আনিসুর রহমান এরশাদ
পরিবেশসচেতনতা আন্দোলনে নতুন ঢেউ এনেছে ধরিত্রী কন্যা গ্রেটা থুনবার্গ। পৃথিবীর পক্ষে তার লড়াই অনুপ্রেরণাদায়ী। তার কার্যক্রম বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। পৃথিবীকে জাগিয়ে তুলেছে। পরিবেশখাতে বিদ্যমান অবস্থা পরিবর্তন চান এই সুইডিশ বিস্ময় বালিকা। এখন অষ্টাদশী মেয়েটিই সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবেশকর্মী। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্মকে সংগঠিত করছেন। স্কুলে পড়াকালীনই বিশ্ব পরিবেশ নিয়ে মুখর এই জলবায়ু কন্যা।
ফ্রাইডে ফর ফিউচার
ফ্রাইডে ফর ফিউচার নামক জলবায়ু সংরক্ষণ সংগঠনের মুখপাত্র। অসাধারণ বাগ্মী। তার ডাকে সুন্দর গ্রহকে বাসযোগ্য রাখার স্বার্থে পরিবেশ রক্ষার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের নানা বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশ্বনেতৃবৃন্দ নড়েচড়ে বসেছেন তার ডাকে। খুব কম মানুষই এখন পাওয়া যাবে যে মেয়েটির নাম শোনেনি। গ্রেটার শুরু করা গণ আন্দোলনের বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি বড় অবদান। আজ জানাব জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সাড়া জাগানো অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ সম্পর্কে।
নয়া পরিবেশ আন্দোলনের পথিকৃৎ
নয়া পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ গ্রেটা টিনটিন ইলেওনোরা এর্নম্যান থুনবার্গ এর জন্ম ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি সুইডেনের স্টকহোমে। আট বছর বয়সে প্রথম জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি জানতে পারেন। অ্যাসপারজার সিনড্রোম, অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার (ওডিসি) এবং সিলেকটিভ মিউটিজমের মতো জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হন।
তিনি রসায়নে নোবেল পুরস্কার জয়ী বিজ্ঞানী স্ভান্তে আরহেনিয়াসের উত্তরসূরি। তার মাতা মালেনা এরম্যান হলেন একজন অপেরা সঙ্গীত শিল্পী এবং তার পিতা হলেন অভিনেতা স্ভান্তে থুনবার্গ। তার দাদা ওলফ থুনবার্গ একজন অভিনেতা ও পরিচালক ছিলেন।
২০১৮ সালের মে মাসে ১৫ বছরের গ্রেটা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে এক রচনা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পান। আগস্ট মাসে জলবায়ু পরিবর্তন-সংকটের নিরাময় বিধি অবিলম্বে কার্যকরী করার জন্যে স্কুল বাদ দিয়ে টানা তিন সপ্তাহ সুইডেন সংসদ ভবনের বাইরে প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ শুরু করেন। জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না, সেজন্য তার ব্যক্তিগতভাবে করা প্রতিবাদ ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে পোস্ট করায় প্রচার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ঘোষণা দেন প্রতি শুক্রবার তিনি সুইডিশ পার্লামেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন, যতদিন পর্যন্ত না তারা তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার ব্যাপার অঙ্গীকার দেয়। তখন থেকেই ক্রমান্বয়ে জনমত তৈরি হতে থাকে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় স্কুল অবরোধের ডাক দেন। আন্দোলন জোরদার হলে সেলিব্রেটি বনে যান। তিনি সোজাসুজি এবং জোরালো যুক্তিপূর্ণ কথা বলেন।
বিভিন্ন সমাবেশে ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি ও তা নিরসনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ সম্পর্কে বলেন। বড়ো বড়ো দেশগুলোর অনীহা ও অব্যবস্থা চোখে আঙুল দিয়ে দেখান। গোটা পৃথিবীর জলবায়ু কর্মীরা তার সহজ, সরল, সাবলীল পদ্ধতি ও প্রতিবাদে চমৎকৃত হয়। যা তাদের দীর্ঘ আন্দোলনে সম্ভব হয়নি তাই দৃঢ়তা ও প্রত্যয়ে সার্থক করে তুলেছে ছোট্ট মেয়েটি।
প্রতিবাদের প্রতীক থুনবার্গ
২০১৯ সালের ১৫ মার্চ পরিবেশ আন্দোলন ফ্রাইডেস ফর দ্যা ফিউচারের ডাকে জার্মানি, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ ১১২টি দেশের আনুমানিক ১.৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থী সাড়া দেয়। দেশে দেশে তরুণ-তরুণীরা জলবায়ু প্রতিরোধ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। ১,৬৫৯টি স্থানে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও মিছিল হয়। থুনবার্গ হয়ে ওঠেন প্রতিবাদের প্রতীক।
জনসাধারণের কাছে, রাজনৈতিক নেতাদের কাছে এবং বিভিন্ন সমাবেশগুলোতে ভূমন্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধির সমস্যা নিরসনে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহবান জানান। সারা বিশ্বে তার আন্দোলন ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় । টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে তাকে পরিচয় করিয়ে দেয় ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নেতা’ হিসেবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ট্রেনে ভ্রমণ করে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি।
একরত্তি মেয়ে প্রত্যয় আর প্রতিভার জোরে বিশ্বের বিজ্ঞান বিশ্বাসকে জাগিয়ে তুলেছে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব হয়ে পৃথিবীবাসীর নজর কেড়েছে। পেয়েছেন অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। ২০১৯ সালে লাভ করেন- ফ্রিট অর্ডার পুরস্কার, রাহেল কারসন পুরস্কার, অ্যাম্বাসেডর অফ কনশান্স অ্যাওয়ার্ড ও রাইট লাইভলিহুড পুরস্কার।
ডাচ কিডস রাইট অরগানাইজেশনের পক্ষ থেকে ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পীস প্রাইজ পান। ২০১৯ সালের মার্চে নরওয়ের তিন জন সংসদ সদস্য তাকে শান্তির জন্যে নোবেল পুরস্কারেরও সুপারিশ করেন। ১৬ বছর বয়সেই নোবেল শান্তি পুরষ্কারের মনোনীত তালিকায় আসেন।
পারসন অফ দ্য ইয়ার
এই পরিবেশ সচেতন স্কুল ছাত্রীকে টাইম ম্যাগাজিন ২০১৮ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী কিশোর-কিশোরীর তালিকায় স্থান দেয়। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাণ ও প্রকৃতি ধ্বংসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন সৃষ্টিকারী গ্রেটা টাইম ম্যাগাজিনের ২০১৯ সালের ‘পারসন অফ দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হন। প্রকৃতির সুরক্ষায় গ্রেটার অসামান্য স্পৃহা এবং চলমান ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তার অভাবিত স্পর্ধায় আন্তরিক সমর্থন ও শ্রদ্ধা রেখেছেন পরিবেশবাদিরা।
সুইডেন ও নরওয়ে উভয় দেশ গ্রেটাকে মনোনীত করেন পরিবেশ পুরস্কারের জন্য। কিন্তু তিনি এ পুরস্কার বা পুরস্কার মূল্য ৫২ হাজার ডলার গ্রহণ করেননি। ইনস্টাগ্রামে দেয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, জলবায়ু আন্দোলনের জন্য পুরস্কারের কোন প্রয়োজন নেই। সমসাময়িক বিজ্ঞানের কথা শোনানোর জন্য আমাদের দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদ ও দায়িত্ববান মানুষের প্রয়োজন। অনেক মর্যদাপূর্ণ এ পুরস্কার দেয়ার জন্য নর্ডিক কাউন্সিলকে ধন্যবাদ।
পুরস্কারের অর্থদান
কিশোরী পরিবেশবাদী কর্মী গ্রেটাকে মানবাধিকার পুরস্কার গুলবেনকিয়ান প্রাইজ ফর হিউম্যানিটিতে ভূষিত করে পর্তুগাল। পুরস্কারটির অর্থমূল্য ছিল ১০ লাখ ইউরো। সেখান থেকে তিনি ১ লাখ ইউরো বাংলাদেশ ও ভারতের বন্যাদুর্গতদের জন্য দেন। পুরস্কারের অর্থ পুরোটাই গ্রেটা থুনবার্গ ফাউন্ডেশন জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় কাজ করা দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশেষত ‘গ্লোবাল সাউথে’ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ব্যয় করে। ১ লাখ ইউরো আমাজনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে কাজ করা ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার ব্রাজিল’ এর ‘এসওএস আমাজোনিয়া’ প্রচারণায় দেন।
পরিবেশ আন্দোলন
আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা পরিবেশ আন্দোলন শুরু করেছেন ঘর থেকেই। প্রায় দুইবছর ধরে নিজের পিতা এবং মাতাকে কার্বন কমাতে ভূমিকা রাখার আহবান জানান। নিজে বিমান চড়া বাদ দেন। পরিবেশের উপর সামগ্রিক প্রভাব কমানোর চেষ্টা করেন। মা-বাবাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে পরিহার করিয়েছে উড়োজাহাজ ভ্রমণ। অথচ বিমানে চড়া ছিলো তার মায়ের কাজেরই একটি অংশ; ফলে তিনি মেয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজের কর্মজীবনই ত্যাগ করেন, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার বিসর্জন দেন।
পুরস্কার প্রত্যাখ্যান
বিভিন্ন নামি-দামি পুরস্কারও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন, কারণ সেগুলো পেতে হলে তার আকাশপথে সফর করা বাধ্যতামূলক ছিল। গ্রেটা খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে মাংস। যত রকমভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড কম নিঃসরণ করা যায়, তার সবই করছে সে। বক্তৃতা দিচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সব সমাবেশে।
জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন
২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে বক্তব্য দিতে রেসিং ইয়টে করে নিউ ইয়র্কে যান গ্রেটা। কার্বন নির্গমন হয় না এমন পাল তোলা নৌকায় সেই যাত্রায় তার সময় লাগে দুই সপ্তাহ। বিমানে উঠতে অস্বীকৃতি জানান তিনি, কারণ বিমানের জ্বালানি পুড়ালে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে উঠে রাষ্ট্রনেতাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করান গ্রেটা।
আপনাদের সাহস কী করে হয়?
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তিনি রাগত স্বরে কড়া ভাষায় বলেন, আপনাদের সাহস কী করে হয়? ফাকা বুলি আওড়িয়ে আপনারা আমাদের স্বপ্ন ও কৈশোরকে চুরি করেছেন। গালভরা প্রতিশ্রুতিই সার। প্রকৃতি ধংস হয়ে যাচ্ছে আর আপনারা টাকার খেলায় মেতে আছেন। এত বড় স্পর্ধা আপনারা কোথায় পান? নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নতুন প্রজন্মকে ঠকাচ্ছেন। নতুন প্রজন্ম কোনোদিনও আপনাদের ক্ষমা করবে না। আপনাদের কত দুঃসাহস। আমার এখানে থাকা উচিত না। আমার স্কুলে থাকার কথা।
সবাইকে দায়ী করা উচিত নয়
তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন কিশোরীসুলভ কোনো কাজের মাধ্যমে নয়, বরং বিশ্বনেতাদের মুখে ঝামা ঘষে দেয়ার মতো বক্তৃতার মাধ্যমে। বার্ষিক ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে উপস্থিত শীর্ষ নেতাদের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ বলেন, আমরা সবাই মিলে নাকি জলবায়ু সংকট তৈরি করেছি। কিন্তু সেটি সত্যি নয়। যদি কোনো একজন অপরাধী হয়, তার জন্য সবাইকে দায়ী করা উচিত নয়।
যারা অপরাধী, তাদেরকেই দায়ী করতে হবে। আর জলবায়ু সংকটের পেছনে দায়ী হলো কিছু মানুষ, কিছু প্রতিষ্ঠান, এবং কিছু নীতি-নির্ধারক, যারা খুব ভালো করেই জানেন অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে তারা পৃথিবীর কী ভীষণ ক্ষতি করে চলেছেন। এবং আমার বিশ্বাস, সেইসব মানুষদের মধ্যে অনেকেই আজ এখানে উপস্থিত আছেন।’
কৃষকদের সমর্থন
ভারতের আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থন করে টুইট করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি এখনো কৃষকদের পাশে রয়েছি। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সমর্থন জানাই…’। করোনা বিপর্যয়ের দুঃসময়ে অক্সিজেনসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী দিয়ে ভারতের পাশে যেন সবাই দাঁড়ায় সেজন্য সারা বিশ্বকে মানবিক আবেদনও জানিয়েছেন তিনি । এই পরিস্থিতি ‘হৃদয়বিদারক’ এবং গোটা বিশ্বের উচিত এ সময়ে ভারতকে সাহায্য করা উচিত বলে মত তার।
পরিবেশবাদী কিশোরী গ্রেটা
পরিবেশবাদী কিশোরী গ্রেটার সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হন লন্ডন জাদুঘরের বৈজ্ঞানিক সহযোগী ডঃ মিশেল ডার্বি। তিনি ষাটের দশকে নাইরোবিতে আবিষ্কৃত ছোট্ট- পাখনাবিহীন এবং অন্ধ একটি পোকাকে গ্রেটা থুনবার্গ বলে নিজে ডাকলেন এবং পৃথিবীবাসীকে ডাকার আহবান জানালেন। তার মতে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এসব বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কীট পতঙ্গগুলো হারিয়ে গেলে চলে না। এদের সুরক্ষার জন্য যিনি এত ভাবছেন এবং কাজ করে যাচ্ছেন, তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবেই এই নামকরণ করা।
নো ওয়ান ইজ টু স্মল টু মেইক এ ডিফরেন্স
গ্রেটার লেখা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী বই ‘নো ওয়ান ইজ টু স্মল টু মেইক এ ডিফরেন্স’ বা বদলে দেয়ার জন্য কেউই ছোট নয়। পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে জলবায়ু রক্ষায় বিশ্ব কাঁপানো আন্দোলনের এই কিশোরী নেত্রীর লেখা বইটি অ্যামাজন কর্তৃক আমেরিকায় প্রকাশের পরপরই পৃথিবীব্যাপী ব্যাপকভাবে বিক্রি হতে থাকে। বইটি থেকে যত টাকা আয় হয়েছে, তার সবই সে দান করেছে পরিবেশ রক্ষার কাজে।
বণ্টনে ন্যায্যতা
বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা বণ্টনে ন্যায্যতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে গ্রেটা বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, উন্নত দেশগুলোতে প্রতি চারজনে একজন টিকা নিয়েছেন, অন্যদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রতি ৫০০ জনে টিকা নিয়েছেন একজন। এই অসাম্য দূর হওয়া উচিত। আয় কিংবা অর্থবিত্তগত দিক থেকে নয়, টিকা বণ্টনের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত সেইসব মানুষদের, যারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন।’
পরিবর্তন আসবেই
যে ব্যাপারটি গ্রেটাকে ভাবিয়েছে তা হলো বুড়িয়ে যাওয়া নেতারা তরুণদের পরিবর্তনের কথা সহ্যই করতে পারছেন না। নিজের প্রকৃত লক্ষ্য থেকে এক চুলও সরে যাননি গ্রেটা। নিজের কাজের প্রতি এমন অসাধারণ দায়বদ্ধতা যদি ধরে রাখতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে কেবল নোবেল পুরস্কারই নয়, আরো অনেক কিছুই অপেক্ষা করে থাকবে তার জন্য। বিশ্বকে অনাগত বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষায় গ্রেটার মতো কিশোর-কিশোরীকে যে এখন বড্ড প্রয়োজন! গ্রেটা বলেন, পৃথিবী জেগে উঠেছে এবং পরিবর্তন আসবেই, আপনার ভালো লাগুক আর নাই লাগুক।