আনিসুর রহমান এরশাদ
বিপুল প্রাকৃতিক গ্যাস ও জ্বালানি তেলের মজুদের জন্য বিখ্যাত তুর্কমেনিস্তান। মধ্য এশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ। সার্বভৌম, প্রজাতান্ত্রিক ও স্থলবেষ্টিত দেশটির অধিকাংশ এলাকা সমতল বা ঢেউখেলানো বালুকাময় মরুভূমি, যার মধ্যে স্থলে স্থলে বালিয়াড়ি দেখতে পাওয়া যায়।
এর উত্তরে কাজাকিস্তান ও উজবেকিস্তান, পূর্বে উজবেকিস্তান ও আফগানিস্তান, দক্ষিণে আফগানিস্তান ও ইরান এবং পশ্চিমে কাস্পিয়ান সাগর। দেশটি রিকনস্ট্রাকশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইউরোপিয়ান ব্যাংক, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক ও জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য। প্রাকৃতিক গ্যাস, মার্বেল পাথর, ধাতব খনিজসহ নানা প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ তুর্কমেনিস্তান।
একনজরে
রাজধানী ও বৃহত্তম শহর: আশগাবাত
আয়তন: ৪ লাখ ৯১ হাজার ২১০ বর্গ কিলোমিটার (বিশ্বের ৫২তম বৃহত্তম দেশ)
জনসংখ্যা: ৬০ লাখ ৩১ হাজার ১৮৭ জন
সরকারি ভাষা: তুর্কমেন
স্বীকৃত আঞ্চলিক ভাষা: রুশ, উজবেক, দারি ভাষা
জাতীয়তা: তুর্কমেন
সরকার: একদলীয় রাষ্ট্র
রাষ্ট্রপতি: গুর্বাঙ্গুলি বের্দিমুহাম্মেদোভ
মুদ্রা: তুর্কমেনিস্তান মানাত
জনসংখ্যা
মধ্য এশিয়ার প্রজাতন্ত্রগুলোর মধ্যে তুর্কমেনিস্তানের জনসংখ্যা সবচেয়ে কম। জাতিগত গ্রুপের মধ্যে রয়েছে তুর্কমেন ৮৫ শতাংশ, উজবেক ৫ শতাংশ, রুশ ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য ৬ শতাংশ। প্রধান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে রয়েছে মুসলিম ৯৩.১ শতাংশ, খ্রিষ্টান ৬ শতাংশ এবং অন্যান্য ১ শতাংশ। ৪৮.৪% মানুষ গ্রামে এবং ৫১.৬% মানুষ শহরে বাস করে।
ভাষা
তুর্কমেন ভাষা এবং রুশ ভাষা তুর্কমেনিস্তানের সরকারি ভাষা। তুর্কমেন ভাষাতে এখানকার জনগণের প্রায় ৮০% এবং রুশ ভাষাতে প্রায় ৮% কথা বলেন। এখানে প্রচলিত অন্যান্য ভাষার মধ্যে আছে বেলুচি ভাষা ও উজবেক ভাষা।
ভৌগলিক অবস্থান
তুর্কমেনিস্তানের ভৌগলিক অবস্থান খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি শুষ্ক মহাদেশীয় জলবায়ু সহ একটি নাতিশীতোষ্ণ মরুভূমি অঞ্চল। তুর্কমেনিস্তানের অধিকাংশ এলাকা সমতল বা ঢেউখেলানো বালুময় মরুভূমি, যার মধ্যে স্থলে স্থলে বালিয়াড়ি দেখতে পাওয়া যায়। দক্ষিণে ইরানের সাথে সীমান্তে রয়েছে পর্বতমালা। কারাকুম মরুভূমির কাছে অবনমিত ভূমি দেখতে পাওয়া যায়। এটি স্পেনের চেয়ে কিছুটা ছোট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের চেয়ে কিছুটা বড়।
প্রশাসনিক অঞ্চল
তুর্কমেনিস্তানের প্রশাসনিক অঞ্চল পাঁচটি প্রদেশ (উইলেইয়াতলার) জেলায় বিভক্ত (ইট্রাপলার, একবচনে ইট্র্যাপ)। আহাল প্রদেশ, বলকান প্রদেশ, দাসোগুজ প্রদেশ, লেবাপ প্রদেশ ও মেরি প্রদেশ। রাজধানী নগরী আশগাবাত জেলায় বিভক্ত।
ঐতিহ্য
ঐতিহ্যগত দিক থেকে তুর্কেমেনিস্তানের প্রসিদ্ধি দুই কারণে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ঘোড়া পালন আর দৃষ্টিনন্দন কার্পেট তৈরি। আখাল-টেক নামের উন্নত প্রজাতির ঘোড়া পৃথিবীতে বিরল। তুর্কেমেনিস্তানে এই প্রজাতির ঘোড়া পরিপালন করে গড়ে তোলা হয়। তারপর সেগুলো অশ্ববিলাসী মানুষের কাছে বিক্রি করা হয় চড়া দামে।
সুখ্যাতি
তুর্কমেনিস্তানের হস্তনির্মিত দৃষ্টিনন্দন কার্পেটের খ্যাতি দুনিয়াজোড়া। সে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে বছর ধরে চলে ফুলনকশার বাহারি কার্পেট বুননের কর্মযজ্ঞ। লতা আর ফুলে ছাওয়া নানা রংয়ের এসব কার্পেট বিক্রি হয় ইউরোপের বনেদি সব দোকানে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তুর্কমেনরা ধরে রেখেছে তাদের এ ঐতিহ্য।
ইতিহাস
তুর্কমেনিস্তানের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তবে আধুনিক ইতিহাস হচ্ছে- ১৯২৫ সালে তুর্কমেনিস্তান তুর্কমেন সোভিয়েত সোস্যালিস্ট রিপাবলিক (তুর্কমেন এসএসআর) নামে সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি সংবিধিবদ্ধ প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেলে তুর্কমেনিস্তান স্বাধীন হয়ে যায়। স্বাধীনতা ঘোষণা দেয় ১৯৯১ সালের ২৭ অক্টোবর এবং স্বীকৃতি পায় ১৯৯১ সালের ৮ ডিসেম্বর। ১৯৯২ সালে নতুন সংবিধান কার্যকর করে।
অর্থনীতি
তুর্কমেনিস্তানের অর্থনীতি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে। প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের দিক দিয়ে বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে। ১৯৯১ সাল থেকে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানির সেবা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। তবে অতি সম্প্রতি এই ভর্তুকি বাতিল করা হয়। মরুভূমির দেশ হওয়ায় মরূদ্যানগুলোতে সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ হয়।
তুলা ও গম প্রধান ফসল। তুলা রফতানি করা হয় এবং দেশের মানুষ প্রধান খাদ্য হিসেবে গম খেয়ে থাকে। তবে অনেক গবাদি পশুও পালন করা হয়। গ্যাস, অপরিশোধিত তেল, পেট্রোকেমিকেল, বস্তু ও তুলা রফতানি করে এবং যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল ও খাদ্যদ্রব্য আমদানি করে। বিশ্বের দশম বৃহত্তম তুলা উৎপাদনকারী।
সরকার ব্যবস্থা
তুর্কমেনিস্তানের সরকার ব্যবস্থা রাষ্ট্রপতিশাসিত প্রজাতন্ত্র কাঠামোয় পরিচালিত। রাষ্ট্রপতি একাধারে রাষ্ট্রের প্রধান ও সরকার প্রধান। একদলীয় শাসনব্যবস্থা বিদ্যমান। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদের আকারে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটে এবং একাধিক রাজনৈতিক দল গঠনেরও অনুমতি দেয়।
সরকার অনুমোদিত না হলে রাজনৈতিক সমাবেশ অবৈধ। ২০১৩ সালে, তুর্কমেনিস্তানে প্রথম বহু-দলীয় সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তুর্কমেনিস্তান ১৯৯১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত একদলীয় রাষ্ট্র ছিল; তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনকে কেবলমাত্র উইন্ডো ড্রেসিং হিসাবে পরিলক্ষিত হয়েছে।
পররাষ্ট্রনীতি
দেশের সংবিধানে নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তুর্কমেনিস্তানের সাথে ১৩৯টি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হল আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, ইরান এবং রাশিয়া। তুর্কমেনিস্তানের ‘স্থায়ী নিরপেক্ষতার’ ঘোষণাকে ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
স্থাপত্য
আধুনিক তুর্কমেনী স্থাপত্যের কাজটিতে আধুনিক নন্দনতত্ত্বের বিভিন্ন প্রয়োগ, স্থপতির নিজস্ব শৈল্পিক শৈলীর সন্ধান এবং বিদ্যমান ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক পরিবেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অধিকাংশ ভবন, বিশেষত আশগাবাদের সজ্জিত মুখোমুখি সাদা মার্বেল।
তুর্কমেনিস্তান টাওয়ার, বাগত কসগি, আলেম কালচারাল অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট সেন্টার, আশগাবাদ ফ্ল্যাগপোলের মতো বড় বড় প্রকল্পগুলো দেশে নতুন দিগন্তের উন্মোচন এবং এর সমসাময়িক পরিচয় প্রচার করেছে।
খেলা
তুর্কমেনিস্তানের সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলা হলো ফুটবল। আরো একটি জনপ্রিয় খেলা হল তীরন্দাজ, তুর্কমেনিস্তানে তীরন্দাজের জন্য লীগ এবং স্থানীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বিয়ে
তুর্কমেন নারীদের স্নিগ্ধ সৌন্দর্য। একজন তুর্কমেন নারীকে বিয়ে করার সরকারী অনুমতি পেতে একজন বিদেশীকে ৫০,০০০ ডলার ফি দিতে হয়।
কেন পর্যটকদের গন্তব্য তুর্কমেনিস্তান?
দ্য সিটি অব মার্বেল
পুরো আশগাবাত নগরী গড়া হয়েছে সাদা মার্বেলে। আশগাবাতকে বলা হয় ‘সাদা শহর’ হোয়াইট সিটি বা সাদা মার্বেলের শহর ‘দ্য সিটি অব মার্বেল’। সরকারি-বেসরকারি সকল ভবন-বাড়ি বা দালান-কোঠা নির্মিত হয় মার্বেল পাথর দিয়ে। এটা সেখানকার রাষ্ট্রীয় আইন। এমনকি রাজধানীতে নির্মিত সকল ভাস্কর্য, রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট বা রেলিং, ফুটপাত পর্যন্ত সাদা মার্বেলে তৈরি। যে শহর একদিন ধুলোয় মিশে গিয়েছিল, সে শহরকে আমি মার্বেল পাথরের সাদা নগরী করে গড়ে তোলা হয়েছে।
পরিচ্ছন্ন শহর
মার্বেল শহরকে পরিচ্ছন্ন আর তকতকে রাখতে রীতিমতো আইন আছে সেখানে। পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা দণ্ডনীয় অপরাধ। নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া অন্য কোথাও ময়লা ফেললে গুনতে হয় মোটা অংকের জরিমানা। প্রতি বছর সারা পৃথিবী থেকে লাখ লাখ দর্শনার্থী আশগাবাতে আসে এই ধবধবে সাদা শহর দেখতে। আশগাবাত তাদের নিরাশ করে না। শহরের সাদা সাদা দালান আর রাস্তাঘাট দেখে চমৎকৃত হন তারা।
শৈল্পিক স্থাপনা
বিভিন্ন শৈল্পিক স্থাপনা বা ভবনের জন্য খ্যাতি আছে আশগাবাতের। শহরে একটি পাবলিশিং হাউজ আছে যার আকৃতি একটি খোলা বই এর মতো। এছাড়া শহরে বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং তার পূর্বসূরীর বিশাল আকৃতির স্বর্ণ মূর্তি রয়েছে। ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় সেরা দশে উঠে আসা নামগুলোর একটি আশগাবাত।
বাজপাখির আকৃতির বিমানবন্দর
তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী অ্যাসগাবাটে নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি দেখতে ঠিক ডানা মেলা বাজপাখির মত। দেশটির জাতীয় বিমান সংস্থার প্রতীকের সঙ্গে মিল রেখে বাজপাখির আকৃতির বিমানবন্দরের ডিজাইন করা হয়েছে। নতুন পাঁচতলা এই এয়ারপোর্ট ভবনটি তৈরিতে কর্তৃপক্ষের খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই শো কোটি ডলার। প্রতি ঘণ্টায় ১৬০০’র বেশি যাত্রীর আসা-যাওয়া প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষমতা রয়েছে এই এয়ারপোর্টের।
সাইকেল চালানো
তুর্কমেনিস্তানে সাইকেল চালানো খুবই জনপ্রিয়। সুস্থ জীবনযাপন করা ও সাইকেলের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রধান প্রধান শহরগুলোতে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখাও হয়। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজধানীবাসী ও অন্যান্য শহরের লোকেরা গাড়ি চালনা থেকে বিরত থাকে গাড়িবিহীন দিন উদযাপনও করা হয়। মাঝে মাঝে গণ সাইকেল র্যালিরও আয়োজন করা হয়।
জাহান্নামের দরজা
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই তুর্কমেনিস্তানে আসেন জাহান্নামের দরজা দেখতে। এটা আসলে পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসের খনি। ১৯৭১ সাল থেকে এই খনির মুখটি জ্বলছেই। এটি অপূর্ব দৃশ্যের জন্ম দেয় রাতের বেলা। ভয়ঙ্কর সুন্দর লাগে রাতে। সৌন্দর্যপিপাসুরা এ কারণেই ছুটে যান সেখানে। ইতোমধ্যে এই স্থানটি তুর্কমেনিস্তানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন শহরে পরিণত হয়েছে।
খনিটা দারওয়েজে গ্রামের কাছেই অবস্থিত। এটা দারভাজা নামেও পরিচিত। কারাকুম মরুভূমির মাঝে অবস্থিত। তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাতের ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে। এই বিশেষ নামটি দিয়েছেন স্থানীয়রা। এই জ্বলন্ত আগুন, ফুটন্ত কাদা আর গাঢ় কমলা রংয়ের অগ্নিকুণ্ডের কারণেই এই নাম পেয়েছে খনির মুখটি। সেখানকার উত্তাপ এত বেশি যে, কেউ চাইলেও ৫ মিনিটের বেশি সেখানে থাকতে পারবেন না।
খাদ্য ও পানীয়
খাদ্য ও পানীয়ও বৈচিত্র্যময়। প্লভ (পিলাফ) হচ্ছে প্রধান খাবার, দৈনন্দিন খাদ্য, যা উৎসব উদযাপনে পরিবেশিত হয়। এটি একটি ওলন্দাজ চুলার অনুরূপ একটি বড় পেটা লোহার কড়াইয়ে মাটন, গাজর এবং ভাজা চাল দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। ম্যান্টি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ছাগলের মাংস, পেঁয়াজ বা কুমড়া দিয়ে। শুরপা হচ্ছে মাংস এবং শাকসব্জি দিয়ে তৈরী স্যুপ।
রেস্টুরেন্ট এবং বাজারে বিভিন্ন ধরণের পুর ভরা খাবার পাওয়া যায়, যেমন সোমসা, গুটাপ এবং ইশলীক্লি। এগুলো প্রায়ই রাস্তাঘাট ও স্ট্যাণ্ডে বিক্রি হয়। তুর্কমেনি রান্না সাধারণত মশলা বা মশলাজাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করে না এবং সুগন্ধি জন্য তুলাবীজের তেল অধিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।
শাশলীক, স্ক্রু আকারের মাটন, শুয়োরের মাংস, মুরগি বা কখনও কখনও মাছ কাঠকয়লার আগুনে গ্রিল করা হয় এবং কাঁচা কাটা পেঁয়াজ এবং একটি বিশেষ সিরকা ভিত্তিক সস দিয়ে সাজিয়ে, রেস্টুরেন্টে পরিবেশিত হয় এবং প্রায়ই পথপার্শ্বে বিক্রি হয়।
তুর্কমেনিস্তার রেস্টুরেন্ট প্রধানত রাশিয়ান খাবার যেমন পেলম্যানি, গ্রচস্কা, গলুবসি এবং মেয়েরাইজ-ভিত্তিক স্যালাদ পরিবেশন করে। কিছু অঞ্চলে ল্যাগম্যান নামক উইগুর নুডলস পাওয়া যায়।
সবুজ চা এখানকারও প্রাথমিক পানীয়, যা সব সময় পান করা হয়। দাশোগুজ অঞ্চলে কাজাখ শৈলীতে দুধ চা তৈরী করা হয়। সকালের নাস্তায় কেফিরের মত ঘন দইয়ের পানীয় গেটিক পরিবেশন করা হয়। কখনো কখনো এটা বোরেক বা ম্যান্টিতে প্রথাগত টক দইয়ের বদলে ব্যবহার করা হয়।
তবে চাল নামক উটের দুধ থেকে তৈরী পানীয় সুপরিচিত। এটা সাদা পানীয়, টক স্বাদের এবং মধ্য এশিয়ায় জনপ্রিয় বিশেষ করে তুর্কমেনিস্তানে। নির্দিষ্ট প্রস্তুত প্রণালীর কারণে এটা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রস্তুত হয়। বিদেশীদের খাওয়ানোর জন্য চাল রপ্তানী খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত করতে খুবই আন্তরিক দেশটির সরকার। সিগারেটসহ সব তামাকজাত পণ্য নিষিদ্ধ তুর্কমেনিস্তানে। যেসব দোকানে সিগারেট বিক্রি হয়, সেগুলোকে ছয় হাজার ৯০০ মানাত (স্থানীয় মুদ্রা) জরিমানা করা হয়। মাদক প্রতিরোধ ও সিগারেট বিক্রি বন্ধ করতে খুবই তৎপর সরকার। কড়াকড়ির কারণে মাঝেমাঝে দোকানগুলোতে সিগারেট বিক্রি প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে যায়।