিনপিং। বিয়ের সময় পেং লিউয়ান চীনে তার স্বামীর চেয়ে অনেক বেশি বিখ্যাত ও পরিচিত মুখ ছিলেন। স্বামী ও স্ত্রীর ভিন্নধারার জীবনের জন্য দীর্ঘ সময়ে তাদেরকে আলাদা থাকতে হয়।
স্ত্রী পেং লিউয়ান জিনপিংকে একজন কঠোর পরিশ্রমী, পরিমিত ও সাধাসিধে মানুষ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘তিনি যতক্ষণ বাড়িতে থাকেন, তখন তার উপস্থিতি কখনওই জানান দেয় না যে একজন এত বড় মাপের রাজনৈতিক নেতা বাড়িতে অবস্থান করছেন। আমার কাছে তিনি শুধুই আমার স্বামী’। শির স্ত্রী চীনা সামরিক বাহিনীতে মেজর জেনারেল হিসেবেও কর্মরত।
সন্তান
বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালী এই রাষ্ট্রনেতা তার মেয়ের ব্যক্তিগত জীবনকে পর্দার আড়ালে রাখতেই পছন্দ করেন। শি জিনপিং ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী চীনের বিখ্যাত লোক সংগীত শিল্পী পেং লিউয়ানের একমাত্র সন্তানের জন্ম ১৯৯২ সালের ২৭ জুন। দাদা তার নাম রেখেছেন জিয়াও মুজি। আসল নাম শি মিংজে। হাংজু ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজেস স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যয়নের সময় শিখেছেন ফরাসি ভাষা।
দাদা কমিউনিস্ট বিপ্লবী ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা শি জংজুন তার ডাক নাম রেখেছিলেন শিয়াও মুজি। তিনি সরল ও মার্জিত তরুণী, যিনি সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নির্ঝঞ্ঝাট হিসেবে মেংজি পরিচিত। শখের মধ্যে রয়েছে বই পড়া ও ফ্যাশন। কূটনৈতিক নিরাপত্তার কারণে ছদ্মনামে বেড়ে উঠেছেন তিনি। তিনি সেভাবে প্রচারের আলোয় কার্যত আসতেই চান না। অনন্য সাধারণ জীবন যাপন করেন।
২০০৮ সালে সিচুয়ানে ভয়ংকর ভূমিকম্পের পর তিনি দুর্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম ও আহতদের সেবায় নিয়োজিত হন। ফ্রন্টলাইনে থেকে সহযোগিতা করেন। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কঠোর পরিশ্রম করেন। সে অনেক কিছু শিখতে পারে এবং স্থানীয় অনেকের সঙ্গেই তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। দিনের ২৪ ঘণ্টা চীনা দেহরক্ষীরা মিংজের সঙ্গে থাকেন।
২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ছদ্মবেশে ম্যাসাচুসেটসের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান মিংজে। মে মাসে জানা যায় যে, জিনপিংয়ের মেয়ে খ্যাতিমান আইভি লিগ স্কুলের একজন আন্ডারগ্র্যাজুয়েট। তার উপস্থিতি নির্ঝঞ্ঝাট এবং সহপাঠীরা তাকে পড়ুয়া ও বুদ্ধিমান হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মিংজে বই পোকা, খুব শান্ত ও পড়ুয়া।
মিংজে পড়াশোনায় নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন। মিংজে মনোবিজ্ঞান ও ইংরেজি অধ্যয়ন করেন এবং ২০১৪ সালে ব্যাচেলর অব আর্টস গ্র্যাজুয়েট হন। পরে বেইজিং ফিরে আসেন। এরপর থেকেই নিজের জীবন প্রায় নীরবেই কাটাচ্ছেন মিংজে। তবে ইতোমধ্যেই মিংজেকে তার বাবার উত্তরসূরি বলা হচ্ছে। পারিবারিক ধারা মেনে তিনিও রাজনীতিতে পা রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।